নীতিমালা ভেঙে ডাক্তার গড়ার কারবার

>

*অধিকাংশ মেডিকেল কলেজ শর্ত না মেনেও অনুমোদন পাচ্ছে
*নজরদারি কম, দুর্নীতির অভিযোগ

দেশের বেসরকারি মেডিকেল কলেজের প্রায় সব কটি চলছে কমবেশি শর্ত অমান্য করে। বেসরকারি মেডিকেল কলেজ পরিদর্শনের কাজে যুক্ত স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা তেমনটাই বলছেন।

কলেজগুলোর শর্তমাফিক অবকাঠামো নেই, কারও হয়তো নিজস্ব জমি নেই, অনেকেরই শিক্ষার্থীদের হাতে–কলমে শেখানোর জন্য উপযুক্ত হাসপাতাল বা পর্যাপ্ত রোগী নেই। শিক্ষার মান নিয়ে প্রশ্ন উঠছে, অথচ কলেজের সংখ্যা বেড়ে চলেছে।

আওয়ামী লীগের গত দুই আমলে বছরে গড়ে তিনটি করে বেসরকারি মেডিকেল কলেজের অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। দেশে এখন বেসরকারি মেডিকেল কলেজের সংখ্যা ৬৯। মোট ৩৬টির মালিকানা বা পরিচালনায় আছে সরকারি দলের নেতা অথবা দলসমর্থিত চিকিৎসক বা ব্যবসায়ী। অতীতেও ক্ষমতাসীন দলসমর্থিত উদ্যোগ প্রাধান্য পেয়েছে।

প্রথম আলোর প্রতিবেদক ও প্রতিনিধিরা ঢাকা, খুলনা, রাজশাহী, শরীয়তপুর, চট্টগ্রাম ও গাজীপুর জেলার ছয়টি কলেজ ঘুরে দেখেছেন। ১৩টি কলেজের সরকারি পরিদর্শন প্রতিবেদন হাতে এসেছে। অনুসন্ধান আরও বলছে, বেসরকারি মেডিকেল কলেজের ওপর স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের নজরদারি কম। তথ্য চাইলে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় বলেছে, নেই।

রাজশাহী শহরের খড়খড়ি এলাকায় শাহ মখদুম মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল। ৭ মার্চ দুপুর সাড়ে ১২টা। একটি ঘরে জনা কুড়ি ছাত্রছাত্রী বাদে ক্যাম্পাস মোটামুটি ফাঁকা। হাসপাতালের নির্মাণাধীন বহির্বিভাগটি সুনসান। শয্যাগুলো খালি। কলেজটি চালু হয়েছে পাঁচ বছর আগে, ২০১৪-১৫ শিক্ষাবর্ষে। অধ্যক্ষ নেই, ভারপ্রাপ্ত হয়ে কলেজ চালাচ্ছেন উপাধ্যক্ষ।

ঘণ্টাখানেক পর প্রথম আলোর রাজশাহী প্রতিবেদক বহির্বিভাগে শ্বাসকষ্টে ভোগা একজন রোগীর দেখা পান। তাঁর সঙ্গী বলেন, অনেকক্ষণ এসেছেন, ডাক্তার পাননি।

গত সপ্তাহে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের একটি পরিদর্শক দল এ কলেজ দেখতে গিয়েছিল। ওই দলের একজন সদস্য প্রথম আলোকে বলেন, কলেজটিতে অনুমোদিত শিক্ষার্থী সংখ্যার অনুপাতে হাসপাতালের শয্যা বা রোগী নেই। সেই অনুপাতে শিক্ষকও কম।

এসবই বেসরকারি মেডিকেল কলেজ স্থাপন ও পরিচালনা নীতিমালার বরখেলাপ। স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণমন্ত্রী জাহিদ মালেক প্রথম আলোকে বলেন, ‘নীতিমালার চুলচেরা বিশ্লেষণ করলে দেখা যায়, বেশির ভাগ প্রতিষ্ঠান শর্ত মানছে না। ইতিমধ্যে কিছু প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিয়েছি। ভবিষ্যতে আমরা আরও কঠোর হব।’

সব বেসরকারি কলেজ যে শিক্ষার্থী পায়, এমন না। রাজশাহীর কলেজটির কর্তৃপক্ষ বলছে, এখন তাদের মোট ২০০ শিক্ষার্থী আছেন। এই প্রথম ছয়জন শেষ বর্ষের পরীক্ষা দিয়েছেন। এযাবৎ কোনো বছরই অনুমোদিত ৫০ জন শিক্ষার্থী ভর্তি হননি। এবার ঢুকেছেন মাত্র ১৮ জন। তবে লাভের হাতছানি বড়।

