'প্রথম আলো আমাদের পাঠশালা'

‘পাঠকের মুখোমুখি প্রথম আলো’ অনুষ্ঠানে কথা বলছেন বেসরকারি সংস্থার পরিচালক সামসুদ্দিন আহম্মেদ। গতকাল বিকেলে বরগুনার সরকারি জেলা গণগ্রন্থাগার মিলনায়তনে।  ছবি: প্রথম আলো
‘পাঠকের মুখোমুখি প্রথম আলো’ অনুষ্ঠানে কথা বলছেন বেসরকারি সংস্থার পরিচালক সামসুদ্দিন আহম্মেদ। গতকাল বিকেলে বরগুনার সরকারি জেলা গণগ্রন্থাগার মিলনায়তনে। ছবি: প্রথম আলো

‘প্রথম আলো আমাদের কাছে একটি পাঠশালা। এ পাঠশালায় আমরা প্রতিনিয়ত শিখছি।’ গতকাল সোমবার বরগুনা জেলা সরকারি গণগ্রন্থাগার মিলনায়তনে ‘পাঠকের মুখোমুখি প্রথম আলো’ শীর্ষক পাঠক সমাবেশে স্থানীয় একটি বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থার প্রধান নির্বাহী হোসনে আরা এসব কথা বলেন। তিনি আরও বলেন, এ জেলায় মাছ আছে, কৃষি আছে। এসব নিয়ে এখানে শিল্পায়নের কথা ভাবতে হবে। এ জন্য প্রথম আলো এসব সম্ভাবনাকে এগিয়ে নিতে পারে।

সোমবার বিকেল চারটায় অনুষ্ঠান শুরু হওয়ার কথা থাকলেও বেলা তিনটা থেকেই পাঠকেরা সমবেত হতে থাকেন সমাবেশস্থলে। চারটার মধ্যে কানায় কানায় ভরে ওঠে মিলনায়তন।

 বিকেল চারটায় অনুষ্ঠানের শুরুতে প্রথম আলোর ২০ বছর পূর্তি উপলক্ষে নির্মিত ‘অদম্য আলো ও আলোর পাঠশালা’ নামের দুটি প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শন করা হয়। পিনপতন নীরবতায় তা উপভোগ করেন দর্শকেরা।

 অনুষ্ঠানে অতিথি ছিলেন বরগুনা সরকারি কলেজের অবসরপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ প্রতাপ চন্দ্র বিশ্বাস, সচেতন নাগরিক কমিটির (সনাক) জেলা সভাপতি আইনজীবী আনিচুর রহমান। অনুষ্ঠানের শুরুতে পাঠকদের উদ্দেশে শুভেচ্ছা বক্তব্য দেন প্রথম আলো সম্পাদক মতিউর রহমান। পরে তিনি পাঠকদের নানা প্রশ্নের জবাব দেন এবং তাঁদের বিভিন্ন পরামর্শ শোনেন।

স্বাগত বক্তব্যে পাঠকদের শুভেচ্ছা জানিয়ে মতিউর রহমান বলেন, ‘ঢাকার বাইরে এলে ভালো লাগে। তাই আমরা ঢাকার বাইরের পাঠকদের সঙ্গে কথা বলতে ছুটে এসেছি। আমাদের শিক্ষা, স্বাস্থ্য, সামাজিক ও অন্যান্য ক্ষেত্রে সারা দেশে উন্নয়ন হয়েছে। হয়তো শিল্পায়নে তার চেয়েও অগ্রগতি হয়েছে। কিন্তু সব জেলায় সমভাবে এ উন্নয়ন হয়নি। কিছু এলাকা উন্নয়নের দিক থেকে দুর্বল। বিশেষ করে উপকূলীয় জেলা বরগুনা আরও পিছিয়ে। বরগুনার দুই পাশে দুটি নদী। এই নদীর দুই তীরে পর্যটনের অনেক সম্ভাবনা রয়েছে। এসব সম্ভাবনা আমরা তুলে ধরব, যাতে সাগরপারের এই এলাকা পর্যটন জোন হিসেবে গড়ে উঠতে পারে।’

বাল্যবিবাহের প্রসঙ্গ টেনে মতিউর রহমান বলেন, ‘১৮ বছরের আগে বিয়ে নয়। এ ব্যাপারে সবাইকে সজাগ থাকতে হবে। আমাদের সবার লক্ষ্য একটাই—আমরা বাংলাদেশের জয় দেখতে চাই।’

অনুষ্ঠানে সিপিবির জেলা সভাপতি আবদুল হালিম বলেন, ‘মূলত আমরা সংবাদপত্রের পাঠক হিসেবে প্রথম আলোর ওপরে আস্থা রাখি। কারণ, প্রথম আলো আমাদের কথা বলে।’

অনুষ্ঠানে এসেছিলেন ২০ বছর ধরে প্রথম আলো পড়ছেন এমন একজন পাঠক সামসুদ্দিন আহম্মেদ খান। তিনি বলেন, ‘আমার তিন মেয়ের মধ্যে বড় মেয়ে প্রথম আলোর পড়াশোনা পাতার সহযোগিতায় ভালো ফল করেছে। তাই আমার দাবি, পড়াশোনার পাতা বাড়ানো হোক।’

মৌরি নামের এক পাঠক বলেন, ফ্রিল্যান্সারদের বাইরে থেকে অর্জিত অর্থ দেশে আনতে অনেক সমস্যায় পড়তে হয়। তিনি এ সমস্যা দূরীকরণে প্রথম আলোর সহায়তা প্রত্যাশা করেন।

 পাঠক সমাবেশে বক্তব্য দেন চিকিৎসক ধীরেন্দ্রনাথ সরদার, জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক গোলাম সরোয়ার, মহিলা পরিষদের সভাপতি নাজমা বেগম, সাবেক শিক্ষক মাহফুজা বেগম, শিক্ষক হোসনে আরা, তরুণ উদ্যোক্তা আবদুল আলিম ও রাকিবুল ইসলাম। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন প্রথম আলোর বরিশালের নিজস্ব প্রতিবেদক এম জসীম উদ্দীন। অনুষ্ঠানের সহযোগিতা করেন প্রথম আলোর বরগুনার বন্ধুসভার সদস্যরা।

প্রায় ৩০০ পাঠক অনুষ্ঠানে যোগ দেন।