বাসচালকসহ তিনজনের বিচার শুরু

সাইদুর রহমান পিয়াল। ছবি: সংগৃহীত
সাইদুর রহমান পিয়াল। ছবি: সংগৃহীত

নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের বিবিএ পঞ্চম সেমিস্টারের ছাত্র সাইদুর রহমান পায়েল হত্যা মামলার আসামি বাসচালকসহ তিনজনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের মাধ্যমে বিচার শুরু হয়েছে। তিন আসামি হলেন হানিফ পরিবহনের বাসচালক জামাল হোসেন, চালকের সহকারী ফয়সাল হোসেন ও সুপারভাইজার মো. জনি।

আজ মঙ্গলবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে চট্টগ্রাম বিভাগীয় দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালের ভারপ্রাপ্ত বিচারক মোহাম্মদ আবদুল হালিম শুনানি শেষে বিচার শুরুর এই আদেশ দেন।

সাইদুর রহমান পায়েলের বাসা চট্টগ্রামের হালিশহর সিডিএ আবাসিক এলাকায়।

চট্টগ্রাম বিভাগীয় দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালের সরকারি কৌঁসুলি মো. আইয়ুব খান প্রথম আলোকে বলেন, পরিকল্পিত হত্যা ও লাশ গুমের অভিযোগে বাসচালকসহ তিনজনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দিয়েছেন আদালত। আগামী ৮ এপ্রিল থেকে সাক্ষ্য শুরু হবে।

২০১৮ সালের ২১ জুলাই রাতে দুই বন্ধু আকিবুর রহমান ও মহিউদ্দিনের সঙ্গে হানিফ পরিবহনের একটি বাসে করে চট্টগ্রাম থেকে ঢাকার পথে রওনা হওয়ার পর নিখোঁজ হন সাইদুর। দুই দিন পর ২৩ জুলাই মুন্সিগঞ্জের ভাটেরচর সেতুর নিচের খাল থেকে তাঁর লাশ উদ্ধার করে গজারিয়া থানা-পুলিশ। এরপর হানিফ পরিবহনের ওই বাসের সুপারভাইজার জনিকে ঢাকার মতিঝিল এবং চালক জামাল হোসেন ও তাঁর সহকারী ফয়সাল হোসেনকে আরামবাগ থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। সাইদুরের মামা গোলাম সরোয়ার্দী বাদী হয়ে চালক জামাল হোসেন, তাঁর সহকারী ফয়সাল হোসেন ও সুপারভাইজার জনিকে আসামি করে গজারিয়া থানায় হত্যা মামলা করেন। তদন্ত শেষে ওই বছরের ৩ অক্টোবর আদালতে অভিযোগপত্র দেয় পুলিশ।

এতে বলা হয়, গজারিয়া এলাকায় গাড়ি যানজটে পড়ায় প্রস্রাব করার কথা বলে বাস থেকে নেমেছিলেন সাইদুর। বাস চলতে শুরু করলে তিনি দৌড়ে গিয়ে ওঠার সময় দরজার সঙ্গে ধাক্কা লেগে সংজ্ঞা হারান। নাক-মুখ দিয়ে রক্ত বের হতে দেখে তাঁকে হাসপাতালে নেওয়ার বদলে দায় এড়াতে ভাটেরচর সেতু থেকে নিচের খালে ফেলে বাস নিয়ে ঢাকায় চলে আসেন আসামিরা। গত বছরের ডিসেম্বর মাসে মুন্সিগঞ্জ আদালত থেকে মামলাটি বিচারের জন্য চট্টগ্রাম দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে আসে।

আদালত সূত্র জানায়, শুনানিতে রাষ্ট্রপক্ষ থেকে বলা হয় যে পরিকল্পিতভাবে সাইদুরকে বাসের দরজার সঙ্গে ধাক্কা লাগিয়ে আঘাত করা হয়। তাঁকে হাসপাতালে না নিয়ে খালে ফেলে দেওয়া হয়। লাশটি গুমের উদ্দেশ্যে খালে ফেলা হয়েছিল। পরে আসামিপক্ষের আইনজীবী তিনজনকে নির্দোষ দাবি করে অভিযোগ গঠন থেকে অব্যাহতির আবেদন করেন। আদালত তা নাকচ করে দিয়ে তিন আসামিকে তাদের বিরুদ্ধে অপরাধ পড়ে শোনান। এ সময় আসামিরা নিজেদের নির্দোষ দাবি করেন। পরে আদালত তিনজনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের আদেশ দেন।

সাইদুর রহমান পায়েলের মামা ফাহাদ চৌধুরী বলেন, দ্রুত বিচার যেন শেষ হয়। যাতে এ ধরনের ঘটনা ভবিষ্যতে না ঘটে।