বেসরকারি মেডিকেল কলেজগুলোর মোট আসন ৬ হাজার ২৩১। এ বছর বিদেশি ভর্তি হয়েছেন প্রায় এক হাজার। সরকার-নির্ধারিত ভর্তি ফি ১৮ লাখ টাকা। বেতন ও অন্যান্য নিয়মিত খরচও নির্ধারিত। সব মিলিয়ে পাঁচ বছরে একজন শিক্ষার্থী কলেজকে দেবেন ২২ লাখ ৮০ হাজার টাকা। বিদেশি শিক্ষার্থীরা এর জন্য দেবেন ৩৬ লাখ টাকা। এর বাইরে আছে পরীক্ষার ফি ও হোস্টেল খরচ, যা প্রতিষ্ঠান ঠিক করবে।

চিকিৎসকদের সংগঠন বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশনের সাবেক সভাপতি অধ্যাপক রশীদ-ই-মাহবুব প্রথম আলোকে বলেন, ‘বেসরকারি কলেজগুলো এই আয়কে গুরুত্ব দেয়, চিকিৎসা শিক্ষাকে নয়।’

দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী মো. এনামুর রহমান বাংলাদেশ প্রাইভেট মেডিকেল কলেজ অ্যাসোসিয়েশনের মহাসচিব। তাঁর কথা, ‘কিছু মেডিকেল কলেজের অবস্থা খুবই খারাপ। সম্প্রতি আমরা সদস্যদের বলেছি, সকলকেই নীতিমালার সব শর্ত মানতে হবে। মান উন্নত করতে হবে। দু-একটি প্রতিষ্ঠানের কারণে পুরো খাতের বদনাম হচ্ছে।’

শর্তের বরখেলাপ

নীতিমালা অনুযায়ী, ৫০ আসনের একটি বেসরকারি মেডিকেল কলেজের সঙ্গে অন্তত ২৫০ শয্যার একটি আধুনিক হাসপাতাল থাকতে হবে। শিক্ষার্থী ভর্তির দুই বছর আগে থেকে হাসপাতালটি চালু থাকতে হবে। ৭০ শতাংশ শয্যায় নিয়মিত রোগী ভর্তি থাকবে। হাসপাতাল ও কলেজ হবে একই ক্যাম্পাসে। এগুলোর আয়তনও নির্দিষ্ট করা আছে। কলেজের আসন বরাদ্দ বাড়লে সেই অনুপাতে হাসপাতাল বড় করতে হবে।

রাজশাহীতে দেখা কলেজটির হাসপাতালে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিদর্শক দল ২৫০ শয্যার চেয়ে কম পেয়েছে। ৭ মার্চ দুপুরে প্রথম আলোর রাজশাহী প্রতিবেদক সেখানে শয্যায় কোনো রোগী দেখেননি। প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মনিরুজ্জামান বলেছিলেন, ভর্তি সাতজন রোগী বিদ্যুৎ না থাকায় বাইরে গেছেন। প্রতিবেদক পরে সন্ধ্যায় গিয়ে চারজন রোগীকে দেখতে পান।

হাসপাতালে রোগী না থাকা আর শিক্ষকস্বল্পতা একটি সাধারণ সমস্যা। পরিদর্শন কর্তৃপক্ষের সূত্র বলছে, অনেক হাসপাতাল আদতে বিশেষজ্ঞ ক্লিনিকের মতো, যেখানে বিকেলে রোগী দেখার ভিড় হয়। আরেক সমস্যা, ভবনের কাঙ্ক্ষিত আয়তনসহ অবকাঠামো এবং কলেজ ও হাসপাতালের অভিন্ন ক্যাম্পাস না থাকা।

২০১২ সালে চালু হওয়া খুলনা সিটি মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল এক কিলোমিটার দূরত্বে ছড়িয়ে আছে। ময়লাপোতার মোড়ে ১৮ তলা যে ভবনটি আছে, সেটি হাসপাতাল ভবন। ৫ মার্চ এই ভবনে ঘুরে কোনো শিক্ষার্থী চোখে পড়েনি।

