যক্ষ্মা নির্মূলে মাল্টিসেক্টর পলিসি ডায়ালগ

গতকাল রোববার রাজধানীর হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে আয়োজিত সংলাপে বক্তারা। ছবি: সংগৃহীত
গতকাল রোববার রাজধানীর হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে আয়োজিত সংলাপে বক্তারা। ছবি: সংগৃহীত

বিশ্ব যক্ষ্মা দিবস পালন উপলক্ষে গতকাল রোববার জাতীয় পর্যায়ের একটি মাল্টিসেক্টর পলিসি ডায়ালগের আয়োজন করে জাতীয় যক্ষ্মা নিয়ন্ত্রণ কর্মসূচি (এনটিপি)। যুক্তরাষ্ট্রের আন্তর্জাতিক সাহায্য সংস্থা ইএসআইডি ও চ্যালেঞ্জ টিবি বাংলাদেশ (সিটিবি) প্রজেক্টের সহযোগিতায় এই আয়োজন করা হয়।

রাজধানীর হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে আয়োজিত এই সংলাপে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক ব্যক্তিত্ব, নীতিনির্ধারকবৃন্দ, বিভিন্ন সহযোগী সংস্থা, সুশীল সমাজের প্রতিনিধিসহ শতাধিক অংশগ্রহণকারী অংশ নেন। ওই সংলাপে ২০১৮ সালে অনুষ্ঠিত জাতিসংঘের উচ্চপর্যায়ের বৈঠকে ঘোষিত প্রতিশ্রুতি পর্যালোচনা করা হয়।

প্রতিবছর বাংলাদেশ সরকার বৈশ্বিক আন্দোলনের সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করে বিশ্ব যক্ষ্মা দিবস পালন করে থাকে। গতকাল ছিল বিশ্ব যক্ষ্মা দিবস। দিবসটির এ বছরের প্রতিপাদ্য ‘ইটস টাইম...’। এর সঙ্গে মিল রেখে এনটিপি কর্তৃক বিশ্ব যক্ষ্মা দিবস ২০১৯–এর প্রতিপাদ্য নির্ধারণ করা হয়েছে ‘এখনই সময় অঙ্গীকার করার, যক্ষ্মামুক্ত বাংলাদেশ গড়ার’।

অনুষ্ঠানের শুরুতে জাতীয় যক্ষ্মা নিয়ন্ত্রণ কর্মসূচির লাইন ডিরেক্টর অধ্যাপক ডা. মো. শামিউল ইসলাম তাঁর বক্তব্যে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর ও সব অংশগ্রহণকারীর প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। তিনি চলমান কর্মসূচির নীতিমালা ও অগ্রাধিকার, যক্ষ্মা মোকাবিলায় বিগত দশকগুলোয় অর্জিত সাফল্য ও এখন পর্যন্ত বিদ্যমান প্রতিবন্ধকতাগুলো তুলে ধরেন।

গতকাল রোববার রাজধানীর হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে আয়োজিত সংলাপে বক্তারা। ছবি: সংগৃহীত
গতকাল রোববার রাজধানীর হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে আয়োজিত সংলাপে বক্তারা। ছবি: সংগৃহীত

বিশেষজ্ঞ প্যানেলে পরিকল্পনা কমিশনের সদস্য ড. শামসুল আলম, বাংলাদেশে নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত আর্ল আর মিলার, ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মেডিকেল অনুষদ বিভাগের ডিন অধ্যাপক ডা. খান আবুল কালাম আজাদ, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) প্যারাক্লিনিক্যাল সায়েন্স অনুষদের সাবেক ডিন অধ্যাপক ডা. ইকবাল আর্সলান, বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ ড. হোসেন জিল্লুর রহমান প্রমুখ গঠনমূলক ও মুক্ত আলোচনায় অংশ নেন।

আলোচ্য বিষয়ের মধ্যে ছিল বিদ্যমান সম্পদসমূহের সংহত ব্যবহার ও বিনিয়োগ বৃদ্ধি, শহরাঞ্চলে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয় এবং স্থানীয় সরকার, সমবায় মন্ত্রণালয়সহ অন্যান্য মন্ত্রণালয়ের মধ্যে সমন্বয় সাধন, ব্যক্তি খাত ও নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিদের সক্রিয়ভাবে সম্পৃক্তকরণ, যক্ষ্মা মোকাবিলায় সমন্বিত উদ্যোগ গ্রহণ, যক্ষ্মা রোগী খুঁজে বের করা, চিকিৎসা প্রদান, প্রতিরোধ কার্যক্রম ইত্যাদি।

সংলাপ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের মাননীয় স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী ডা. মুরাদ হাসান। তিনি বলেন, বাংলাদেশ সরকার যক্ষ্মা রোগ প্রতিরোধের জন্য আরও জোরদার উদ্যোগ গ্রহণে ও যক্ষ্মা রোগ নির্মূলে ব্যাপক জনসচেতনতা তৈরিতে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ।

বাংলাদেশে নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত আর্ল আর মিলার বলেন, ‘মার্কিন সরকার ইউএসএআইডির মাধ্যমে বাংলাদেশে বিগত ১০ বছরে যক্ষ্মা রোগ নিয়ন্ত্রণ কার্যক্রমকে এগিয়ে নিতে প্রায় ১০ কোটি ডলার বিনিয়োগ করেছে। এখানে এবং সারা বিশ্বে সম্মিলিত লক্ষ্য অর্জনে আমেরিকান সরকার সব দেশ এবং অংশীদারদের সঙ্গে কাজ করতে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ।

সংলাপ অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন স্বাস্থ্য, শিক্ষা ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের সচিব আসাদুল ইসলাম, স্বাস্থ্য শিক্ষা ও পরিবার কল্যাণ বিভাগের সচিব জি এম সালেহউদ্দিন, মেডিকেল এডুকেশন ও পরিবার কল্যাণ বিভাগের সভাপতি ডা. মুস্তফা জালাল মহিউদ্দিন, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা, বাংলাদেশের ডেপুটি রিপ্রেজেনটেটিভ ডা. এডউইন সিসালভাদর, ইউএসএআইডি বাংলাদেশের মিশন ডিরেক্টর ডেরিক ব্রাউনসহ এমএসএইচ, আইআরডি এবং অন্যান্য সংস্থার প্রতিনিধিরা।