মিনুর গলায় কাঁটা!

প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তার কার্যালয়ে আছিয়ার কোলে ‘মিনু’।  ছবি: প্রথম আলো
প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তার কার্যালয়ে আছিয়ার কোলে ‘মিনু’। ছবি: প্রথম আলো

আছিয়ার সংসারের দুষ্টু-আদুরে সদস্য মিনু। দুই বছর ধরে এই বিড়ালটি পুষছেন আছিয়া। কিন্তু কয়েক দিন ধরে মিনু খেতে পারছে না। শরীরটাও দুর্বল হয়ে গেছে। প্রিয় পোষা প্রাণীটির এই অবস্থা দেখে ভীষণ চিন্তায় পড়েন আছিয়া। মিনুকে নিয়ে যান প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তার কার্যালয়ে। সঙ্গে যান আছিয়ার স্বামীও। চিকিৎসক পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে বলেন, বিড়ালটির গলায় মাছের কাঁটা বিঁধে থাকতে পারে। তবে ওষুধ খেলে সেরে যাবে। এতেই আছিয়ার চোখে আনন্দের ঢেউ খেলে যায়।

গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে পোষা বিড়ালটিকে কোলে করে গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তার কক্ষে হাজির হন আছিয়া খাতুন (৪৮)। নিজের অতি আদরের বিড়ালটির সর্বোচ্চ চিকিৎসার আবদার করছিলেন চিকিৎসকের কাছে। বিড়ালটিও আদুরে ভঙ্গিমায় মাথা এলিয়ে আছিয়ার কোলে শুয়ে পড়ছিল বারবার।

শ্রীপুর উপজেলার পৌর এলাকার মাধখলা গ্রামে আছিয়ার বাড়ি। গ্রামের সৈয়দ আহম্মেদের স্ত্রী তিনি। দুজনেই বিভিন্ন স্থানে দৈনিক মজুরিতে কাজ করেন। অভাবের সংসারে আছিয়ার নিত্যসঙ্গী বিড়ালটি। সন্তানের মতোই আদর করেন এটিকে। দুই বছর আগে সড়কে কুড়িয়ে পান বাচ্চা বয়সী বিড়ালটিকে। পরে এটিকে ঘরে নিয়ে পালন করেন। ভালোবেসে নাম দেন মিনু। তিনি বলেন, কয়েক দিন ধরেই বিড়ালটির শরীরটা ভালো যাচ্ছে না। বারবার বমি করছিল সে। তিনি জানান, বিড়ালটি প্রতিদিন তাঁর সঙ্গেই ঘুমায়। প্রতিদিন কাজে গেলে বিড়ালটি তাঁর ফেরার অপেক্ষায় থাকে। ঘরে ফিরলে বিড়ালটি যেখানেই থাকে দৌড়ে এসে তাঁর কোলে চড়ে বসে।

উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা আবদুল জলিল বলেন, ‘বিড়ালটির গলায় কাঁটা বিঁধে থাকতে পারে। আমি ওষুধ দিয়েছি। আশা করি, নিয়মিত খাওয়ালে এটি সুস্থ হয়ে উঠবে।’ তিনি বলেন, ওই নারীর কথায় বোঝা গেছে বিড়ালটি খুবই আদরের। তিনি বারবার বিড়ালের জন্য ভালো করে চিকিৎসা করার অনুরোধ করছিলেন। তা ছাড়া স্বামী সৈয়দ আহম্মেদ কাজ ফেলে ভ্যানে করে স্ত্রী ও বিড়ালটিকে নিয়ে হাসপাতালে যান।