রোহিঙ্গা সংকট সমাধানে সর্বদলীয় সংসদীয় কমিটি গঠনের প্রস্তাব

কক্সবাজারের উখিয়ার মধুরছড়া আশ্রয়শিবিরে উঁচু পাহাড় কেটে তৈরি ঝুঁকিপূর্ণ রোহিঙ্গা বসতি। গত রোববার বিকেলে তোলা ছবি।  প্রথম আলো
কক্সবাজারের উখিয়ার মধুরছড়া আশ্রয়শিবিরে উঁচু পাহাড় কেটে তৈরি ঝুঁকিপূর্ণ রোহিঙ্গা বসতি। গত রোববার বিকেলে তোলা ছবি। প্রথম আলো

রোহিঙ্গা সংকটের সমাধানের উপায় খুঁজতে সর্বদলীয় সংসদীয় দল গঠনের প্রস্তাব করেছেন চার জ্যেষ্ঠ সাংসদ। আজ বুধবার সংসদে পয়েন্ট অব অর্ডারে দাঁড়িয়ে অনির্ধারিত আলোচনায় এ প্রস্তাব করেন সরকারি দলের সাংসদ মোহাম্মদ নাসিম। তাঁর বক্তব্যে সমর্থন জানান ওয়ার্কার্স পার্টির রাশেদ খান মেনন, জাসদের হাসানুল হক ইনু ও তরীকত ফেডারেশনের নজিবুল বশর।

সাবেক মন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম বলেন, রোহিঙ্গা সমস্যার সমাধান হয়নি। এ বিষয়ে রাষ্ট্রপতির ধন্যবাদ প্রস্তাবের ওপর আলোচনা শেষে একটি দিন ধার্য করে জাতীয় সংসদে আলোচনা করা যেতে পারে। সেখানে রোহিঙ্গা সমস্যার সমাধানে করণীয় কী, তা নিয়ে সংসদ সদস্যরা আলোচনা করবেন। সব দল আলোচনা করে মতামত দেবে। প্রয়োজনে একটি সংসদীয় দল গঠন করে ভারত, চীন ও মিয়ানমার গিয়ে আলোচনা করা যেতে পারে।

হাসানুল হক ইনু বলেন, রোহিঙ্গা সংকটকে বর্তমান সংসদ কীভাবে দেখছে, তা দেশবাসী ও বিশ্ববাসীর জানা দরকার। এ ক্ষেত্রে একটি প্রতিনিধিদল জাতিসংঘে গিয়ে প্রতিবেদন উপস্থাপন করতে পারে। বাংলাদেশ, মিয়ানমার ও জাতিসংঘ—এই ত্রিপক্ষীয় উদ্যোগ ছাড়া রোহিঙ্গা সমস্যার সমাধান হবে না।

রাশেদ খান মেনন বলেন, ‘রোহিঙ্গা সংকটের সমাধানে যে দ্বিপক্ষীয় চুক্তি সম্পাদিত হয়েছিল, সেটা কতটুকু যথাযথ ছিল, তা খতিয়ে দেখা দরকার। এই চুক্তিতে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনের ক্ষেত্রে “স্বেচ্ছা” শব্দটি যুক্ত করা হয়েছে, তা বাংলাদেশের পক্ষে ছিল বলে মনে হয় না। আন্তর্জাতিক বন্ধুরা মনে করেছিলেন পরামর্শ দিয়ে এই সমস্যার সমাধান করবেন। আমি মনে করি তাঁরা তাঁদের রাজনীতি করেছেন, আমাদের রাজনীতি করেননি।’

মেনন আরও বলেন, ‘রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশের ভাবমূর্তি অনেক উজ্জ্বল করেছেন, এটা সত্য। কিন্তু এই সমস্যা চলতে পারে না। সরকারের বাইরে যাঁরা আছেন, তাঁরাও এ ধরনের সংকট সমাধানে সাহায্য করতে পারেন। একই সঙ্গে অনানুষ্ঠানিক কূটনৈতিক তৎপরতাও (ট্র্যাক টু ডিপ্লোমেসি) চালানো যেতে পারে।

রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধানে সর্বদলীয় কমিটি করার প্রস্তাব করেন তরীকত ফেডারেশনের চেয়ারম্যান নজিবুল বশর।

মিয়ানমারের সেনাবাহিনী ও উগ্রপন্থী রাখাইনদের নিষ্ঠুর নির্যাতনের মুখে রাখাইন থেকে পালিয়ে বিভিন্ন সময়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গারা। সর্বশেষ ২০১৭ সালের আগস্টের পর ওই রাজ্য থেকে পালিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে ৭ লাখের বেশি রোহিঙ্গা নারী-পুরুষ। আগের পালিয়ে আসাসহ বাংলাদেশে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গার সংখ্যা এখন ১১ লাখের বেশি।