ঘুষের মামলায় নাজমুল হুদা দম্পতির আগাম জামিন

নাজমুল হুদা
নাজমুল হুদা

ঘুষ নেওয়ার অভিযোগে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) করা একটি মামলায় সাবেক মন্ত্রী নাজমুল হুদা ও তার স্ত্রী সিগমা হুদা আট সপ্তাহের আগাম জামিন পেয়েছেন। বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি কে এম হাফিজুল আলমের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ আগাম জামিন চেয়ে তাঁদের করা এক আবেদনের শুনানি নিয়ে বুধবার এই আদেশ দেন।

রাজধানীর মতিঝিল থানায় ২০০৮ সালের ১৮ জুন নাজমুল হুদা ও সিগমা হুদার বিরুদ্ধে ওই মামলাটি করে দুদক। এই মামলায় বুধবার হাইকোর্টে হাজির হয়ে তাঁরা আইনজীবীর মাধ্যমে আগাম জামিনের আবেদন জানান। আদালতে হুদা দম্পতির পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী কাজী সাজাওয়ার হোসেন। দুদকের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী খুরশীদ আলম খান। রাষ্ট্রপক্ষে শুনানিতে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল কে এম জাহিদ সারোয়ার।

পরে খুরশীদ আলম খান প্রথম আলোকে বলেন, তদন্ত পর্যায়ে থাকা ওই মামলায় নাজমুল হুদা ও সিগমা হুদাকে আট সপ্তাহের আগাম দিয়েছেন হাইকোর্ট। এই মেয়াদ যেদিন শেষ হবে সেদিন ঢাকার জ্যেষ্ঠ বিশেষ জজ আদালতে তাঁদের আত্মসমর্পণ করতে বলা হয়েছে। আত্মসমর্পণ করে তাঁরা জামিন চাইলে, আইন অনুসারে বিচারিক আদালতকে তা বিবেচনা করতে বলা হয়েছে।

ওই মামলার এজাহারে বলা হয়, যমুনা সেতুর পরিচালনা ও রক্ষণাবেক্ষণ কাজের জন্য ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মার্গানেট ওয়ান লিমিটেডকে নিযুক্ত করা হয়। সাবেক যোগাযোগমন্ত্রী ব্যারিস্টার নাজমুল হুদা ওই ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে প্রতি মাসে ৫০ হাজার টাকা উৎকোচ দাবি করেন। দাবি করা টাকা তাঁর স্ত্রীর মালিকানায় পরিচালিত ‘খবরের অন্তরালে’ পত্রিকার হিসাবে জমা দেওয়ার জন্য বলেন। মাসিক কিস্তিতে দাবি করা টাকা না দেওয়া হলে ওই প্রতিষ্ঠানের ঠিকাদারি নিয়োগ বাতিল করে কালো তালিকাভুক্ত করার হুমকি দেন। অবশেষে নিরুপায় হয়ে ব্যবসায়িক ক্ষতি বিবেচনা করে মাসে ২৫ হাজার টাকা উৎকোচ দেওয়ার প্রস্তাব করলে নাজমুল হুদা দম্পতি তাতে রাজি হন। এরপর তাঁরা ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মার্গানেট ওয়ান লিমিটেডের চেয়ারম্যান, ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও পরিচালকের কাছ থেকে ২০০৪ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর থেকে ২০০৬ সালের ১৮ অক্টোবর পর্যন্ত বিভিন্ন সময়ে চেকের মাধ্যমে ৬ লাখ টাকা ঘুষ নেন। তবে ওই মামলাটি বাতিল চেয়ে হাইকোর্টে আবেদন করেন নাজমুল হুদা, যার চূড়ান্ত শুনানি শেষে ২০১৬ সালের ২৩ মার্চ হাইকোর্ট মামলাটি বাতিল ঘোষণা করেন। এর বিরুদ্ধে দুদক আপিল বিভাগে আবেদন করে, যার শুনানি নিয়ে ২০১৭ সালের ৭ জুন আপিল বিভাগ হাইকোর্টের সিদ্ধান্ত বাতিল ঘোষণা করেন। ফলে মামলাটি সচল হয়, যা তদন্তাধীন পর্যায়ে রয়েছে।