বেতনের টাকা তুলে না দেওয়ায় স্ত্রীকে পুড়িয়ে হত্যা!

বেতনের টাকা হাতে তুলে না দেওয়ায় ঘুমন্ত স্ত্রীকে আগুনে পুড়িয়ে হত্যা করার অভিযোগ উঠেছে এক স্বামীর বিরুদ্ধে। গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলার মুলাইদ মাজম আলী মোড় এলাকায় গতকাল সোমবার রাতে এ ঘটনা ঘটে। আজ মঙ্গলবার দুপুরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ওই গৃহবধূর মৃত্যু হয়।

ওই গৃহবধূর নাম শিউলি আক্তার (৩৮)। তাঁর বাড়ি ময়মনসিংহের ভালুকা উপজেলার ডাকাতিয়া গ্রামে। তিনি শ্রীপুরে ডিবিএল গ্রুপে অপারেটর পদে চাকরি করতেন। তাঁর স্বামী শহীদ হাওলাদারের (৪৫) বাড়ি বরিশালের বানারীপাড়ায়। তিনি পেশায় গাড়িচালক। শিউলি মাজম আলী মোড় এলাকায় ভাড়া থাকতেন।

শিউলির ভাইয়ের স্ত্রী সোহেনা আক্তার প্রথম আলোকে বলেন, শহীদের সঙ্গে শিউলির বিয়ে হয় ১৪ বছর আগে। শহীদের আরেকজন স্ত্রী আছে। ওই স্ত্রীকে নিয়ে তিনি অন্য জায়গায় থাকেন। মাঝে মাঝে শিউলি বেতন পেলে স্বামী গিয়ে বেতনের টাকা নিয়ে যান। কয়েক দিন আগে শহীদ গিয়ে শিউলির কাছে টাকা চান। বেতন পাননি বলে টাকা দিতে না পারায় সেদিন শিউলিকে মারধর করেন স্বামী। সর্বশেষ গতকাল তিনি গিয়ে শিউলিকে টাকা দিতে বলেন। শিউলি বেতনের টাকা দিতে না চাইলে তাঁদের মধ্যে ব্যাপক ঝগড়া হয়। শিউলি ঘুমিয়ে পড়লে রাত ১২টার দিকে তিনি ঘরের ভেতর দিক দিয়ে আটকে দেন। এরপর তিনি ঘুমন্ত স্ত্রীর শরীরে কেরোসিন ঢেলে আগুন লাগিয়ে দেন। তাঁর চিৎকারে আশপাশের বাড়ির লোকজন গিয়ে ঘরের দরজা ভেঙে শিউলিকে উদ্ধার করেন। আগুনে তাঁর শরীরের বেশির ভাগ অংশ পুড়ে যায়। এ সময় স্থানীয় লোকজন শহীদকে আটক করে পুলিশে খবর দেন। আহত শিউলিকে প্রথমে শ্রীপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এবং পরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে নিয়ে যাওয়া হয়। আজ দুপুরে তাঁর মৃত্যু হয়।

শ্রীপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের দায়িত্বরত চিকিৎসক তাসনিয়া মেহনাজ চৌধুরী বলেন, ওই নারীর শরীরের ৭০ ভাগ পুড়ে গেছে। তাঁর স্বামীর শরীরের ৬-৭ ভাগ পুড়েছে। তাদের দুজনকেই ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়।

শ্রীপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জাবেদুল ইসলাম শিউলির মৃত্যুর খবরের সত্যতা নিশ্চিত করেন। তিনি বলেন, শহীদকে পুলিশি হেফাজতে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। তবে এখনো কোনো মামলা হয়নি।