সুন্দরবনে 'বন্দুকযুদ্ধে' দুই বনদস্যু নিহত

সুন্দরবনের চাঁদপাই রেঞ্জের তাম্বুলবুনিয়া খালে আজ সোমবার ভোরে র‍্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের (র‍্যাব) সঙ্গে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ দুই বনদস্যু নিহত হয়েছে।

র‍্যাবের দাবি, নিহত দুজন হলেন বনদস্যু আকাশ-বাবু বাহিনীর প্রধান আবুল কাশেম ওরফে আকাশ (৪০) ও একই বাহিনীর উপপ্রধান ফরিদ শেখ ওরফে মাইজ্যা (৪৫)। র‍্যাব ঘটনাস্থল থেকে ১৭টি আগ্নেয়াস্ত্র ও বিপুল পরিমাণ গোলাবারুদ উদ্ধার করেছে।
র‍্যাব ৮-এর উপ-অধিনায়ক মেজর আদনান কবিরের ভাষ্য, বনজীবী ও জেলেদের নিরাপত্তা এবং দস্যু দমনে চলমান অভিযানের অংশ হিসেবে আজ সকাল সাতটার দিকে র‍্যাবের টহল দল পূর্ব সুন্দরবনের চাঁদপাই রেঞ্জের তাম্বুলবুনিয়া খালে নিয়মিত টহল দিচ্ছিল। এ সময় আগে থেকে অবস্থান নেওয়া বনদস্যু আকাশ-বাবু বাহিনীর সদস্যরা র‍্যাব সদস্যদের লক্ষ্য করে গুলি ছুড়লে আত্মরক্ষায় র‍্যাবও পাল্টা গুলি ছোড়ে। প্রায় আধা ঘণ্টা ধরে চলা এ বন্দুকযুদ্ধে উভয় পক্ষের মধ্যে দুই শতাধিক গুলি বিনিময়ের ঘটনা ঘটে। বন্দুকযুদ্ধ শেষে ওই এলাকায় র‍্যাবের সদস্যরা তল্লাশি চালিয়ে দুই বনদস্যুর লাশ উদ্ধার করেন।
আদনান কবির আরও বলেন, স্থানীয় জেলেরা লাশ দুটি বনদস্যু আকাশ-বাবু বাহিনীর প্রধান কাশেম ওরফে আকাশ এবং অপরজন একই বাহিনীর উপপ্রধান ফরিদ শেখ ওরফে মাইজ্যার বলে শনাক্ত করেছেন। প্রাথমিকভাবে জেলেদের মাধ্যমে জানা গেছে, আকাশের বাড়ি বাগেরহাটের শরণখোলা এলাকায় ও ফরিদ শেখের বাড়ি বাগেরহাটের রামপাল উপজেলায়। তবে তাঁদের পারিবারিক পরিচয় নিশ্চিত করতে পারেনি র‍্যাব।
ঘটনাস্থল থেকে চারটি এলজি, পাঁচটি কাটা বন্দুক, ছয়টি একনলা বন্দুক ও দুইটি এয়ার রাইফেল এবং ৪৫০টি তাজা গুলি, ধারালো অস্ত্র, মোবাইল ফোন, সিম কার্ড, টোকেনসহ বিভিন্ন মালামাল উদ্ধারের দাবি করেছে র‍্যাব।

অস্ত্র ও নিহতদের মরদেহ দুপুরে মংলা থানা পুলিশে হস্তান্তর করা হয়। মংলা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) লুৎফুর রহমান জানান, এ ঘটনায় মংলা থানায় অস্ত্র আইন ও সরকারি কাজে বাধা দানের দুটি মামলা হয়েছে। লাশ দুটি লাশ ময়নাতদন্তের জন্য দুপুরে বাগেরহাট জেলা সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে।
র‍্যাবের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, পাঁচ বছর ধরে আকাশ-বাবু বাহিনীর সদস্যরা চাঁদপাই রেঞ্জের হারবাড়িয়ার খাল, তাম্বুলবুনিয়া খাল, শ্যালাগাং, আরুবাড়িয়া, কাতলার খাল এবং শরণখোলা রেঞ্জের বিভিন্ন খালে ডাকাতি, নিরীহ জেলেদের অপহরণ করে মুক্তিপণ আদায় ও মাছ ধরার ট্রলারে লুটপাট চালিয়ে আসছিল। চলতি বছরের জুলাই মাসে এ বাহিনী শরণখোলা উপজেলার বকুলতলা গ্রামের দেলোয়ার তালুকদার, শাহ আলম, ফারুক হোসেন, সোনাতলা গ্রামের বারেক মুন্সী, উত্তর রাজাপুর গ্রামের ইয়াছিন হাওলাদার, মিজানুর রহমান হাওলাদার, হাবিবুর রহমান হাওলাদার, ফারুক হাওলাদার ও দক্ষিণ রাজাপুর গ্রামের শাহীন হাওলাদারকে অপহরণ করে মুক্তিপণ আদায় করে।

সর্বশেষ গত মাসের ২৮ তারিখে কাশেম ওরফে আকাশ বাবুর নেতৃত্বে এ বাহিনী শরণখোলা থেকে স্কুলছাত্র রাজিবকে অপহরণ করে মুক্তিপণ আদায় করে। বিভিন্ন পত্রপত্রিকায় এ খবর প্রকাশিত হয়। তাঁর বিরুদ্ধে শরণখোলা থানায় অস্ত্র ও ডাকাতির একাধিক মামলা রয়েছে।