ছাত্রলীগ নেতা হত্যায় সংগঠনের নেতা গ্রেপ্তার

দিয়াজ ইরফান চৌধুরী হত্যা
দিয়াজ ইরফান চৌধুরী হত্যা

ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সহসম্পাদক দিয়াজ ইরফান চৌধুরী হত্যা মামলার আসামি ছাত্রলীগের এক নেতাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাঁর নাম মোহাম্মদ আরমান। তিনি ছাত্রলীগের চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক। এই মামলার প্রধান আসামি বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের বিলুপ্ত কমিটির সভাপতি আলমগীর টিপুর ভাই তিনি।

আজ বুধবার দুপুরে নগরের চান্দগাঁও থানার সামনে থেকে আরমানকে গ্রেপ্তার করে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। পরে বিকেলে তাঁকে আদালতে পাঠানো হয়। আদালত তাঁকে চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।

মামলাটির তদারককারী কর্মকর্তা সিআইডি চট্টগ্রাম অঞ্চলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. কুতুব উদ্দিন প্রথম আলোকে বলেন, গোপন তথ্যের ভিত্তিতে মামলার এজাহারভুক্ত আসামি আরমানকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আসামি ঘটনার বিষয়ে মুখ খোলেননি। তাঁকে আরও জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আদালতে কয়েক দিনের মধ্যে রিমান্ডের আবেদন করা হবে।

২০১৬ সালের ২০ নভেম্বর বিশ্ববিদ্যালয়ের ২ নম্বর গেট এলাকার ভাড়া বাসা থেকে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সহসম্পাদক দিয়াজ ইরফান চৌধুরীর ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। দিয়াজের মরদেহের প্রথম ময়নাতদন্ত হয় ২০১৬ সালের ২১ নভেম্বর। দুই দিন পর পুলিশ জানায়, তাঁকে হত্যা করার আলামত ময়নাতদন্তের প্রতিবেদনে মেলেনি। এরপর ছেলেকে হত্যা করা হয়েছে, এমন অভিযোগে ওই বছরের ২৪ নভেম্বর জাহেদা আমিন বাদী হয়ে ছাত্রলীগের বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সাবেক সভাপতি আলমগীর টিপু, সাবেক সহকারী প্রক্টর আনোয়ার হোসেন চৌধুরীসহ ১০ জনকে আসামি করে আদালতে মামলা করেন। পরে একই বছরের ৬ ডিসেম্বর লাশ কবর থেকে তুলে পুনরায় ময়নাতদন্তের নির্দেশ দেন আদালত। ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, দিয়াজকে শ্বাস রোধ করে হত্যার আলামত পাওয়া গেছে।

এ দিকে ছেলে হত্যার বিচারের দাবিতে একাধিকবার কর্মসূচি পালন করেছেন মা জাহেদা আমিন। গত বছরের ৩০ অক্টোবর তিনি সন্তান হত্যার বিচার চেয়ে ক্যাম্পাসে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন। এর আগে ২০১৭ সালের ২৮ নভেম্বর থেকে ১ ডিসেম্বর পর্যন্ত অনশন করার সময় অসুস্থ হয়ে পড়েন তিনি। সর্বশেষ গত মাসে বিশ্ববিদ্যালয়ের তৃতীয় শ্রেণি কর্মচারী সমিতির বার্ষিক ক্রীড়া অনুষ্ঠানে কেন্দ্রীয় খেলার মাঠে লুটিয়ে পড়ে প্রতিবাদ জানান জাহেদা আমিন চৌধুরী। ক্রীড়া প্রতিযোগিতা উপলক্ষে বের করা স্যুভেনিরে দিয়াজ হত্যা মামলার প্রধান আসামি মোহাম্মদ আলমগীর টিপুর ছবিসংবলিত শুভেচ্ছা বাণী দেখে মেনে নিতে পারেননি তিনি। জাহেদা আমিনও বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মচারী। পরে মাঠে লুটিয়ে পড়ে স্রষ্টার কাছে বিচার চান তিনি।

দিয়াজের বড় বোন জুবাঈদা ছরওয়ার চৌধুরী প্রথম আলোকে বলেন, এত দিন পর পুলিশ একজন আসামিকে ধরল। জিজ্ঞাসাবাদে তাঁর কাছ থেকে যাতে খুনের ঘটনা বের করা হয়। কোনো চাপে পড়ে যাতে হেলাফেলা করা না হয়।