মৃত্যুর ৯ মাস পর জানা গেল হত্যাকাণ্ডে জড়িত স্ত্রী ও তাঁর প্রেমিক

ঢাকার কেরানীগঞ্জে ব্যবসায়ী সাদ্দাম হোসেনের (২৯) মৃত্যুর নয় মাস পর জানা গেল তিনি হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়েছেন। আর ওই হত্যাকাণ্ডে জড়িত সাদ্দামের স্ত্রী শিউলী আক্তার ওরফে বিউটি আক্তার (২৪) ও তাঁর প্রেমিক সাব্বির হোসেনকে (২৫) গ্রেপ্তার করা হয়েছ। রোববার দুপুরে দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ শাহজামান এক সংবাদ সম্মেলনে এই তথ্য জানান।

মোহাম্মদ শাহজামান বলেন, ২০১৮ সালের ৪ জুন আকস্মিক মৃত্যু হয় সাদ্দাম হোসেনের। পরের দিন সাদ্দামের সৎভাই মো. লিটন মিয়া (৫০) থানায় একটি অপমৃত্যু মামলা করেন। পুলিশ সাদ্দামের লাশ ময়নাতদন্তের জন্য স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ (মিটফোর্ড) হাসপাতাল মর্গে পাঠায়। ২৪ মার্চ ময়নাতদন্তের প্রতিবেদনে সাদ্দামকে শ্বাস রোধ করে হত্যার বিষয়টি উল্লেখ করা হয়। ফলে সাদ্দামের বড় ভাই লিটনকে হত্যা মামলা করতে অনুরোধ করা হলে তিনি তা করতে রাজি হননি। পরে পুলিশ বাদী হয়ে চলতি বছরের ২৯ মার্চ একটি হত্যা মামলা করে।

মামলার রহস্য উদঘাটনে গত শুক্রবার রাতে শুভাঢ্যা ইউনিয়নের পারগেন্ডারিয়া এলাকায় অভিযান চালিয়ে নিহত সাদ্দামের স্ত্রী শিউলী আক্তার ও তাঁর প্রেমিক সাব্বিরকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। পরে পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে তাঁরা সাদ্দামকে শ্বাস রোধ করে হত্যার বিষয়টি স্বীকার করেন। তাঁরা আরও জানান, গত বছরের ৪ জুন গভীর রাতে দক্ষিণ কেরানীগঞ্জে নিজ বাড়ির একটি কক্ষে সাব্বির হোসেন ও শিউলি আক্তারকে আপত্তিকর অবস্থায় দেখেন সাদ্দাম হোসেন। এ সময় সাদ্দাম ক্ষুব্ধ হয়ে সাব্বিরকে মারতে যান। পরে সাব্বির ও শিউলি মিলে সাদ্দামকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করেন। পরে স্ত্রী শিউলী আক্তার এই হত্যাকাণ্ডকে স্বাভাবিক মৃত্যু বলে এলাকায় প্রচার করেন।

ওসি মোহাম্মদ শাহজামান জানান, গত শুক্রবার রাতে নিহত সাদ্দামের স্ত্রী শিউলী ও তাঁর প্রেমিক সাব্বিরকে গ্রেপ্তার করে আদালতে পাঠানো হয়েছে। তাঁরা আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন।

সাদ্দাম হোসেন ঢাকার যাত্রাবাড়ী মাছের আড়তে মাছের ব্যবসা করতেন। তিনি দুই সন্তানের জনক ছিলেন। কুমিল্লা জেলার দাউদকান্দি থানার ষোলাপাড়া গ্রামের মো. সুলতান মিয়ার ছেলে ছিলেন সাদ্দাম।