গ্রেপ্তারের পর দুই আসামি 'বন্দুকযুদ্ধে' নিহত

কক্সবাজারের টেকনাফে গ্রেপ্তার হওয়া দুই আসামি পুলিশের সঙ্গে কথিত বন্দুকযুদ্ধে নিহত হয়েছেন। নিহত ব্যক্তিরা স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের তালিকাভুক্ত ইয়াবা ব্যবসায়ী বলে পুলিশের ভাষ্য।

গতকাল বৃহস্পতিবার দিবাগত রাতে টেকনাফ সদর ইউনিয়নের রাজারছড়া পাহাড়ি এলাকায় এই বন্দুকযুদ্ধের ঘটনা ঘটে। টেকনাফ মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) প্রদীপ কুমার দাস প্রথম আলোকে এই তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।

নিহত দুই ব্যক্তি হলেন নুর মোহাম্মদ ওরফে মংগ্রী (৪০) ও নুরুল আমিন (৩৫)। নুর মোহাম্মদ টেকনাফ সদর ইউনিয়নের নাজিরপাড়া এলাকার জাহার মিয়ার ছেলে। নুরুল আমিন টেকনাফ পৌরসভার জালিয়াপাড়া গ্রামের আব্দুর শুক্কুরের ছেলে।

পুলিশের দাবি, নিহত দুজনই স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের তালিকাভুক্ত ইয়াবা ব্যবসায়ী ও বিকাশ এজেন্ট। ঘটনাস্থল থেকে ৮টি দেশি বন্দুক, ২০ হাজার ইয়াবা বড়ি ও ২০টি তাজা কার্তুজ উদ্ধার করা হয়।

পুলিশ বলছে, নুর মোহাম্মদের বিরুদ্ধে মাদক, হত্যা, পুলিশের ওপর হামলা, সাংবাদিকের ওপর হামলা, মানি লন্ডারিং, বিশেষ ক্ষমতা আইনসহ বিভিন্ন অভিযোগে ১০টি মামলা রয়েছে। আর নুরুল আমিনের বিরুদ্ধে হত্যা, মানি লন্ডারিং, বিশেষ ক্ষমতা আইনের ৩টি মামলা রয়েছে।

টেকনাফ মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) প্রদীপ কুমার দাস বলেন, গতকাল রাতে নুর মোহাম্মদ ও নুরুল আমিনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। পরে তাঁদের নিয়ে গভীর রাতে অভিযানে যায় থানা-পুলিশের একটি বিশেষ দল। টেকনাফ সদর ইউনিয়নের রাজারছড়া পাহাড়ি এলাকার কাছাকাছি পৌঁছালে আসামিদের ছিনিয়ে নিতে একদল ইয়াবা ব্যবসায়ী পুলিশকে লক্ষ করে গুলি ছোড়ে। এতে পুলিশের একজন সহকারী উপপরিদর্শকসহ পাঁচজন আহত হন। আত্মরক্ষার্থে পুলিশও পাল্টা গুলি ছোড়ে। গ্রেপ্তার হওয়া আসামিরা পালিয়ে যেতে চাইলে দুই পক্ষের বন্দুকযুদ্ধের মাঝে পড়ে যান। তাঁরা গুলিবিদ্ধ হয়ে আহত হন। একপর্যায়ে ইয়াবা কারবারিরা পিছু হটে পার্শ্ববর্তী পাহাড়ের দিকে পালিয়ে যান। পরে ঘটনাস্থল থেকে গুলিবিদ্ধ দুই আসামি ও পুলিশের পাঁচ সদস্যকে উদ্ধার করা হয়। তাঁদের দ্রুত উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হয়। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক সবাইকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেন। পরে দুই আসামিকে কক্সবাজারে নেওয়ার পথে তাঁরা মারা যান।

উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক শোভন দাশ প্রথম আলোকে বলেন, নুর মোহাম্মদের শরীরের তিনটি ও নুরুল আমিনের শরীরে চারটি গুলির জখম দেখা গেছে।

ওসি বলেন, পুলিশের আহত পাঁচ সদস্যকে এখন কক্সবাজার সদর হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। আর নিহত দুই আসামির ময়নাতদন্তের জন্য তাঁদের লাশ কক্সবাজার সদর হাসপাতালে মর্গে রাখা হয়েছে। এ ঘটনায় মামলা করার প্রক্রিয়া চলছে।

গত বছরের ৪ মে দেশব্যাপী আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর বিশেষ মাদক বিরোধী অভিযান শুরু হয়। এ নিয়ে র‍্যাব-পুলিশ-বিজিবির সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধ এবং এলাকায় মাদকের প্রভাব বিস্তারের ঘটনায় কক্সবাজার জেলায় ৬৮ জন নিহত হয়েছেন। এর মধ্যে ৮ জন রোহিঙ্গাসহ শুধু টেকনাফে ৪৮ ও উখিয়ায় ২ জন নিহত হয়েছেন।