বিদেশি ডাকটিকিটে বঙ্গবন্ধু

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে নিয়ে ২০১৭ সালে ব্রাজিল (বাঁয়ে) ও ২০১৮ সালে অস্ট্রেলিয়া থেকে প্রকাশিত স্মারক ডাকটিকিট।  ছবি: সংগৃহীত
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে নিয়ে ২০১৭ সালে ব্রাজিল (বাঁয়ে) ও ২০১৮ সালে অস্ট্রেলিয়া থেকে প্রকাশিত স্মারক ডাকটিকিট। ছবি: সংগৃহীত

১৯২০ সালের ১৭ মার্চ জন্মগ্রহণের পর আজ শততম বছরে পা পড়ল বঙ্গবন্ধুর, তাঁর মর্মান্তিক মহাপ্রয়াণ ঘটেছে ৪৪ বছর আগে। কিন্তু যতই দিন যাচ্ছে, উত্তরোত্তর উজ্জ্বল হয়ে উঠছে তাঁর মহিমা। বাংলাদেশ নামে রাষ্ট্রটি যত দিন থাকবে, অক্ষয় হয়ে থাকবে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের অবদান।

আজ ১৭ মার্চ বঙ্গবন্ধুর ৯৯তম জন্মবার্ষিকী ও জাতীয় শিশু দিবস। ১৯২০ সালের এই দিনে গোপালগঞ্জ জেলার টুঙ্গিপাড়া গ্রামে তাঁর জন্ম। মানুষের অধিকার আদায়, পূর্ববাংলার মানুষের মুক্তি এবং বাঙালির জন্য স্বাধীন ও সার্বভৌম রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার জন্য বঙ্গবন্ধু আজীবন সংগ্রাম করে গেছেন। তাঁরই নেতৃত্বে বাঙালি জাতি পেয়েছে আত্মপরিচয়, নিজেদের সংস্কৃতিচর্চার অবাধ স্বাধীনতা, লাল–সবুজ পতাকা।

মানুষের জন্য বিশ্বে যাঁরা অভূতপূর্ব অবদান রেখেছেন, সেসব মহান ব্যক্তিত্বকে পরিচিত ও স্মরণীয় করে রাখার এক অনুপম মাধ্যম হলো ডাকটিকিট। যে বাংলাদেশের অভ্যুদয়ের সঙ্গে বঙ্গবন্ধু ওতপ্রোতভাবে জড়িত, সেখানে তাঁকে নিয়ে বিচিত্র ডাকটিকিট প্রকাশিত হওয়াটাই স্বাভাবিক। কিন্তু বাংলাদেশের বাইরে থেকেও তাঁকে নিয়ে ডাকটিকিট প্রকাশিত হয়েছে।

 প্রথমে বেরিয়েছে ব্রাজিল থেকে। ২০১৭ সালের ১৬ ডিসেম্বর সেখান থেকে প্রকাশিত হয় ১২টি ডাকটিকিটের একটি শিটলেট। শিটলেট হলো, একটি কাগজে ছাপানো একাধিক ডাকটিকিটের সমাহার। পরে অস্ট্রেলিয়া থেকে প্রকাশিত হয় এক অস্ট্রেলিয়ান ডলারের একটি ডাকটিকিট। সেটি বেরোয় ২০১৮ সালের ২৮ সেপ্টেম্বর বঙ্গবন্ধুকন্যা প্রধানমন্ত্রীর জন্মদিনে। অস্ট্রেলিয়াপ্রবাসী বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন নিয়ে এই ডাকটিকিট প্রকাশের উদ্যোগ নেয়। দুটো ডাকটিকিটেই বঙ্গবন্ধুর ছবি স্থান পায়। ব্রাজিল ও অস্ট্রেলিয়া থেকে প্রকাশিত দুটি ডাকটিকিটই ধরনের দিক থেকে ছিল পার্সোনালাইজড। বিভিন্ন দেশে ডাক বিভাগে সুনির্দিষ্ট ফি দিয়ে পছন্দমতো ডিজাইনে পার্সোনালাইজড ডাকটিকিট বের করার নিয়ম আছে। বাংলাদেশে এর প্রচলন না হলেও বিদেশে এটি বেশ জনপ্রিয়তা পেয়েছে।

বঙ্গবন্ধুর জীবন, আদর্শ ও কর্মকে বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে দেওয়ার জন্য বাংলাদেশ ডাক বিভাগও এ পর্যন্ত প্রকাশ করেছে ৪৪টি স্মারক ডাকটিকিট, ৪৬টি উদ্বোধনী খাম, ১২টি স্যুভেনির শিট, ৪টি বিশেষ খাম, ৪টি বিশেষ সিলমোহর, ২টি ফোল্ডার, ৮টি এরোগ্রাম ও ৫টি পোস্টকার্ড। বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে প্রথম বেরিয়েছিল ১৯৭১ সালের ২৯ জুলাই। মুক্তিযুদ্ধকালে বাংলাদেশের নামে ৮টি ডাকটিকিট বের করা হয়। তার একটিতে স্থান পায় বঙ্গবন্ধুর ছবি। ডাকটিকিটের নকশা করেছিলেন লন্ডনপ্রবাসী বাঙালি বিমান মল্লিক।

আগামী বছর বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবর্ষ। সরকার ২০২০ সালকে ‘মুজিববর্ষ’ হিসেবে উদ্‌যাপনের ঘোষণা দিয়েছে। এ কারণে বিশ্ব ডাক সংস্থার মাধ্যমে বিভিন্ন দেশ থেকে বঙ্গবন্ধুর ওপর স্মারক ডাকটিকিট প্রকাশের জন্য ডাক মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগ নেওয়ার এখনই সময়।