ইউএনওকে ওএসডির ঘটনার তদন্ত চাইলেন দুই সাংসদ

শামীম ওসমান  ও   মেহের আফরোজ
শামীম ওসমান ও মেহের আফরোজ

নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) হোসনে আরা বেগমকে বিশেষ ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওএসডি) করার ঘটনা তদন্তের দাবি জানিয়েছেন সরকারি দলের সাংসদ মেহের আফরোজ ও শামীম ওসমান।

আজ সোমবার জাতীয় সংসদে অনির্ধারিত আলোচনায় অংশ নিয়ে সরকারি দলের সাংসদ এবং সাবেক মহিলা ও শিশুবিষয়ক প্রতিমন্ত্রী মেহের আফরোজ এ বিষয়ে আলোচনার সূচনা করেন। পরে নারায়ণগঞ্জ সদর আসনের সাংসদ শামীম ওসমান এই দাবির সঙ্গে একমত পোষণ করেন। এ বিষয়ে জনপ্রশাসনমন্ত্রী পদক্ষেপ নেবেন বলে সংসদে সভাপতির দায়িত্বে থাকা ডেপুটি স্পিকার ফজলে রাব্বী মিয়া আশা প্রকাশ করেন।

আজ বৈঠকে ৭১ বিধির নোটিশ নিষ্পত্তির পর পয়েন্ট অব অর্ডারে ফ্লোর নিয়ে অনির্ধারিত আলোচনায় মেহের আফরোজ ওএসডির প্রেক্ষাপটে নারায়ণগঞ্জ সদরের ইউএনওর ফেসবুক স্ট্যাটাসের প্রসঙ্গটি তোলেন। তিনি বলেন, একজন নারী সন্তানসম্ভবা হলে বিভিন্ন সমস্যার মধ্য দিয়ে যেতে হয়। একজন ইউএনও অত্যন্ত বেদনাবিধুর স্ট্যাটাস দিয়েছেন। তিনি ৯ বছর পর মা হতে যাচ্ছিলেন। নির্বাচনের সময় তিনি সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা হিসেবে যথাযথভাবে দায়িত্ব পালন করেছেন। তাঁর দায়িত্বে কোনো গাফিলতি ছিল না। আগামী এপ্রিলে তাঁর সন্তান জন্মগ্রহণের কথা ছিল। তিনি যখন ডাক্তারের কাছে গেলেন তখন জানতে পারলেন, ওএসডি হয়েছেন। এই খবর শুনে মানসিক চাপে আকস্মিকভাবে অসুস্থ হয়ে পড়েন এবং তিনি অপরিণত সন্তানের জন্ম দেন। সময়ের বেশ আগে জন্ম নেওয়া সন্তানটি বর্তমানে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।

সাবেক প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘একজন ইউএনওর দায়িত্ব অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তিনি যদি সেই দায়িত্ব যথাযথভাবে পালন করে থাকেন তাহলে সন্তানসম্ভবা অবস্থায় কেন তাঁকে ওএসডি করা হলো। এটি আমাদের কাছে স্পষ্ট নয়। একজন অন্তঃসত্ত্বা মায়ের সঙ্গে কেমন আচরণ করা উচিত, সমাজ এখনো সেই বিষয় উপলব্ধি করতে পারে না। এই সময় এমন আচরণ উচিত নয়, যা সন্তান বা মায়ের ক্ষতির কারণ হতে পারে। সন্তান সুস্থভাবে জন্ম না নিলে তা কেবল মা বা তাঁর পরিবার নয়, দেশের জন্যও বোঝা হয়ে যেতে পারে।’ তিনি এই ঘটনার জন্য জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে বিভাগীয় তদন্ত করার দাবি জানান।

পরে শামীম ওসমান বলেন, ‘আমি ওমরা হজে থাকার সময় এই ঘটনার কথা জানতে পারি। আমার পরম আত্মীয়ের সঙ্গে এই ঘটনা ঘটলে যতটা দুঃখ পেতাম, এই ঘটনায় সেই রকম দুঃখ পেয়েছি। ঘটনায় আমি লজ্জিত হয়েছি। তিনি আমার নির্বাচনী এলাকার সদর উপজেলার ইউএনও। তিনি সৎ, কর্মঠ ও অত্যন্ত ভালো সরকারি কর্মকর্তা।’ কার নির্দেশে ওই কর্মকর্তাকে ওএসডি করা হয়েছে—প্রশ্ন রেখে শামীম ওসমান বলেন, ‘এই ঘটনার প্রেক্ষাপটে খারাপ কিছু হলে আমি নিজেও নিজেকে ক্ষমা করতে পারব না।’