ছেলেকে ডাক্তার দেখিয়ে ফেরার পথে পুড়লেন তাঁরা

ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সামনে এক স্বজনের আহাজারি। ছবি: শুভ্র কান্তি দাশ
ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সামনে এক স্বজনের আহাজারি। ছবি: শুভ্র কান্তি দাশ

তিন স্বজনকে হারিয়ে ঢাকা মেডিকেল কলেজের মর্গের সামনে বসে বিলাপ করে কেঁদেই চলেছেন মধ্যবয়সী এক নারী। পাশে অন্য স্বজনেরা সান্ত্বনা দিয়েও তাঁকে থামাতে পারছিলেন না। কখনো চিৎকার করে, কখনো হাউমাউ করে কাঁদছিলেন। তখন পাশেই বসা এক স্বজনের সঙ্গে কথা বলে জানা গেল, চকবাজারের মর্মান্তিক অগ্নিকাণ্ডে ওই নারীর দুই ভাই ও তিন বছর বয়সী ভাতিজা প্রাণ হারিয়েছে।

স্বজন সোহেল পারভেজ জানালেন, মধ্যবয়সী ওই নারীর নাম জরিনা বেগম। সোহেল বলেন, জরিনা বেগমদের বাড়ি চকবাজার এলাকাতেই। তাঁর ভাই মোহাম্মদ আলী তিন বছর বয়সী ছেলে আরাফাতকে ডাক্তার দেখিয়ে ওই এলাকা দিয়ে যাচ্ছিলেন। সঙ্গে ছিলেন, আরেক ভাই অপু রায়হান। তখনই মর্মান্তিক ঘটনাটি ঘটে। ঘটনাস্থলে তিনজন মারা যান। ঘণ্টা তিনেক আগে তাদের লাশ উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজের মর্গে আনা হয়েছে। মোহাম্মদ আলীর বয়স ৩২ বছরের মতো। অপু তার চেয়ে এক বা দুই বছরের ছোট।

স্বজন সোহেল জানালেন, বিস্ফোরণের ঘটনায় তাঁরা সেখানেই মারা গেছেন। সেখান থেকে বেরোতে পারেনি। আগুনে পুড়ে গেছেন তাঁরা। মোহাম্মদ আলী চকবাজার এলাকায় কসমেটিকসের ব্যবসা করতেন।

পুরান ঢাকায় রাজ্জাক ভবনে লাগা আগুনে দুই ভাই ও তিন বছর বয়সী ভাতিজাকে হারিয়ে কাঁদছেন জরিনা বেগম। ছবি: দীপু মালাকার
পুরান ঢাকায় রাজ্জাক ভবনে লাগা আগুনে দুই ভাই ও তিন বছর বয়সী ভাতিজাকে হারিয়ে কাঁদছেন জরিনা বেগম। ছবি: দীপু মালাকার

ঢাকা মেডিকেল কলেজের মর্গের সামনে এখনো অসংখ্য স্বজনের আহাজারি চলছে। স্বজন হারিয়ে মানুষ মর্গের সামনে ভিড় করছেন।

পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) জাবেদ পাটোয়ারী বলেছেন, রাজধানীর চকবাজার এলাকায় রাজ্জাক ভবনে লাগা আগুনের ঘটনায় এখন পর্যন্ত ৭০টি লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। মৃত ব্যক্তির সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে তাঁর আশঙ্কা। আজ বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে আটটার দিকে ঘটনাস্থল থেকে সাংবাদিকদের এ কথা বলেন তিনি।

আরও পড়ুন: