সড়কে হত্যা বন্ধে আইন প্রয়োগ চায় টিআইবি

ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের (টিআইবি) সদস্যদের বার্ষিক সভায় বক্তব্য দিচ্ছেন ইফতেখারুজ্জামান। ছবি: প্রথম আলো
ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের (টিআইবি) সদস্যদের বার্ষিক সভায় বক্তব্য দিচ্ছেন ইফতেখারুজ্জামান। ছবি: প্রথম আলো

সড়কে হত্যা বন্ধে যথাযথ আইন তৈরি করে তার কঠোর বাস্তবায়ন করার দাবি জানিয়েছে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)। টিআইবি বলছে, সড়কে মৃত্যুর মিছিল বন্ধ করার জন্য উপযুক্ত আইন তৈরি করতে হবে। পাশাপাশি স্বার্থের দ্বন্দ্বযুক্ত রাজনীতিবিদ ও ব্যবসায়ীদের বাদ দিয়ে এই খাতে বিশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণ করার জন্য নাগরিক সমাজের অংশগ্রহণমূলক অন্তর্ভুক্তি নিশ্চিত করতে হবে।

আজ বৃহস্পতিবার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে টিআইবি এ কথা বলেছে।

সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনসহ পরবর্তী অন্যান্য নির্বাচনে বহুমুখী আচরণবিধি লঙ্ঘনের ঘটনা ঘটেছে। নানাবিধ অনিয়মের ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত হয়নি। উত্তর সিটি করপোরেশন ও চলমান উপজেলা নির্বাচনে ভোটার উপস্থিতি আশঙ্কাজনকভাবে কম হয়েছে।

ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের ৩২ ধারা বাতিলের দাবি জানিয়ে টিআইবি বলছে, বৈদেশিক অনুদান (স্বেচ্ছাসেবামূলক কার্যক্রম) রেগুলেশন আইনের ১৪ ধারা বাতিল জরুরি। কালো টাকা বৈধ করার সুযোগ বাতিল চেয়ে টিআইবি বলছে, আর্থিক খাতে আস্থা ফিরিয়ে আনার উদ্যোগ নেওয়া জরুরি। শক্তিশালী নির্বাচন কমিশন এবং অবাধ ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনী প্রক্রিয়া নিশ্চিত করতে হবে।

সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, দুর্নীতির বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানোর সম্মিলিত প্রত্যয় পুনর্ব্যক্ত করার মধ্য দিয়ে শেষ হয়েছে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি) সদস্যদের বার্ষিক সভা। গণতন্ত্র, সুশাসন ও মানবাধিকার প্রতিষ্ঠা এবং সমাজ ও রাষ্ট্রের বিভিন্ন ক্ষেত্রে দুর্নীতি প্রতিরোধে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) সহ জাতীয় শুদ্ধাচার প্রতিষ্ঠানসমূহের কার্যকর, স্বাধীন ও নিরপেক্ষ ভূমিকা পালনের দাবি জানিয়েছেন টিআইবি’র সদস্যরা।

বৃহস্পতিবার বিকেলে টিআইবি’র ধানমন্ডির কার্যালয়ে এই সভায় সদস্যরা জাতীয় ও স্থানীয় পর্যায়ে দুর্নীতি প্রতিরোধে জনগণকে সম্পৃক্ত করে দুর্নীতিবিরোধী সামাজিক আন্দোলন আরও জোরদারের অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করেন। টিআইবি’র নির্বাহী পরিচালক ইফতেখারুজ্জামানের সঞ্চালনায় এবং সাধারণ পর্ষদে টিআইবি’র সদস্যদের প্রতিনিধি অধ্যাপক এ কে এম ফজলুল হকের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এ সভায় মোট ৩৫ জন সদস্য অংশগ্রহণ করেন।

টিআইবি পরিচালিত গবেষণা, পরামর্শ ও প্রচারণাসহ বিভিন্ন কার্যক্রমের তথ্য উপস্থাপন করেন আউটরিচ অ্যান্ড কমিউনিকেশন বিভাগের পরিচালক শেখ মনজুর-ই-আলম। আর নিরীক্ষাকৃত অর্থনৈতিক প্রতিবেদন উপস্থাপন করেন অর্থ ও প্রশাসন বিভাগের পরিচালক আব্দুল আহাদ। এরপর মুক্ত আলোচনায় অংশ নিয়ে সদস্যদের বিভিন্ন জিজ্ঞাসার উত্তর দেন টিআইবি’র নির্বাহী পরিচালক ইফতেখারুজ্জামান।

সভা শেষে ১০ দফা দাবি উত্থাপন করে একটি ঘোষণাপত্র প্রকাশ করা হয়। ঘোষণাপত্রে দুর্নীতিকে সর্বান্তকরণে ঘৃণা করার সম্মিলিত অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করে ব্যক্তিগত এবং পেশাগত জীবনে দুর্নীতি থেকে বিরত থাকার অঙ্গীকারের পাশাপাশি প্রত্যেকে নিজ অবস্থান অনুযায়ী একক ও সমষ্টিগতভাবে দুর্নীতিকে কার্যকরভাবে প্রতিরোধের চেষ্টাসহ ন্যায্য, সুশাসিত ও গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠায় একযোগে কাজ করতে সচেষ্ট থাকার অঙ্গীকার করা হয়।

উল্লেখ্য, বাংলাদেশে দুর্নীতিবিরোধী সামাজিক আন্দোলনের কার্যক্রমে জনসম্পৃক্ততা বৃদ্ধিতে আগ্রহী বিভিন্ন পেশাজীবী ও সাধারণ নাগরিকদের টিআইবি সদস্যভুক্ত করে আসছে। টিআইবি’র বর্তমান সদস্য সংখ্যা ২১৩ জন ।