মৃত্যুর ১০ মাস পর লাশ উত্তোলন

পিরোজপুরের ইন্দুরকানি উপজেলায় আদালতের নির্দেশে মৃত্যুর ১০ মাস পর কবর থেকে এক কলেজছাত্রের লাশ উত্তোলন করেছে পুলিশ। উপজেলার নলবুনিয়া গ্রাম থেকে গতকাল সোমবার বিকেলে তার লাশ তোলা হয়।

জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের নির্বাহী হাকিম ফখরুল ইসলামের উপস্থিতিতে লাশ তুলে তা ময়নাতদন্তের জন্য পিরোজপুর সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। নিহত কলেজছাত্রের নাম সাইফুর রহমান (১৭)। সে উপজেলার নলবুনিয়া গ্রামের জাহাঙ্গীর মোল্লার ছেলে। সাইফুর উপজেলার পাড়েরহাট রাজলক্ষ্মী স্কুল অ্যান্ড কলেজের দ্বাদশ শ্রেণিতে পড়ত।

পুলিশ, মামলা ও পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, ২০১৭ সালের ১০ আগস্ট রাতে পিরোজপুর সদর উপজেলার দক্ষিণ শংকরপাশা গ্রামের আসলাম খলিফা খুন হন। ওই মামলার আসামি ছিলেন সাইফুরের বাবা জাহাঙ্গীর মোল্লা। ঘটনার পর জাহাঙ্গীর বাড়ি থেকে পালিয়ে যান। এরপর আসলাম খলিফার লোকজন সাইফুরকে মারধর করেন। এতে সাইফুর রহমান গ্রাম ছেড়ে ঢাকার সাভারের আশুলিয়ায় চলে যায়।

২০১৮ সালের ৭ এপ্রিল সকালে আশুলিয়ার মৌজার বাসস্ট্যান্ড এলাকায় সাইফুরকে নিহত আসলামের বড় ভাই কাওসার হোসেন খলিফাসহ ১০ থেকে ১২ জন লোক মারধর করেন। এরপর সাইফুর দৌড়ে পালতে গিয়ে বাসের নিচে পড়ে নিহত হয়। পরিবারের লোকজন সাইফুরের লাশ গ্রামের বাড়িতে নিয়ে দাফন করেন। গত ৩১ মে সাইফুরের মা ফিরোজা বেগম বাদী হয়ে ঢাকা জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম আদালতে মামলা করেন। মামলায় নলবুনিয়া গ্রামের উজ্জ্বল আকনকে প্রধান আসামি করে কাওসার হোসেন খলিফাসহ ১০ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ করা হয়। আদালত মামলার আরজি এফআইআর করার জন্য সাভারের আশুলিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে নির্দেশ দেন। গত ৩ জানুয়ারি আদালত সাইফুরের লাশ কবর থেকে তুলে ময়নাতদন্তের নির্দেশ দেন।

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা আশুলিয়া থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মো. এমদাদুল হক বলেন, নির্বাহী হাকিমের উপস্থিতিতে লাশ কবর থেকে উত্তোলন করে ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠানো হয়েছে।

ফিরোজা বেগম বলেন, কাওসার হোসেন খলিফা পুলিশের সহকারী উপপরিদর্শক। তিনি নানাভাবে তাঁদের হয়রানি করছেন। গতকাল সোমবার বিকেলে লাশ উত্তোলনের সময় এক যুবক তাঁর বোনের ওপর হামলা করেন।

নির্বাহী হাকিম ফখরুল ইসলাম বলেন, ওই যুবককে আটকের পর তিনি পুলিশের কাছে মুচলেকা দিয়ে ছাড়া পান।