মধুর টানে খামারবাড়িতে

খামারবাড়িতে শুরু হয়েছে তিন দিনের জাতীয় মৌ মেলা। সেখানে দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের কথা বিবেচনায় নিয়ে মধুর বোতলের গায়ে ব্রেইল পদ্ধতিতে লেখা লেবেল নিয়ে এসেছেন চট্টগ্রামের মধু ব্যবসায়ী সৈয়দ মঈনুল আনোয়ার। জানালেন, প্রতিবারই ভিন্ন কোনো পরিকল্পনায় নিয়ে মেলায় অংশ নেন তিনি। গতবার তিনি কোনো মধু বিক্রি করেননি। মেলায় আশা ক্রেতা-দর্শনার্থীদের কেবল খাঁটি মধু চেনার উপায় বাতলে দিয়েছেন। এবার হাজির হয়েছেন দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের মধু চেনানোর প্রয়াস নিয়ে।
খামারবাড়িতে শুরু হয়েছে তিন দিনের জাতীয় মৌ মেলা। সেখানে দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের কথা বিবেচনায় নিয়ে মধুর বোতলের গায়ে ব্রেইল পদ্ধতিতে লেখা লেবেল নিয়ে এসেছেন চট্টগ্রামের মধু ব্যবসায়ী সৈয়দ মঈনুল আনোয়ার। জানালেন, প্রতিবারই ভিন্ন কোনো পরিকল্পনায় নিয়ে মেলায় অংশ নেন তিনি। গতবার তিনি কোনো মধু বিক্রি করেননি। মেলায় আশা ক্রেতা-দর্শনার্থীদের কেবল খাঁটি মধু চেনার উপায় বাতলে দিয়েছেন। এবার হাজির হয়েছেন দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের মধু চেনানোর প্রয়াস নিয়ে।
>

• মধুর বোতলের গায়ে ব্রেইলে লেখা আছে সবকিছু
• তিন দিন চলবে মৌ মেলা
• প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ১ হাজার ৫০০ থেকে ২ হাজার টাকায়

দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী নিপা আক্তার মধুর বোতল হাতে নিয়ে বললেন, ‘এটি খেসারি ফুলের মধু। সংগ্রহ করা হয়েছে গোপালগঞ্জ থেকে।’ কীভাবে বুঝলেন, জানতে চাইতেই ঝটপট উত্তর, ‘দেখুন, বোতলের গায়ে ব্রেইল পদ্ধতিতে সবকিছু লেখা রয়েছে।’

গতকাল রোববার খামারবাড়িতে শুরু হয়েছে তিন দিনের জাতীয় মৌ মেলা। সেখানে দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের কথা বিবেচনায় নিয়ে মধুর বোতলের গায়ে ব্রেইল পদ্ধতিতে লেখা লেবেল নিয়ে এসেছেন চট্টগ্রামের মধু ব্যবসায়ী সৈয়দ মঈনুল আনোয়ার। জানালেন, প্রতিবারই ভিন্ন কোনো পরিকল্পনায় নিয়ে মেলায় অংশ নেন তিনি। গতবার তিনি কোনো মধু বিক্রি করেননি। মেলায় আশা ক্রেতা-দর্শনার্থীদের কেবল খাঁটি মধু চেনার উপায় বাতলে দিয়েছেন। এবার হাজির হয়েছেন দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের মধু চেনানোর প্রয়াস নিয়ে।

ফার্মগেটের আ. কা. মু গিয়াস উদ্দিন মিলকী মিলনায়তন চত্বরে এ মেলায় অংশ নিয়েছে মধু চাষ ও বিপণনের সঙ্গে যুক্ত বিভিন্ন ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান। মেলা থেকে ক্রেতারা ৩৫০ থেকে ২ হাজার টাকা কেজি দরে কিনতে পারবেন বিভিন্ন ফুলের খাঁটি মধু। কৃষি মন্ত্রণালয় আয়োজিত এ মেলায় অংশ নিচ্ছে ৬৩টি প্রতিষ্ঠান। মেলার উদ্বোধন করেন কৃষিমন্ত্রী আব্দুর রাজ্জাক। এ সময় কৃষি মন্ত্রণালয়ের সচিব নাসিরুজ্জামান, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মীর নূরুল আলম উপস্থিত ছিলেন।

মেলায় অংশ নেওয়া মধুচাষিদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, দেশে সবচেয়ে বেশি মধু আহরিত হয় সরষে ফুল থেকে। এর পাশাপাশি লিচু, কালিজিরা, তিসি, মৌরী, বরই, ধনে, আমসহ বিভিন্ন ফুল থেকেও মধু সংগ্রহ করা হয়। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের হিসাবে দেশে বছরে প্রায় তিন হাজার মেট্রিক টন মধু উৎপাদিত হয়। এর মধ্যে প্রায় ২০ শতাংশ আসে সুন্দরবন থেকে।

সাতক্ষীরার সুন্দরবন মৌয়াল শ্রমজীবী সমবায় সমিতি লি. তাদের ব্র্যান্ড ‘মৌয়াল মধু’ নিয়ে মেলায় অংশ নিয়েছেন। প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ১ হাজার ৫০০ থেকে ২ হাজার টাকায়। প্রতিষ্ঠান সূত্রে জানা গেছে, সুন্দরবনের অর্গানিক মধুর বিশ্বব্যাপী ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। প্রতিষ্ঠানটি নিয়মিতভাবে জাপানের বাজারে মধু রপ্তানি করে থাকে।

এদিকে মৌ মেলায় খাঁটি মধু পাওয়া যায় বলে ঢাকার বাসিন্দারা প্রতিবছর এই মেলার জন্য অপেক্ষা করে থাকেন বলে জানিয়েছেন মেলায় আসা একাধিক ক্রেতা। এমন একজন মালিবাগের বাসিন্দা নবনীতা সেন বলেন, ‘মধুতে প্রচুর পরিমাণে পুষ্টিকর ও উপাদেয় খাদ্য উপাদান রয়েছে। কিন্তু বাজারের মধু নিয়ে সন্দেহ থাকে। গতবার এই মেলায় এসে খাঁটি মধু চিনতে শিখেছি। এবার নির্ভাবনায় সারা বছরের জন্য মধু সংগ্রহ করব।’

জাতীয় মৌ মেলার প্রথম দিনে সকালে আ. কা. মু গিয়াস উদ্দিন মিলকী মিলনায়তনে ‘মৌ চাষ ও মধুর বাজার সম্প্রসারণ, সমস্যা ও উত্তরণ’ বিষয়ে সেমিনার হয়।

মৌ মেলা চলবে কাল মঙ্গলবার পর্যন্ত। প্রতিদিন সকাল ৯টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত মেলা সবার জন্য উন্মুক্ত। এতে মধুর পাশাপাশি মৌ চাষের উপকরণও বিক্রিও হচ্ছে।