অস্ত্রধারী কিছুটা মানসিক ভারসাম্যহীন বলে শুনেছেন এম নাইম

বাংলাদেশ সিভিল অ্যাভিয়েশন কর্তৃপক্ষের (বেবিচক) চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস মার্শাল এম নাইম হাসান সাংবাদিকদের বলেছেন, বিমানের মধ্যে যাঁরা অস্ত্রধারীর (ছিনতাইয়ের চেষ্টাকারী) সঙ্গে কথা বলেছেন, তাঁরা বলেছেন ওই ব্যক্তিকে তাদের কিছুটা মানসিক ভারসাম্যহীন মনে হয়েছে।

চট্টগ্রামের শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে আজ রোববার বাংলাদেশ বিমানের ময়ূরপঙ্খী উড়োজাহাজ ছিনতাইয়ের চেষ্টার বিষয়ে রাতে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলার সময় এম নাইম এ কথা বলেন। ছিনতাইকারী প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলতে চেয়েছিলেন এ ব্যাপারে সাংবাদিকেরা জানতে চাইলে সিভিল অ্যাভিয়েশন কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান বলেন, ‘এই বিষয়টি পাইলট জানিয়েছেন। যাঁরা তার (ছিনতাই চেষ্টাকারী) সঙ্গে কথা বলেছেন, তাঁরা বলেছেন তাকে সাইকোলজিক্যালি একটু ইমব্যালেন্স মনে হয়েছে। আমরা এটা শুনেছি।’

সাংবাদিকের প্রশ্নের জবাবে এম নাইম হাসান বলেন, ছোট নেইল কাটার, খেলনা পিস্তলও আমরা ধরে ফেলি। সিস্টেমে এটা করা আছে। অনেক আগে এ ব্যাপারে মন্তব্য করা ঠিক হবে না, আমরা একটি তদন্ত কমিটি করব। যদি সে (ছিনতাই চেষ্টাকারী) সুস্থ থাকে নিশ্চয় সে-ও বলবে যে, ঘটনাটি কীভাবে ঘটেছে।

জঙ্গি বা সন্ত্রাসী উদ্দেশ্য ছাড়া কেউ এমন ঘটনা ঘটাতে পারে, এ প্রশ্নের উত্তরে এয়ার ভাইস মার্শাল এম নাইম হাসান বলেন, এ জন্য আমি বললাম, আমি মন্তব্য করতে চাচ্ছি না। আমাদের অনেকগুলো সেক্টরের অগ্রযাত্রা চোখে পড়ার মতো এবং আকাশপথের অগ্রযাত্রা সত্যিই একটি বিস্ময়কর ব্যাপার। ছোট ছোট এয়ারপোর্ট, যেগুলোকে আমরা আগে দাম দিতাম না; সৈয়দপুরে সারা দিনে একটি ফ্লাইট যেত। এখন আটটি থেকে নয়টি ফ্লাইট যায়। এসব অগ্রযাত্রা অনেকে লাইক না-ও করতে পারে। তদন্ত করে বিষয়টি জানা যাবে।

ছিনতাইয়ের কারণ সম্পর্কে বলতে গিয়ে এম নাইম বলেন, দেশের ইকোনমিক অবস্থা অত্যন্ত ভালো হয়েছে। মানুষ প্লেনে যাওয়া শুরু করেছে, তাদের ইকোনমির অ্যাফোর্ট বেড়েছে। এই অগ্রযাত্রা অনেকের হিংসার কারণ হতেও পারে। দেখা যাক। এসব অগ্রযাত্রা অনেকে লাইক না-ও করতে পারে।

তদন্তের বিষয়ে উল্লেখ করে সিভিল অ্যাভিয়েশন কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান এম নাইম হাসান বলেন, আমরা তদন্ত করলে সবই চলে আসবে। আমরা তদন্ত করব। সিসিটিভি আছে, সেটি চেক করব। আমাদের মেশিনে সিসিটিভি আছে, সবগুলো চেক করব। কারণ এই মেশিনের ভেতর দিয়ে যদি নেইল কাটার, খেলনা পিস্তল, ছুরি ধরা পড়তে পারে, তাহলে এগুলো ধরা হবে না—জিনিসটা খুব বিশ্বাসযোগ্য মনে হয় না। তদন্ত হোক তাহলে দেখি। যে ধরা পড়েছে, সে বাংলায় কথা বলে। আমি যত দূর জানি, সে বাংলাদেশি।

যদিও এয়ার ভাইস মার্শাল এম নাইম হাসানের সংবাদ সম্মেলনের কিছু পরে চট্টগ্রাম ক্যান্টনমেন্টের জিওসি মেজর জেনারেল মতিউর রহমান সাংবাদিকের প্রশ্নের জবাবে বলেছেন, ছিনতাই চেষ্টাকারী ব্যক্তি সেনা কমান্ডোদের সঙ্গে গোলাগুলির ঘটনায় আহত হন। পরে তাকে বাইরে আনা হলে তিনি মারা যান।

নিরাপত্তার ঘাটতির বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে এম নাইম হাসান আরও বলেন, খুব আগে বলা হয়ে যাবে জিনিসটা। আমরা একটু তলিয়ে দেখি। কারণ নরমাল সিস্টেমে প্রতিদিনই চেক হচ্ছে। এটা (নিরাপত্তা ব্যবস্থা) কীভাবে ভাঙল, সেটাও দেখতে হবে। এখন মন্তব্য করা ঠিক হবে না। তদন্ত কমিটি গঠনের বিষয়ে তিনি বলেন, তিন-চার সদস্যের কমিটি হতে পারে। মন্ত্রণালয়ের, বিমানের, আমাদের সদস্য থাকবেন।

এ ছাড়া প্রধানমন্ত্রীর মুভমেন্টের সঙ্গে এই ঘটনা রিলেট করা ঠিক হবে না বলেও জানান এয়ার ভাইস মার্শাল এম নাইম হাসান।

প্রায় তিন ঘণ্টার টান টান উত্তেজনার পর চট্টগ্রামের শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে বাংলাদেশ বিমানের ময়ূরপঙ্খী উড়োজাহাজ ছিনতাই চেষ্টা ঘটনার অবসান হলো আজ রোববার সন্ধ্যা সাড়ে সাতটার দিকে। কমান্ডো অভিযানে উড়োজাহাজটিতে থাকা অস্ত্রধারী তরুণ নিহত হয়েছেন। ওই উড়োজাহাজ থেকে যাত্রী-ক্রুসহ সবাইকে নিরাপদে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে।