মেরামত শেষে ফেরার পথে আবার বিকল অ্যাম্বুলেন্স

শেরপুর
শেরপুর

শেরপুরের নালিতাবাড়ী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের একমাত্র অ্যাম্বুলেন্সটি মেরামত শেষে নিয়ে আসার পথে আবার বিকল হয়েছে। এ কারণে ২৫ দিন ধরে এ হাসপাতালের রোগী ও তাদের স্বজনেরা দুর্ভোগ পোহাচ্ছে।
স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটির কর্তৃপক্ষ বলছে, অ্যাম্বুলেন্সটি মেরামতের জন্য আবার ওয়ার্কশপে পাঠানো হয়েছে। তবে এলাকাবাসী এ হাসপাতালে নতুন অ্যাম্বুলেন্সের দাবি জানিয়েছেন।

৬ মার্চ প্রথম আলোয় ‘নালিতাবাড়ী স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স; একমাত্র অ্যাম্বুলেন্স বিকল, রোগীদের ভোগান্তি’ শিরোনামে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। এর পরদিন সেটি মেরামত করতে শেরপুরে ওয়ার্কশপে পাঠানো হয়। ৩০ হাজার টাকা ব্যয়ে অ্যাম্বুলেন্সটি মেরামত করা হয়। গত শুক্রবার অ্যাম্বুলেন্সটি হাসপাতালে নিয়ে আসার সময় সড়কেই বিকল হয়ে পড়ে।

পৌর শহরের রমজান আলী বলেন, ‘মাকে চিকিৎসা দিতে হাসপাতালে নিয়ে আসি। চিকিৎসক তাঁকে উন্নত চিকিৎসা দিতে ময়মনসিংহে পাঠানোর পরামর্শ দিয়েছেন।
কিন্তু অ্যাম্বুলেন্স বিকল থাকায় বাধ্য হয়ে বেশি টাকা ব্যয়ে মাইক্রোবাসে করে নিয়ে গেছি। দ্রুত এ হাসপাতালে একটি অ্যাম্বুলেন্স দরকার। প্রতিদিন মানুষ অ্যাম্বুলেন্স না থাকায় ভোগান্তি পোহাচ্ছে।’

নালিতাবাড়ী প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক বিপ্লব দে বলেন, তাঁর ছোট ভাইয়ের স্ত্রীর মাতৃত্বকালীন সমস্যা রয়েছে। যেকোনো সময় অ্যাম্বুলেন্সের প্রয়োজন পড়বে। কিন্তু ২৫ দিন ধরে অ্যাম্বুলেন্সটি বিকল থাকায় দুশ্চিন্তা বেড়েছে।
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সূত্রে জানা যায়, ২০০৯ সালে ৩১ শয্যাবিশিষ্ট হাসপাতালটির জন্য সরকারিভাবে একটি অ্যাম্বুলেন্স দেওয়া হয়। এ উপজেলায় প্রায় চার লাখ মানুষের বাস। ২০১৬ সালে আরও ১৯টি শয্যা বাড়িয়ে হাসপাতালটি ৫০ শয্যায় উন্নীত করা হয়।

এ হাসপাতালের মুমূর্ষু রোগীদের বিভিন্ন ইউনিয়ন থেকে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আনতে এবং এখান থেকে জরুরি প্রয়োজনে ঢাকা ও ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠাতে আগের অ্যাম্বুলেন্সটি ব্যবহৃত হতে থাকে। অ্যাম্বুলেন্সটি পুরোনো হওয়ায় একাধিকবার বিকল হয়ে পড়ে। এরপরও সেটি মেরামত করে সচল করা হয়।
গত ২৪ ফেব্রুয়ারি অ্যাম্বুলেন্সটির ইঞ্জিন বিকল হয়ে পড়ে। সেটি মেরামত করতে এবং নতুন ইঞ্জিন ও নতুন গিয়ার বক্স সংযুক্ত করতে তিন লাখ টাকার প্রয়োজন। হাসপাতালে এত অর্থ বরাদ্দ না থাকায় সেটি বিকল্পভাবে ৩০ হাজার টাকায় মেরামত করা হয়।

গত শুক্রবার শেরপুর ওয়ার্কশপ থেকে অ্যাম্বুলেন্সটি হাসপাতালে নিয়ে আসার সময় সড়কে ফের বিকল হয়ে পড়ে। সেটি আবার মেরামতের জন্য ১২ হাজার টাকা ব্যয়ে আরও দুটি যন্ত্রাংশ সংযোজনের চেষ্টা চলছে। ২৫ দিন ধরে একমাত্র অ্যাম্বুলেন্স বিকল থাকায় স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আসা রোগীরা দুর্ভোগে পড়েছে।

অ্যাম্বুলেন্সটির চালক আসাদুজ্জামান সেলিম বলেন, অ্যাম্বুলেন্সটি পূর্ণাঙ্গভাবে মেরামত করতে প্রায় তিন লাখ টাকা দরকার। এত টাকা বরাদ্দ নেই। এ কারণে বিকল্পভাবে ৩০ হাজার টাকা ব্যয় করে মেরামত করা হয়। কিন্তু নিয়ে আসার পথে সেটি আবার বিকল হয়ে যায়। এ কারণে অ্যাম্বুলেন্সটি আবার মেরামত করতে ওয়ার্কশপে নেওয়া হয়েছে।
জানতে চাইলে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা মাহমুদ হাসান বলেন, নতুন একটি অ্যাম্বুলেন্স পেতে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে একাধিকবার লিখিত আবেদন করা হয়েছে।