সিলেটের ১৪ গুণীকে সম্মাননা

জেলা শিল্পকলা একাডেমির সম্মাননা পাওয়া ব্যক্তিদের সঙ্গে অতিথিরা। গতকাল সিলেট জেলা শিল্পকলা একাডেমি প্রাঙ্গণে।  ছবি: প্রথম আলো
জেলা শিল্পকলা একাডেমির সম্মাননা পাওয়া ব্যক্তিদের সঙ্গে অতিথিরা। গতকাল সিলেট জেলা শিল্পকলা একাডেমি প্রাঙ্গণে। ছবি: প্রথম আলো

সিলেটের শিল্প ও সাহিত্য অঙ্গনের ১৪ গুণী ও একটি সংগঠন ‘জেলা শিল্পকলা একাডেমি পদক’ পেয়েছে। গতকাল শনিবার বিকেলে নগরের পূর্ব শাহি ঈদগাহ এলাকায় জেলা শিল্পকলা একাডেমি প্রাঙ্গণে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে এ সম্মাননা জানানো হয়।

বিকেল সাড়ে চারটায় অনুষ্ঠান শুরু হয়। অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন গুণীদের হাতে পদক তুলে দেন। এ পর্বে সভাপতিত্ব করেন জেলা প্রশাসক এম কাজী এমদাদুল ইসলাম। স্বাগত বক্তব্য দেন জেলা সাংস্কৃতিক কর্মকর্তা অসিত বরণ দাশগুপ্ত। এ ছাড়া শুভেচ্ছা বক্তব্য দেন সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোট সিলেটের সাধারণ সম্পাদক গৌতম চক্রবর্তী ও সম্মিলিত নাট্য পরিষদ সিলেটের সাধারণ সম্পাদক রজতকান্তি গুপ্ত।

২০১৮ সালের পদকপ্রাপ্ত গুণীজনেরা হচ্ছেন শুভেন্দু ইমাম (লোকসংস্কৃতি), মোকাদ্দেস বাবুল (আবৃত্তি), সুনির্মল কুমার দেব মীন (নাট্যকলা), বিশ্বজিৎ দে অনু (যন্ত্রশিল্পী) ও মালতী পাল (কণ্ঠ সংগীত)। ২০১৭ সালের পদকপ্রাপ্ত গুণীজনেরা হচ্ছেন শামীমা চৌধুরী (আবৃত্তি), কাজী আয়েশা বেগম (নাট্যকলা), মো. মধু খান (যন্ত্রশিল্পী) ও রানা কুমার সিনহা (কণ্ঠ সংগীত)।

এ বছর আঞ্চলিক সৃজনশীল সংগঠন হিসেবে নৃত্যশৈলী সিলেটকে সম্মাননা পদক দেওয়া হয়েছে। আর ২০১৬ সালের পদকপ্রাপ্ত গুণীজনেরা হচ্ছেন আবুল ফতেহ ফাত্তাহ (লোকসংস্কৃতি), শাকুর মজিদ (চলচ্চিত্র), আতাউর রহমান আতা (ফটোগ্রাফি), ক্ষিতীশ দাশ (যন্ত্রশিল্পী) ও জামাল উদ্দিন হাসান বান্না (কণ্ঠ সংগীত)।

পদক প্রদান পর্ব শেষে তিন বছরের পদকপ্রাপ্ত তিনজন গুণী অনুভূতি প্রকাশ করে বক্তব্য দেন। তাঁরা হলেন লোকসংস্কৃতি গবেষক শুভেন্দু ইমাম ও আবুল ফতেহ ফাত্তাহ এবং আবৃত্তিকার শামীমা চৌধুরী।

সম্মাননা প্রদান অনুষ্ঠানে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন বলেন, সিলেট শিল্প-সাহিত্যের ক্ষেত্রে এক বিশিষ্ট অঞ্চল। সিলেটের মানুষের মধ্যে গান ও শিল্পের প্রতি দরদ রয়েছে। হাসন রাজা, শিতালং শাহ, শাহ আবদুল করিমসহ সিলেটের বহু মরমি গীতিকার স্বতন্ত্র স্থান তৈরি করেছেন। মানুষের জন্য কেবল বাণিজ্যিক উন্নয়নই যথেষ্ট নয়, চিত্তবিত্ত ও শিল্পের উন্নয়নও প্রয়োজন। তবে বিশ্বের মধ্যে বাংলাদেশেই একমাত্র সবচেয়ে বেশি মানবতার জয়গান ধ্বনিত হয়। মনে রাখতে হবে, কেবল অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিই প্রয়োজন নয়, চিত্তবিত্তের বিকাশও প্রয়োজন।

সম্মাননা-প্রদান পর্ব শেষে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান হয়। এ পর্বে দলীয় নৃত্য ও সংগীত পরিবেশন করেন শিল্পকলা একাডেমির প্রশিক্ষণার্থীরা। এ ছাড়া একাডেমি ফর মণিপুরি কালচার অ্যান্ড আর্টের শিল্পীরা নৃত্য ও সিলেট সরকারি অগ্রগামী বালিকা উচ্চবিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা জারিগান পরিবেশন করেন। শিল্পী শামীম আহমদ ও উপাসনা চৌধুরী মেধা গান পরিবেশন করেন। পুরো অনুষ্ঠানটি সঞ্চালন করেন আবু বকর মো. আল আমিন ও রিফাত আরা।