অভ্যর্থনাকারীর কাছে সাংবাদিক পরিচয় দিয়ে অধ্যক্ষের সঙ্গে দেখা করতে চাইলে তিনি পাঁচতলায় পাঠান। সেখানে এক কর্মচারী বলেন অপেক্ষা করতে। আধা ঘণ্টা পরে তিনি বলেন, অধ্যক্ষ চলে গেছেন। জানা যায়, কলেজ ভবনটি রয়েল হোটেলের কাছে। পরদিন তাঁর নাগাল পেলে কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক পরিতোষ পাল বলেন, তিনি নতুন এসেছেন, প্রতিষ্ঠানের খুঁটিনাটি তথ্য জানা নেই।

হাসপাতাল দূরে হলে বা সেখানে পর্যাপ্ত রোগী না থাকলে শিক্ষার্থীদের অনুশীলনের সমস্যা হয়। নীতিমালায় বিষয় ও শিক্ষার্থীর মাথা গুনে শিক্ষকের সংখ্যা বেঁধে দেওয়া আছে। শিখন ভালো হওয়ার জন্য ৫০ আসনের একটি কলেজে কমপক্ষে ১৭৭ জন শিক্ষক দরকার।

দেশের প্রথম বেসরকারি মেডিকেল কলেজটি রাজধানীর ধানমন্ডি এলাকায়। নাম বাংলাদেশ মেডিকেল কলেজ। ১৯৮৫ সালে প্রতিষ্ঠিত এ কলেজের সুনাম আছে। এর হাসপাতাল নিজস্ব ভবনে। তবে ৩৪ বছর ধরে কলেজ চলছে ভাড়া বাড়িতেই।

অধিদপ্তরের পরিদর্শন কর্মকর্তাদের বিবেচনায়, ৬৯টি কলেজের মধ্যে বাংলাদেশ মেডিকেল কলেজসহ ১৬টি মানসম্পন্ন। ১০টিই ঢাকার বাইরে। এগুলোর হাসপাতালে রোগী থাকে এবং শিক্ষকের সংখ্যাও মোটামুটি ভালো।

তবে ভালো কলেজগুলোরও জমি-ভবনের আয়তন অথবা ভাড়া বাড়ির সমস্যা আছে। অধিদপ্তরের কাছ থেকে যে ১৩টি মেডিকেল কলেজের পরিদর্শন প্রতিবেদন পাওয়া গেছে, সেগুলোর ১১টিই এমন।

পেছনে প্রভাবশালীরা

গাজীপুর চৌরাস্তা থেকে পশ্চিমে ইটাহাটায় ঢাকা-টাঙ্গাইল সড়কের বাঁ পাশে সিটি মেডিকেল কলেজের ভাড়া করা পাঁচতলা ভবন। আশপাশের দোকানিরা বলছেন, ভবনটি তৈরি হয়েছিল পোশাক কারখানার জন্য।

প্রতি তলায় সরু বারান্দার দুপাশে ছোট ছোট ঘর। এসব ঘরে শিক্ষকেরা বসেন, ভবিষ্যতের চিকিৎসকেরা ক্লাসও করেন। কলেজের অধ্যক্ষ ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) অধ্যাপক মো. ইউনুস আলী মণ্ডল কলেজটি ঘুরিয়ে দেখিয়ে বললেন, প্রতিষ্ঠানটি মানসম্পন্ন।

কলেজের হাসপাতাল বেশ দূরে। হাসপাতালের ব্যবস্থাপক মো. আবদুল হামিদ বলেন, ওই দিন রোগী ভর্তি ছিল ১৮ জন। নীতিমালার শর্ত মোতাবেক সেখানে কমপক্ষে ১৭৫ জন রোগী থাকার কথা। কিন্তু অত শয্যা ফেলার জায়গা নেই।

প্রতিষ্ঠানের চেয়ারম্যান সাংসদ মহীউদ্দীন খান আলমগীর। হাসপাতালে তাঁর অফিস ঘরের বাইরে নামফলক ঝুলছে। কলেজটি তিনি কিনে নিয়েছেন। একজন শিক্ষক প্রথম আলোকে বলেন, ‘গার্মেন্টস বিক্রি হলে মেডিকেল কলেজ বিক্রি হবে না কেন? দুটোই এখন ব্যবসা।’

সরকারি পরিদর্শন প্রতিবেদন বলছে, ২০১০ সাল থেকে কলেজটি তিনবার ক্যাম্পাস বদলিয়েছে। নিজস্ব জমি নেই। পরিদর্শনের দিন হাসপাতালে মোট ৫১ জন রোগী ছিল, যাদের সেদিনই অথবা তার আগের দিন ভর্তি করা হয়। অধিকাংশ রোগীর সমস্যা ছিল মাথা, কোমর বা পেটে ব্যথা, যার জন্য ভর্তি নিষ্প্রয়োজন। কলেজের আসনসংখ্যা ৮০। মোট শিক্ষক ১০৫, ওই দিন ছিলেন ১৬ জন।

