এফ আর টাওয়ারের কাচ ভেঙে পড়ছে

বনানীতে আগুনে ক্ষতিগ্রস্ত এফ আর টাওয়ার থেকে কাচ ভেঙে পড়েছে রাস্তায়। ছবি: আশরাফুল আলম
বনানীতে আগুনে ক্ষতিগ্রস্ত এফ আর টাওয়ার থেকে কাচ ভেঙে পড়েছে রাস্তায়। ছবি: আশরাফুল আলম

ঢাকার বনানীতে অগ্নিকাণ্ডে ক্ষতিগ্রস্ত এফ আর টাওয়ারের সামনের রাস্তায় গাড়ি চলাচল বন্ধ। তবে আরেক পাশের সড়ক দিয়ে যান চলাচল করছে। ক্ষতিগ্রস্ত ভবনটির কাচ ভেঙে নিচে পড়তে দেখা গেছে। পুলিশ ভবনের সামনে কাউকে দাঁড়াতে দিচ্ছে না।

ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা যায়, পথচারী ও গাড়ি চলাচলের জন্য ভবনটির সামনে ও পেছনের ফুটপাত ও রাস্তায় সিটি করপোরেশনের উদ্যোগে লোহার দণ্ড ও টিন দিয়ে ছাউনি তৈরির কাজ চলছে। দুপুর ১২টার দিকে এই প্রতিবেদকের সামনেই ওপর থেকে এফ আর টাওয়ারের ভাঙা কাচ মাটিতে পড়ে।

প্রত্যক্ষদর্শী ব্যক্তিরা জানান, সকাল সাড়ে ১০টার দিকে টাওয়ার থেকে বড় বড় কাচ রাস্তায় পড়ে। সিটি করপোরেশনের কর্মীরা দড়ি দিয়ে ভবনটির সামনে ও পেছনের দুপাশ আটকে রেখেছেন। সেখানে কাউকে যেতে দেওয়া হচ্ছে না। ভবনের ভেতর থেকে আসবাবপত্র সরানোর কাজ করছেন শ্রমিকেরা।

প্রকৌশলী দলের পরিদর্শন
ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন বাংলাদেশের (আইইবি) একটি দল এফ আর টাওয়ারে প্রাথমিক তদন্ত শেষ করেছে। আইইবি সহকারী সাধারণ সম্পাদক প্রকৌশলী কাজী খায়রুল বাশারের নেতৃত্বে আট সদস্যের দলটি সকাল সাড়ে ১০টার দিকে এফ আর টাওয়ারে ঢোকে। কাজী খায়রুল বাশার বলেন, তারা তিন ঘণ্টা ধরে ভবনটি পরিদর্শন করেছেন। ৪ এপ্রিল আলোচনা হবে। এরপর পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদন দেওয়া হবে। এখনই কোনো মন্তব্য করার সময় হয়নি।

ভবনের ভেতরের অবস্থা সম্পর্কে জানতে চাইলে কাজী খায়রুল বাশার বলেন, ‘আট থেকে দশতলা মেইন ইস্যু। এখানের কয়েকটা জায়গা আগুনের উৎস হতে পারে। এয়ারকন্ডিশন বা অন্যান্য শর্ট সার্কিট থেকে আগুন লাগতে পারে। আমরা এইগুলো নিয়ে আলাপ করছি। দরকার হলে আমরা আবার পরিদর্শনে আসব।’

ভবনের অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা, জরুরি মুহূর্তে নির্গমন সুবিধা ছিল কি না, এমন প্রশ্নের উত্তরে কাজী খায়রুল বাশার বলেন, কিছু জায়গাতে তো কমতি ছিলই।

আগুনে ক্ষতিগ্রস্ত এফ আর টাওয়ার। ছবি: আশরাফুল আলম
আগুনে ক্ষতিগ্রস্ত এফ আর টাওয়ার। ছবি: আশরাফুল আলম

গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের পরিদর্শন
সকাল সাড়ে ১০টার দিকে বনানীর এফ আর টাওয়ার পরিদর্শন করে গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের একটি দল। মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মো. ইয়াকুব আরী পাটোয়ারীর নেতৃত্বে আট সদস্যের দলটি বেলা সাড়ে ১১টা পর্যন্ত ভবনে ছিলেন।

পরিদর্শন শেষে তদন্ত কমিটির সদস্য গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের প্রধান স্থপতি কাজী গোলাম নাসির বলেন, ‘আমরা দেখতে এসেছি মালিকপক্ষ আমাদের কাছে যে নকশা দিয়েছে আর রাজউকে যে নকশা আছে—এই দুইয়ের সামঞ্জস্য আছে কি না। দ্বিতীয়ত, অনুমোদিত নকশার সঙ্গে এই ভবনের মিল আছে কি না। মালিকপক্ষ থেকে যে নকশার কথা বলা হয়েছে, আর রাজউক থেকে যে নকশার কথা বলা হয়েছে, পাশাপাশি এই দুটো নকশা দেখার পর আমরা বলতে পারব কোনটা ঠিক। রাজউকের নকশা আমাদের হাতে নেই। আমরা গতকাল প্রথম কর্মদিবসে রাজউকের কাছে তথ্য চেয়েছি। আজ বিকেলে তা পেলে কী ব্যত্যয় আছে তা আমরা জানতে পারব।’

রাজউকের পরিদর্শন
বনানীর বিভিন্ন সড়কে সুউচ্চ ভবনগুলোতে রাজউক কর্তৃপক্ষের একটি দল পরিদর্শন করেছে। রাজউকের জোন-৪–এর পরিচালক মো. মামুন মিয়ার নেতৃত্বে পরিদর্শন হয়। বেশ কয়েকটি ভবনে ত্রুটি ধরা পড়েছে বলে তিনি জানান।