অধিকাংশ উপজেলায় মুক্তিযোদ্ধা তালিকা সঠিকভাবে যাচাই-বাছাই হয়নি

মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক
মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক

মুক্তিযোদ্ধা তালিকার বিষয়ে জাতীয় সংসদের এক লিখিত প্রশ্নের জবাবে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক বলেছেন, উপজেলা ভিত্তিক যাচাই-বাছাইয়ের জন্য নীতিমালা করেছিলাম। সে অনুযায়ী যাচাই-বাছাইয়ের নির্দেশ ছিল। তবে দুঃখের সঙ্গে বলতে হচ্ছে, কিছু উপজেলায় যথাযথভাবে হলেও অধিকাংশ উপজেলায় সঠিকভাবে যাচাই-বাছাই হয়নি।

আজ রোববার সংসদে মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক এ তথ্য জানান। জাতীয় পার্টির সাংসদ মুজিবুল হক চুন্নু সম্পূরক প্রশ্নটি করেন। আ ক ম মোজাম্মেল হক আগামী ২৬ মার্চের মধ্যে মুক্তিযোদ্ধাদের পূর্ণাঙ্গ তালিকা প্রকাশের প্রতিশ্রুতি দিলেও সম্পূরক প্রশ্নের জবাব দিতে গিয়ে তিনি তাঁর অবস্থান পরিবর্তন করেন।

এর আগে সরকার দলের সাংসদ মীর মোস্তাক আহমেদের লিখিত প্রশ্নের উত্তরে মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক বলেন, মুক্তিযোদ্ধাদের তালিকা প্রণয়নের লক্ষ্যে সরকারের পক্ষ থেকে বিভিন্ন সময়ে যাচাই-বাছাই করে তালিকা প্রণয়ন করা হয়েছে। ওই সব তালিকা পর্যালোচনা করে ২৬ মার্চ ২০১৯-এর মধ্যে পূর্ণাঙ্গ তালিকা প্রকাশ করা হবে।

সাংসদ মুজিবুল হকের সম্পূরক প্রশ্নের জবাবে আ ক ম মোজাম্মেল হক বলেন, ২৬ মার্চে মধ্যে আমরা মুক্তিযোদ্ধাদের তালিকা প্রকাশ করতে পারব, এই নিশ্চয়তা দিতে পারছি না। তবে আমরা যত দ্রুত সম্ভব এই তালিকা প্রকাশের চেষ্টা করব।

মুক্তিযুদ্ধ কাউন্সিল পুনর্গঠনের উদ্যোগের কথা জানিয়ে মন্ত্রী মোজাম্মলে হক বলেন, নতুনভাবে জাতীয় মুক্তিযুদ্ধ কাউন্সিল গঠন হতে যাচ্ছে। এই গঠন প্রক্রিয়া শেষ হলে আমরা যেসব উপজেলায় নিয়ম মেনে যথাযথভাবে যাচাই-বাছাই হয়েছে, সেগুলো অন্তর্ভুক্ত করে প্রকাশের ব্যবস্থা করব। কিন্তু ২৬ মার্চের মধ্যে শেষ করার নিশ্চয়তা দিতে পারছি না।

সাংসদ শামীম ওসমানের এক প্রশ্নের জবাবে মোজাম্মেল হক বলেন, জামায়াতে ইসলামী রাজনৈতিকভাবে সিদ্ধান্ত নিয়ে মুক্তিযুদ্ধের বিরোধিতা করেছিল। তাদের সৃষ্ট আল বদর, আল শামস, রাজাকারেরা ৩০ লাখ লোককে হত্যায় পাকিস্তানি বাহিনীকে সক্রিয় সহযোগিতা করেছিল। এই যুদ্ধাপরাধীদের একটি তালিকা স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে ছিল। কিন্তু ২০০১ সালে চার দলীয় জোট সরকার ক্ষমতায় আসার পর ওই তালিকা সরিয়ে ফেলা হয়েছে। ফলে সেই তালিকা প্রস্তুত করতে সময় নিতে হচ্ছে। আমরা ইতিমধ্যে জেলা ও উপজেলা প্রশাসনকে নির্দেশ দিয়েছি। তাদের কাছে যে তালিকা রয়েছে, তা সংরক্ষণ ও মন্ত্রণালয়ে পৌঁছে দিতে বলা হয়েছে।

অপর এক সম্পূরক প্রশ্নের জবাবে বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন প্রতিমন্ত্রী মাহবুব আলী বলেন, পরিবেশের বিরূপ প্রতিক্রিয়ার কারণে প্রবাল দ্বীপ সেন্টমার্টিনের প্রবালগুলো আর আগের মতো নেই। এই প্রবালগুলো প্রায় মৃত। এই দ্বীপকে বাঁচানোর জন্য আমরা নানা পরিকল্পনা হাতে নিয়েছি। প্রধানমন্ত্রীর পরামর্শে এগুলো বাস্তবায়নে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেব। সেন্টমার্টিন দ্বীপ দেশি-বিদেশি পর্যটকদের কাছে খুবই আকর্ষণীয়। এই দ্বীপকে আরও আকর্ষণীয় করে কীভাবে গড়ে তোলা যায়, তার একটি মহাপরিকল্পনা রয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর অনুমোদন সাপেক্ষে এটি বাস্তবায়নে অগ্রসর হব।

মোজাফ্ফর হোসেনের প্রশ্নের জবাবে কৃষিমন্ত্রী আবদুর রাজ্জাক বলেন, বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন করপোরেশনের (বিএডিসি) ৪৭৩টি সার গুদাম রয়েছে। এর মধ্যে ৫৩টি অব্যবহৃত রয়েছে।

এম আবদুল লতিফের প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী আবদুর রাজ্জাক বলেন, গত ১০ বছরে কৃষি খাতে মোট ৬৩ হাজার ২৬৩ কোটি ৪৩ লাখ টাকা ভর্তুকি দেওয়া হয়েছে। মন্ত্রীর তথ্য অনুযায়ী ভর্তুকির মধ্যে সারের জন্য ৬১ হাজার ১২৩ কোটি ৯৩ লাখ টাকা, বিদ্যুতে এক হাজার ১৫৯ কোটি ৭৯ লাখ টাকা, ইক্ষু ৮৬ কোটি ৮৮ লাখ টাকা ও ডিজেলে ৭৫০ কোটি টাকা রয়েছে। তিনি বলেন, কৃষকেররা সঠিক সময়ে ও সুলভমূল্যে সার পাওয়ার কারণে খাদ্যশস্য উৎপাদনের হার বৃদ্ধি পাচ্ছে। দেশ খাদ্যশস্য উৎপাদনে স্বয়ংসম্পূর্ণ হচ্ছে।