এ কেমন নৃশংসতা!

বাসচালকের সহকারী ধাক্কা মেরে রাস্তায় ফেলে দেন হুমায়ুন কবীর খান (৪৫) নামের এক ব্যক্তিকে। তারপর সেই সহকারীর ইশারায় বাসচালক বাসটি তুলে দেন ওই ব্যক্তির গায়ের ওপর। এতে ঘটনাস্থলেই তাঁর মৃত্যু হয়। আজ মঙ্গলবার বিকেল চারটার দিকে মিরপুর ১০ নম্বর গোলচত্বরের ফলপট্টির সামনে নৃশংস এই ঘটনা ঘটে।

চালকের সহকারী সেলিম পালিয়ে গেলেও বাসচালক ইকবালকে ঘটনাস্থলেই আটক করে উপস্থিত লোকজন এবং পুলিশ। বাসটি ও চালক ইকবালকে মিরপুর থানায় নিয়ে যাওয়া হয়।
নিহত হুমায়ুন কবীর সাতক্ষীরার রসূলপুরের আলী মুর্তজা খানের ছেলে। তিনি স্ত্রী রেবেকা বেগম, ছয় বছরের মেয়ে তাথৈ এবং ছয় মাসের ছেলে তীর্থকে নিয়ে মিরপুরের টোলার বাগের একটি বাসায় ভাড়া থাকতেন।
হুমায়ুন কবীর খানের সহকর্মী গাজী আমজাদ হোসেন বলেন, আজ দুপুরে তাঁরা দুজন মতিঝিলের তাঁদের অফিস থেকে পেশাগত কাজে শিখর পরিবহনের একটি বাসে করে মিরপুর ১০ নম্বরে যান। তাঁদের বাসটির সঙ্গে আলিফ পরিবহনের একটি বাস (ঢাকা মেট্রো ব ১১-৭৯৮৪) রোকেয়া সরণি থেকেই প্রতিযোগিতা করে আসছিল। বাস দুটি মিরপুর ১০ এর গোলচত্বরের সিগন্যালে থামলে তাঁরা দুজনসহ শিখর পরিবহনের বাসটির কয়েকজন যাত্রী বাস থেকে নেমে তাঁদের বাসের সামনে থাকা আলিফ পরিবহনের বাসটির সামনে গিয়ে এ নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন। এই সময় সিগন্যাল ছেড়ে দিলে আলিফ পরিবহনের বাসটির সহকারী সেলিম সামনে থাকা হুমায়ুন কবীরকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেয়। হুমায়ুন কবীর পড়ে গেলে আলিফ পরিবহনের বাসটি তাঁর ওপর তুলে দেন চালক। আশপাশের লোকজন হুমায়ুন কবীরকে জাতীয় হদরোগ ইনস্টিটিউটে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন।
মিরপুর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মতিউর রহমান বলেন, আইনগতভাবে কী ব্যবস্থা নেওয়া হবে তা প্রক্রিয়াধীন। হুমায়ুন কবীরের পরিবার যা বলবে সে অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
হুমায়ুন কবীরের পরিবারের সদস্যরা অভিযোগ করেছেন, এটা হত্যাকাণ্ড। জেনে বুঝে তাঁকে হত্যা করা হয়েছে।
মিরপুর থানায় বাস চালক ইকবালকে দেখতে আসা তাঁর বাবা মো. জলিল বলেন, তাঁরা আমিন বাজারে থাকেন। তাঁর ছেলে পাঁচ-ছয় বছর ধরে বিভিন্ন রুটে বাস চালাচ্ছেন। এর আগে বৈশাখী পরিবহনের বাস চালাতেন। ইকবাল ছোটবেলা থেকেই কারও কথা শুনত না, তখন থেকেই বেপরোয়া।