সেতু দেবে যাওয়ার পরও ঝুঁকি নিয়ে চলছে যান

গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ-রংপুর সড়কের গলাকাটা সেতুর ওপর দিয়ে ঝুঁকি নিয়ে যানবাহন চলাচল করছে।  গত বৃহস্পতিবার তোলা ছবি।  প্রথম আলো
গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ-রংপুর সড়কের গলাকাটা সেতুর ওপর দিয়ে ঝুঁকি নিয়ে যানবাহন চলাচল করছে। গত বৃহস্পতিবার তোলা ছবি। প্রথম আলো

গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ-রংপুর সড়কের গলাকাটা সেতুর পাটাতনের সামান্য অংশ দেবে গেছে। এই কারণে ভারী যানবাহন চলাচলে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। কিন্তু সেই নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে ঝুঁকি নিয়ে ভারী যানবাহন চলাচল করছে।

সড়ক ও জনপথ (সওজ) গাইবান্ধা কার্যালয় সূত্র জানায়, সুন্দরগঞ্জ উপজেলার সোনারায় ইউনিয়নের পূর্বশিবরাম গ্রামের নজরুল প্রি-ক্যাডেট স্কুলসংলগ্ন গলাকাটা সেতু। ১৯৮৭ সালে সুন্দরগঞ্জ-রংপুর সড়কের গলাকাটা খালের ওপর সেতুটি (কালভার্ট) নির্মিত হয়। গত শনিবার হঠাৎ সেতুর পাটাতনের কিছু অংশ দেবে যায়। এরপর দেবে যাওয়া অংশে স্টিলের পাটাতন দেয় সওজ এবং এই সেতুর ওপর দিয়ে ভারী যান চলাচলে নিষেধাজ্ঞা জারি করে ওই বিভাগ।

গত শনিবার সেতু দেবে যাওয়ার পর স্থানীয় লোকজন তাৎক্ষণিকভাবে সুন্দরগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সোলায়মান আলীকে বিষয়টি জানান। ইউএনও ওই দিন ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। তিনি বিষয়টি সওজের গাইবান্ধা কার্যালয়কে জানান। পরে সওজ সেতুর ওপর দিয়ে ভারী যানবাহন চলাচল বন্ধ করে দেন। কিন্তু এই নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে ভারী যানবাহন চলাচল অব্যাহত রয়েছে।

গত বৃহস্পতিবার বিকেলে সরেজমিনে দেখা গেছে, সেতুর ওপর দিয়ে রিকশা-ভ্যান ও ব্যাটারিচালিত অটোরিকশার পাশাপাশি ভারী যানবাহন বাস ও ট্রাক চলাচল করছে। সেতুর ওপর ভারী যানবাহন উঠলেই শব্দ হচ্ছে। অথচ সেতুর পাশেই টাঙানো আছে ভারী যানবাহন চলাচলের ওপর নিষেধাজ্ঞার সাইনবোর্ড। কিন্তু এই নিষেধাজ্ঞা কেউ মানছে না।

স্থানীয় লোকজন জানান, নির্মাণের পর সেতুটি আর সংস্কার করা হয়নি। ফলে সেতুর পাটাতনের নিচে পলেস্তারা খসে পড়ছে।

উপজেলার সোনারায় ইউনিয়নের শিবরাম গ্রামের শিক্ষক মাজেদ মিয়া বললেন, সুন্দরগঞ্জ-রংপুর সড়ক দিয়ে রংপুর ও পীরগাছা উপজেলার কয়েক হাজার মানুষ সরাসরি বাসে গাইবান্ধা শহরে যাতায়াত করেন। গাইবান্ধা ও সুন্দরগঞ্জ থেকেও অনেক মানুষ রংপুর ও পীরগাছায় যান। কিন্তু সেতুটি ঝুঁকিপুর্ণ হওয়ায় মানুষ দুর্ভোগে পড়েছেন।

সুন্দরগঞ্জ উপজেলার মীরগঞ্জ এলাকার ব্যবসায়ী মুক্তা মিয়া বলেন, মীরগঞ্জ হাটের ব্যবসায়ীরা সাধারণত রংপুর নগর থেকে মালামাল এনে এখানে বিক্রি করেন। কিন্তু এই সেতু দিয়ে ভারী যানবাহন চলাচল ঝুঁকিপুর্ণ হওয়ায় বিকল্পপথে মালামাল বহন করছেন। অর্থাৎ ৭০ কিলোমিটার ঘুরে গাইবান্ধা ও পলাশবাড়ী শহর হয়ে রংপুরে যেতে হচ্ছে। এতে পরিবহন খরচ বেড়ে গেছে।

সোনারায় ইউপি চেয়ারম্যান বদিরুল আহসান বলেন, সড়কপথে যোগাযোগের ক্ষেত্রে সেতুটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কারণ, এই সেতু ব্যবহার করে উপজেলার প্রায় ৫০ হাজার মানুষকে সুন্দরগঞ্জ উপজেলা শহর ও পীরগাছা হয়ে রংপুরে যেতে হয়। সেতুটি সংস্কার ও মেরামতের জন্য বেশ কয়েকবার সওজ বিভাগকে জানানো হয়েছে।

 সওজের গাইবান্ধা কার্যালয়ের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আসাদুজ্জামান বলেন, সেতুটি জেলা পরিষদ নির্মাণ করেছিল। এরপর আর সংস্কার করা হয়নি। এখন সেতুটি ভেঙে নতুন করে সেতু নির্মাণ করা হবে।