নিউজিল্যান্ডে সন্ত্রাসী হামলায় নিহত ফারুকের দাফন সম্পন্ন

নিউজিল্যান্ডের ক্রাইস্টচার্চে মসজিদে সন্ত্রাসী হামলায় নিহত ওমর ফারুকের লাশ বাংলাদেশে পৌঁছেছে। স্বামীর কফিন ধরে স্ত্রী সানজিদা জামান নেহার আহাজারি। ওমর ফারুকের বাসভবন, রাজবাড়ি, বন্দর, নারায়ণগঞ্জ, ২৭ মার্চ। ছবি: দিনার মাহমুদ
নিউজিল্যান্ডের ক্রাইস্টচার্চে মসজিদে সন্ত্রাসী হামলায় নিহত ওমর ফারুকের লাশ বাংলাদেশে পৌঁছেছে। স্বামীর কফিন ধরে স্ত্রী সানজিদা জামান নেহার আহাজারি। ওমর ফারুকের বাসভবন, রাজবাড়ি, বন্দর, নারায়ণগঞ্জ, ২৭ মার্চ। ছবি: দিনার মাহমুদ

নিউজিল্যান্ডের ক্রাইস্টচার্চের আল নুর মসজিদে সন্ত্রাসী হামলায় নিহত নারায়ণগঞ্জের বন্দর উপজেলার রাজবাড়ি এলাকার ওমর ফারুকের দাফন সম্পন্ন হয়েছে। আজ বুধবার সকাল ১০টায় বন্দর উপজেলার নবাব সিরাজউদ্দৌলা ক্লাব মাঠে জানাজা শেষে বন্দর সিটি কবরস্থানে তাঁর লাশ দাফন করা হয়। জানাজায় ফারুকের স্বজন ছাড়াও স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও শত শত এলাকাবাসী অংশ নেন।

এদিকে নিহত ফারুকের বাড়িতে চলছে মাতম। পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তিকে হারিয়ে দিশেহারা স্বজনেরা। তাঁদের সান্ত্বনা দিতে বাড়িতে স্বজনসহ এলাকাবাসীর ভিড় করেছেন।

২০১৫ সালে জীবিকার তাগিদে নিউজিল্যান্ডে পাড়ি জমান বন্দর উপজেলার রাজবাড়ি এলাকার ওমর ফারুক। ফারুক সেখানে কনস্ট্রাকশন ইঞ্জিনিয়ার হিসেবে কর্মরত ছিলেন। ২০১৭ সালের ২৯ ডিসেম্বর দেশে ছুটিতে এসে বন্দর উপজেলার নবীগঞ্জ এলাকার সানজিদা জাহান নেহাকে বিয়ে করেন। সর্বশেষ ২০১৮ সালের ১ নভেম্বর ছুটিতে দেশে আসেন এবং চলতি বছরের ১৮ জানুয়ারি আবার নিউজিল্যান্ডে পাড়ি জমান। এরপর ফারুকের প্রাণহীন দেহ দেশে ফিরবে, তা ভাবেননি কেউই। ১৫ মার্চ নিউজিল্যান্ডে ক্রাইস্টচার্চ আল নুর মসজিদে শুক্রবার জুমার নামাজে সন্ত্রাসীর গুলিতে ফারুকসহ ৫০ জন নিহত হন।

নিহত ফারুকের ভগ্নিপতি সারোয়ার হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, গতকাল মঙ্গলবার রাত সাড়ে ১১টার দিকে ঢাকায় হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে ওমর ফারুকের লাশ এসে পৌঁছালে আনুষ্ঠানিকতা শেষ করে গভীর রাতে বাড়িতে নিয়ে আসা হয়।

ফারুকের লাশ দেখে বারবার মূর্ছা যান মা রহিমা বেগম। কান্নায় ভেঙে পড়েন ফারুকের তিন মাসের অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী সানজিদা জাহান নেহা। ফারুকের স্ত্রী বলেন, তাঁর স্বামী অনাগত সন্তানকে দেখে যেতে পারলেন না। তিনি আরও বলেন, ফারুক পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি। শাশুড়ি, অবিবাহিত ননদ ও তাঁর আগামীর দিনগুলো কীভাবে চলবে, এ নিয়ে শঙ্কায় তিনি। তিনি তাঁদের পরিবারকে আর্থিক সহায়তা করার জন্য বাংলাদেশ ও নিউজিল্যান্ড সরকারের প্রতি আহ্বান জানান।