বিজয় মিছিলে হামলা, নিহত ১, আহত ১০

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগর উপজেলা পরিষদের নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থীর সমর্থকদের বিরুদ্ধে জয়ী প্রার্থীর সমর্থকদের মিছিলে হামলার অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ সময় সংঘর্ষে জয়ী প্রার্থীর এক সমর্থক নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন আরও ১০ জন।

গত সোমবার রাত ৯টার দিকে নাটঘর ইউনিয়নের কুড়িঘর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় গতকাল মঙ্গলবার মামলা হয়েছে। এতে একজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

নিহত ব্যক্তির নাম সাইদুল ইসলাম (৩৬)। তিনি কুড়িঘর গ্রামের বাসিন্দা। আহত লোকজনের মধ্যে রয়েছেন সাইদুলের বাবা আবুল কালাম, চাচাতো ভাই মুর্শেদ মিয়া, একই গ্রামের শুক্কুর আলী, আজিজ মিয়া ও আলমগীর হোসেন। তাঁদের জেলা সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এই ঘটনায় গ্রেপ্তার হওয়া ব্যক্তির নাম হুমায়ুন মিয়া (৫০)। তিনি উপজেলার কুড়িঘর গ্রামের বাসিন্দা।

সাইদুলের চাচাতো ভাই মুর্শেদ মিয়া বলেন, জয়ী চেয়ারম্যান মনিরুজ্জামানের পক্ষে আনন্দ মিছিল করার সময় কুড়িঘর গ্রামের অহিদ মিয়া ও মালেক মিয়ার লোকজন মিছিলে হামলা চালান। তাঁরা সাইদুলের বুকের দুই পাশে দা দিয়ে আঘাত করেন।

নবীনগরে গত রোববারের নির্বাচনে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় উপকমিটির সম্পাদক কাজী জহির উদ্দিন সিদ্দিক দলীয় প্রার্থী হন। এখানে উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্য মোহাম্মদ মনিরুজ্জামান দলটির ‘বিদ্রোহী’ প্রার্থী ছিলেন। নির্বাচনে মনিরুজ্জামান ৪৯ হাজার ৮৭৮ ভোট পেয়ে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। কাজী জহির পান ৪৮ হাজার ৬৯০ ভোট।

পুলিশ, নিহত ব্যক্তির পরিবার ও স্থানীয় লোকজনের সূত্রে জানা যায়, ভোটের দিন কুড়িঘর গ্রামের একটি কেন্দ্রে আওয়ামী লীগের প্রার্থীর সমর্থক মুছা মিয়া, ইউসুফ মিয়া, জাহাঙ্গীর আলমসহ বেশ কয়েকজন এজেন্ট হতে চেয়েছিলেন। সে সময় বিদ্রোহী প্রার্থীর পক্ষের সাইদুলসহ কয়েকজন কর্মী-সমর্থক তাঁদের বাধা দেন। এ নিয়ে তাঁদের মধ্যে কথা-কাটাকাটি হয়। গত সোমবার রাত সাড়ে আটটার দিকে কুড়িঘর গ্রামে বিজয়ী চেয়ারম্যান প্রার্থীর কর্মী-সমর্থকেরা আনন্দ মিছিল বের করেন। মিছিলটি কুড়িঘর বাজারে গেলে আওয়ামী লীগের প্রার্থীর পক্ষের সমর্থক হিসেবে পরিচিত কুড়িঘর গ্রামের অহিদ মিয়া ও মালেক মিয়ার লোকজন হামলা চালান। এ সময় উভয় পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। এতে জয়ী প্রার্থীর পক্ষের সাইদুলসহ অন্তত ১০ জন আহত হন। আহত অবস্থায় তাঁদের উদ্ধার করে জেলা সদর হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক সাইদুলকে মৃত ঘোষণা করেন।

এ বিষয়ে কথা বলার জন্য অহিদ মিয়া ও মালেক মিয়ার মুঠোফোনে একাধিকবার ফোন করা হলেও সেগুলো বন্ধ পাওয়া যায়।

এর আগে সোমবার সকালে কৃষ্ণনগর ইউনিয়নের থানাকান্দি গ্রামে আওয়ামী লীগের প্রার্থীর লোকজনের বিরুদ্ধে বিদ্রোহী প্রার্থীর সমর্থকদের বাড়িতে হামলার অভিযোগ ওঠে। সেখানে সংঘর্ষে ১০ জন আহত হন।

কুড়িঘর গ্রামের সংঘর্ষের বিষয়ে জানতে চাইলে নবীনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রনোজিৎ রায় বলেন, জেলা সদর হাসপাতালে ময়নাতদন্ত শেষে সাইদুলের লাশ দুপুরে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়েছে। এ ঘটনায় একজনকে আটক করা হয়েছিল। মামলায় তাঁকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে।