আদিবাসী তিন ভাষায় একুশের আমন্ত্রণ জানাল জেলা প্রশাসন

চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা প্রশাসনের তৈরি একুশের অনুষ্ঠানের আমন্ত্রণপত্র। পাঁচ ভাষায় লেখা হয়েছে এই আমন্ত্রণপত্র। ছবি: প্রথম আলো
চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা প্রশাসনের তৈরি একুশের অনুষ্ঠানের আমন্ত্রণপত্র। পাঁচ ভাষায় লেখা হয়েছে এই আমন্ত্রণপত্র। ছবি: প্রথম আলো

বাংলা, ইংরেজি বাদে আরও তিন আদিবাসী ভাষাতেও এবার আমন্ত্রণপত্র লিখেছে চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা প্রশাসন। ভাষাগুলো হলো কোল, সাঁওতাল ও সাদরি। বাংলা ও ইংরেজির পাশাপাশি আদিবাসী তিন ভাষাতে একুশের অনুষ্ঠানের আমন্ত্রণপত্র লেখায় খুশি হয়েছেন ক্ষুদ্র জাতিসত্তাভুক্ত মানুষেরা।

আমন্ত্রণপত্রে লেখা হয়েছে, ‘২১শে ফেব্রুয়ারি আমাদের চিরন্তন প্রেরণা ও মুক্তিসংগ্রামের উৎস। শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস ২০১৯ এখন অন্যের ভাষা ও সংস্কৃতিকে শ্রদ্ধা জানানোর আন্তর্জাতিক দিবস।’ এই কথাটিই লেখা হয়েছে ইংরেজি, কোল, সাঁওতাল ও সাদরি ভাষায়। চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা প্রশাসনের পক্ষে একুশে ফেব্রুয়ারি উপলক্ষে গৃহীত জেলা প্রশাসনের সব আয়োজনে জেলা প্রশাসক এ জেড এম নূরুল হক এই আমন্ত্রনপত্র বিলি করছেন।

এই আমন্ত্রণপত্রের পরিকল্পনাকারী ও অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) তাজকির-উজ-জামান প্রথম আলোকে বলেন, আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের চেতনাকে ধারণ করে এ জেলায় বসবাসকারী অন্যান্য ক্ষুদ্র জাতিসত্তার মানুষদের ভাষা ও সংস্কৃতিকে সম্মান জানানোর জন্যই এমন আমন্ত্রণপত্র করা হয়েছে। এ দিবসের অনুষ্ঠানে ক্ষুদ্র জাতিসত্তার মানুষদেরও সম্পৃক্ত করা হবে।

চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর উপজেলার বরেন্দ্র অঞ্চলের ঝিলিম ইউপির কোলদের গ্রাম ফিল্টিপাড়ার বাসিন্দা ও বাবুডাইং আদিবাসী আলোর পাঠশালার সহকারী শিক্ষক নির্মল কোল টুডু প্রথম আলোকে বলেন, ‘বাংলাদেশে কোল ক্ষুদ্র জাতিসত্তার মানুষদের সংখ্যা খুবই কম, আড়াই থেকে তিন হাজারের মতো। তাঁদের ভাষা ও সংস্কৃতি দেশের বৃহত্তর জনগোষ্ঠীর কাছে অজানাই বলা যায়। এই প্রথমবারের মতো আমাদের ভাষা সরকারি সংস্থার আমন্ত্রণপত্রে স্থান পাওয়ায় সম্মানিত বোধ করছি।’

জেলা প্রশাসনের এ উদ্যোগকে সাধুবাদ জানিয়েছেন সাঁওতাল নেতা ও উত্তরবঙ্গ আদিবাসী ফোরামের সভাপতি হিংগু মুরমু, সাধারণ সম্পাদক প্রভাত টুডু, নাচোল আদিবাসী একাডেমির সভাপতি যতিন হেমব্রম, সাদরিভাষী ওরাওঁদের দিঘরী পরিষদের রাজা জহরলাল এককা, ওরাওঁ নেতা বঙ্গপাল সরদার, মুন্ডা নেতা জাতীয় আদিবাসী পরিষদ প্রমুখ।