পরিদর্শন প্রতিবেদনে আছে, প্রায় সব শর্ত অমান্য করায় এ প্রতিষ্ঠানের অনুমোদন স্থগিত করা হয়েছিল। ফের পরিদর্শনের জন্য ওপরতলার চাপ আসে। বিশেষ পরিদর্শন কমিটি গঠিত হয়। প্রতিবেদনটি তাদের।

রাজনৈতিক পালাবদলের সঙ্গে মেডিকেল কলেজের মালিকানা বা পৃষ্ঠপোষক বদলের নজির আছে। ৩৬টি বেসরকারি মেডিকেল কলেজের উদ্যোক্তা ক্ষমতাসীন সরকারপন্থী। তাঁদের মধ্যে একজন মন্ত্রী, দুজন প্রতিমন্ত্রী ও দুজন সাবেক মন্ত্রী আছেন। আছেন একাধিক সাংসদ, চিকিৎসক নেতা ও ব্যবসায়ী।

বিএনপিপন্থী এবং জামায়াতে ইসলামীপন্থী চিকিৎসক বা ব্যবসায়ীরা ছয়টি করে মেডিকেল কলেজের প্রতিষ্ঠাতা। জাতীয় পার্টির নেতারা চালাচ্ছেন দুটি মেডিকেল কলেজ। বাদবাকি ১৯টি মেডিকেল কলেজের পরিচালকেরা সরাসরি কোনো দলের সঙ্গে যুক্ত না।

নজরদারি ও দুর্নীতি

কলেজগুলো নজরদারির মূল দায়িত্ব স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের চিকিৎসা শিক্ষা ও স্বাস্থ্য জনশক্তি উন্নয়নবিষয়ক পরিচালকের দপ্তরের। এখানকার একাধিক কর্মকর্তা ও কর্মচারীর বিরুদ্ধে অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) তদন্ত চলছে।

প্রথম আলোর অনুসন্ধানের সূচনায় দপ্তরটির পরিচালক ছিলেন অধ্যাপক এম এ রশিদ। দুর্নীতির অভিযোগ ওঠার পর সম্প্রতি তিনি বদলি হয়েছেন। প্রথম আলোকে তিনি বলেছিলেন, তাঁদের পরিদর্শন প্রতিবেদনের ভিত্তিতে নতুন কলেজের অনুমোদনসহ বিভিন্ন সিদ্ধান্ত নেয় মন্ত্রণালয়ের একটি কমিটি। কমিটির সভাপতি স্বাস্থ্যমন্ত্রী। সদস্যদের মধ্যে আছেন চিকিৎসক নেতারা।

কলেজ স্থাপন, আসনসংখ্যা বৃদ্ধি, নবায়ন বা কোর্স অনুমোদন-সংক্রান্ত একাধিক সভার কার্যবিবরণীতে (২০১২-২০১৩) দেখা যায়, মন্ত্রণালয় শর্ত না মানা কলেজগুলোও অনুমোদন দিয়েছিল।

২০১৮ সালের ১২ ফেব্রুয়ারি এই প্রতিবেদক তথ্য অধিকার আইনে সব কটি কলেজের পরিদর্শন প্রতিবেদন চেয়ে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য কর্মকর্তা বরাবর আবেদন করেছিলেন। সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা ৯০ দিন পর চিঠিতে লেখেন, ‘বেসরকারি মেডিকেল কলেজ–সংক্রান্ত পরিদর্শন প্রতিবেদন অত্র বিভাগে সংরক্ষিত নেই।’

অধ্যাপক রশীদ-ই-মাহবুব বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক সহ-উপাচার্যও ছিলেন। তাঁর সাফ কথা, ‘এভাবে চলতে পারে না, চলতে দেওয়া উচিত না।’ তিনি বলছেন, সরকারকে খারাপ মেডিকেল কলেজগুলো চিহ্নিত করে সেগুলোর অবকাঠামো উন্নয়নে সাহায্য করতে হবে। আর বেশি দুরবস্থার কলেজগুলোকে অন্য কলেজের সঙ্গে মিলিয়ে দিতে হবে।

(প্রতিবেদন তৈরিতে সহায়তা করেছেন প্রথম আলোর রাজশাহীর নিজস্ব প্রতিবেদক আবুল কালাম মুহম্মদ আজাদ)