প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলতে চেয়েছিলেন বিমান ছিনতাইকারী

উড়োজাহাজটি চট্টগ্রামের শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করেছে। ছবি: সৌরভ দাশ
উড়োজাহাজটি চট্টগ্রামের শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করেছে। ছবি: সৌরভ দাশ

বাংলাদেশ বিমানের ময়ূরপঙ্খী উড়োজাহাজ ছিনতাইয়ের চেষ্টাকারী ব্যক্তি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে কথা বলতে চেয়েছিলেন। চট্টগ্রামের শাহ আমানত বিমানবন্দরের ভিআইপি লাউঞ্জের সামনে আজ রোববার রাতে সংবাদ ব্রিফিংয়ে এ তথ্য জানান চট্টগ্রাম সেনানিবাসের জিওসি মেজর জেনারেল এস এম মতিউর রহমান।

মেজর জেনারেল এস এম মতিউর রহমান বলেন, দুঃখজনক একটি ছিনতাইয়ের ঘটনা ছিল, এর অবসান হয়েছে। কমান্ডো বাহিনী আট মিনিটের মধ্যে অভিযানটি সম্পন্ন করে। অভিযানটি এত দ্রুত সময়ের মধ্যে সফলভাবে শেষ হয়েছে যে এর নামও দেওয়া যায়নি। ছিনতাইকারীর নাম মাহাদি। বয়স ২৫। তিনি বাংলাদেশের নাগরিক। তাঁর কাছে একটি পিস্তল ছিল। তাঁর দাবি ছিল, তিনি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও নিজের স্ত্রীর সঙ্গে কথা বলতে চান। তাঁকে কথা বলার সুযোগ করে দেওয়া হবে বলে অভিযানটি সফলভাবে শেষ হয়ে যায়।

এ ঘটনার সঙ্গে কোনো জঙ্গি সংশ্লিষ্টতা আছে কি না? জানতে চাইলে চট্টগ্রাম সেনানিবাসের জিওসি বলেন, বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হবে। প্রধানমন্ত্রীর আজকের চট্টগ্রাম সফরের সঙ্গে বিমান ছিনতাইচেষ্টার সংশ্লিষ্টতা আছে কি না? জানতে চাইলে তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রীর সফরের সঙ্গে এর কোনো সংশ্লিষ্টতা নেই।

প্রায় তিন ঘণ্টার টান টান উত্তেজনার পর চট্টগ্রামের শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে ময়ূরপঙ্খী উড়োজাহাজ ছিনতাইচেষ্টা ঘটনার অবসান হলো আজ সন্ধ্যা সাড়ে সাতটার দিকে। কমান্ডো অভিযানে উড়োজাহাজটিতে থাকা অস্ত্রধারী তরুণ নিহত হয়েছেন। ওই উড়োজাহাজ থেকে যাত্রী-ক্রুসহ সবাইকে নিরাপদে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে।

কমান্ডো অভিযান নিয়ে ব্রিফিংয়ে জানানো হয়, গুলিবিদ্ধ অবস্থায় ২৫-২৬ বছর বয়সী অস্ত্রধারী তরুণকে আটক করা হয়। পরে তিনি মারা যান।

এর আগে বিমানবাহিনীর জহুরুল হক ঘাঁটির প্রধান মফিজুর রহমান রাত আটটার দিকে বিমানবন্দরের সামনে সাংবাদিকদের বলেন, ২৫-২৬ বছর বয়সী অস্ত্রধারী একজনকে আটক করা হয়েছে। যাত্রী-ক্রু সবাই সুস্থ আছেন। আটক ব্যক্তির সঙ্গে তিনি নিজেই কথা বলে বিষয়টি সুরাহা করেছেন। কোনো ক্ষয়ক্ষতি হয়নি। ওই অস্ত্রধারীর দাবি-দাওয়া কী ছিল? এ বিষয়ে মফিজুর রহমানের কাছে জানতে চাইল তিনি সরাসরি উত্তর দেননি। তিনি বলেন, বিষয়টি তদন্ত করা হচ্ছে। এ ছাড়া প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে আজকের এই ঘটনা মনিটরিং করা হয়েছে বলে তিনি উল্লেখ করেন।

বাংলাদেশ বিমানের নতুন উড়োজাহাজ ময়ূরপঙ্খী ১৪২ জন যাত্রী ও পাঁচজন ক্রু নিয়ে ঢাকা থেকে দুবাইয়ে রওনা দেয় আজ বিকেল সাড়ে চারটার দিকে। ঢাকার হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে ছেড়ে যায় উড়োজাহাজটি। চট্টগ্রাম হয়ে বোয়িং ৭৩৭-৮০০ মডেলের উড়োজাহাজটি বিজি-১৪৭ ফ্লাইট হিসেবে দুবাই যাচ্ছিল।

বাংলাদেশ বিমানের একটি সূত্র জানিয়েছে, ১৬২ আসনের ময়ূরপঙ্খী উড়োজাহাজে ইকোনমি ক্লাসে ১৩৩ জন ও বিজনেস ক্লাসে নয়জন যাত্রী ছিলেন। এ ছাড়া পাঁচজন ক্রু, এর মধ্যে দুজন নারী ছিলেন। ককপিটে দুজন পাইলট ছিলেন। উড়োজাহাজটি ২০১৫ সালের ২৫ ডিসেম্বর বাংলাদেশ বিমানের বহরে যুক্ত করা হয়।