সৈয়দপুরে প্রকাশ্যে বিক্রি হচ্ছে মদ

নীলফামারীর সৈয়দপুরে প্রকাশ্যে বিক্রি হচ্ছে বাংলা মদ। অনুমোদনপ্রাপ্ত মদভাটি ছাড়াও শহরের প্রায় পাঁচটি স্থানে মাদক ব্যবসায়ীরা মদ বিক্রি করছেন। এতে এলাকার নানা শ্রেণির মানুষ ও তরুণেরা মাদকাসক্ত হয়ে পড়ছেন। অথচ পুলিশ প্রকাশ্যে মদ বিক্রি বন্ধে কার্যকর কোনো ব্যবস্থা নিচ্ছে না।

সরেজমিন দেখা যায়, সৈয়দপুর শহরের নতুন বাজার আদর্শ বালিকা বিদ্যালয় ও কলেজের কাছে সরকারি অনুমোদনপ্রাপ্ত মদভাটি রয়েছে। ২০ ঘণ্টাই এটি খোলা থাকে। এখানে সকাল ৮টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত মদ বিক্রির কথা থাকলেও সে নিয়ম মানা হচ্ছে না। শুধু এখান থেকে সুইপার ও কার্ডধারী মাদকসেবীরা মদ কিনতে পারবে বলে নিয়ম থাকলেও কিশোর থেকে শুরু করে সব শ্রেণির মানুষ এখান থেকে মদ কিনছে। এমনকি এখানকার মদ এখানেই খেয়ে শেষ করার শর্ত থাকলেও অধিকাংশ মদই চলে যাচ্ছে শহরের বিভিন্ন এলাকায়। এদের মধ্যে আবার অনেকে একাধিকবার মদ কিনে কোমল পানীয়র বোতল ভর্তি করে অন্যত্র নিয়ে গিয়ে বিক্রি করছে।

এভাবে শহরের প্রায় পাঁচটি স্থানে চলছে বাংলা মদের জমজমাট বিক্রি ও সেবন। এর মধ্যে শহরের তামান্না সিনেমা হলের পেছনে মেথর পট্টি–সংলগ্ন এলাকায় লিটন এবং বাঁশবাড়ী-নতুনবাবুপাড়ার মধ্যস্থলে সাদ্দাম মোড় এলাকায় সেলিম, রেলওয়ে বাজারে রেললাইনের পাশে বাঁশহাটিতে নিজাম, আদানী মোড় এলাকায় আইনুল এবং গোলাহাট এলাকায় মোবারক নিয়মিত মদভাটি থেকে মদ এনে বিক্রি করছেন।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে শহরের কয়েকজন বাসিন্দা অভিযোগ করেন, মদভাটির ম্যানেজার জসিমের সহযোগিতাতেই লিটন, সেলিম, নিজাম, আইনুল ও মোবারক শহরের বিভিন্ন স্থানে বাংলা মদ বিক্রি করছেন। এ ক্ষেত্রে তাঁদের প্রশাসনিক সহযোগিতা করছেন সৈয়দপুর থানার ক্যাশিয়ার নামে পরিচিত রাজু নামের এক ব্যক্তি।

এই বিষয়ে মদভাটির ব্যবস্থাপক জসিম মুঠোফোনে বলেন, ‘আদর্শ বালিকা বিদ্যালয় ও কলেজের কারণে বেলা দুইটা পর্যন্ত মদভাটি বন্ধ রাখতে হচ্ছে। এই কারণে আমরা লোকসানে পড়েছি। তাই অন্যত্র বিক্রি করতে বাধ্য হচ্ছি।’

এ ব্যাপারে সৈয়দপুর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার অশোক কুমার পাল বলেন, ‘পুলিশের নাম ভাঙিয়ে কোনো ক্যাশিয়ার চাঁদা বা টাকা উত্তোলন করে থাকলে এবং এই ব্যাপারে কেউ সুনির্দিষ্টভাবে অভিযোগ করলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

সৈয়দপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা শাহজাহান পাশা বলেন, মদভাটি সরকারি লাইসেন্সপ্রাপ্ত। তবে নিয়মের বাইরে কিছু করা হলে সে বিষয়ে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ পাওয়ার পর তদন্ত করে দেখা হবে। তিনি দাবি করেন, ‘মদ বিক্রি দূরের কথা, শহরে এখন ফেনসিডিল, ইয়াবা, গাঁজা বিক্রি একেবারে নেই বললেই চলে। সব সময় প্রশাসনের নজরদারি থাকায় সৈয়দপুর থেকে মাদক নির্মূল হতে চলেছে। শহরের কোথাও বাংলা মদ বিক্রির কোনো তথ্য আমাদের জানা নেই।’

সৈয়দপুর পৌরসভার মেয়র আমজাদ হোসেন সরকার বলেন, পৌর এলাকায় কোনো অবস্থাতেই মদভাটি থাকতে পারবে না। এটি সরিয়ে নেওয়ার জন্য বলা হয়েছে। মদভাটি সরিয়ে না নিলে এই শহরের মানুষ নিজেরাই তা উচ্ছেদ করবে।