পুত্রশোকে জর্জর দিয়াজের মায়ের বিলাপ চলছেই

দিয়াজ ইরফান চৌধুরীর মা জাহেদা আমিন চৌধুরী। ফাইল ছবি
দিয়াজ ইরফান চৌধুরীর মা জাহেদা আমিন চৌধুরী। ফাইল ছবি

ছেলে হত্যার বিচার না পেয়ে মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছেন ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সহসম্পাদক দিয়াজ ইরফান চৌধুরীর মা জাহেদা আমিন চৌধুরী। দুদিন ধরে খাওয়াদাওয়া বন্ধ রেখেছেন। এমনকি পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে কথা বলছেন খুব কম। ছেলের শোকে কান্না আর বিলাপ করেই চলেছেন।

গত বুধবার বিশ্ববিদ্যালয়ের তৃতীয় শ্রেণি কর্মচারী সমিতির বার্ষিক ক্রীড়া অনুষ্ঠানে কেন্দ্রীয় খেলার মাঠে লুটিয়ে পড়ে প্রতিবাদ জানান জাহেদা আমিন চৌধুরী। ক্রীড়া প্রতিযোগিতা উপলক্ষে বের করা স্যুভেনিরে দিয়াজ হত্যা মামলার প্রধান আসামি মোহাম্মদ আলমগীর টিপুর ছবি–সংবলিত শুভেচ্ছা বাণী দেখে মেনে নিতে পারেননি তিনি। জাহেদা আমিনও বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মচারী। পরে মাঠে লুটিয়ে পড়ে স্রষ্টার কাছে বিচার চান তিনি। অসুস্থ হয়ে পড়লে তাঁকে বিশ্ববিদ্যালয় চিকিৎসা কেন্দ্রে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়।

দিয়াজ ইরফান চৌধুরী
দিয়াজ ইরফান চৌধুরী

জাহেদা আমিন চৌধুরীর বড় মেয়ে জুবাঈদা ছরওয়ার চৌধুরী প্রথম আলোকে বলেন, অসুস্থ অবস্থায় মাকে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস থেকে অ্যাম্বুলেন্সে করে শহরের বাসায় আনা হয়। এরপর থেকে তিনি ছেলের কথা বলে বলে বিলাপ করে যাচ্ছেন। বিচার চাইছেন। খাওয়াদাওয়াও বন্ধ রেখেছেন। চিকিৎসকেরা তাঁকে ঘুমের ওষুধ দিয়েছেন। কিন্তু ঘুম ভাঙলেই আবারও বিলাপ করে যাচ্ছেন।

ছেলে হত্যার বিচারের দাবিতে একাধিকবার কর্মসূচি পালন করেছেন জাহেদা আমিন। গত বছরের ৩০ অক্টোবর সন্তান হত্যার বিচার চেয়ে ক্যাম্পাসে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন। এর আগে ২০১৭ সালের ২৮ নভেম্বর থেকে ১ ডিসেম্বর পর্যন্ত অনশন পালন করে অসুস্থ হয়ে পড়েন তিনি।

২০১৬ সালের ২০ নভেম্বর বিশ্ববিদ্যালয়ের ২ নম্বর গেট এলাকার ভাড়া বাসা থেকে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সহসম্পাদক দিয়াজ ইরফান চৌধুরীর ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। দিয়াজের মরদেহের প্রথম ময়নাতদন্ত হয় ২০১৬ সালের ২১ নভেম্বর। দুই দিন পর পুলিশ জানায়, তাঁকে হত্যা করার আলামত ময়নাতদন্তের প্রতিবেদনে মেলেনি। এরপর ছেলেকে হত্যা করা হয়েছে এমন অভিযোগে ওই বছরের ২৪ নভেম্বর জাহেদা আমিন বাদী হয়ে ছাত্রলীগের বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সাবেক সভাপতি আলমগীর টিপু, সাবেক সহকারী প্রক্টর আনোয়ার হোসেন চৌধুরীসহ ১০ জনকে আসামি করে আদালতে মামলা করেন। পরে একই বছরের ৬ ডিসেম্বর লাশ কবর থেকে তুলে পুনরায় ময়নাতদন্তের নির্দেশ দেন আদালত। ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, দিয়াজকে শ্বাস রোধ করে হত্যার আলামত পাওয়া গেছে।

আরও পড়ুন: