কক্সবাজারে পিডিবি কর্মকর্তাদের আবাসন প্রকল্পের ভূমি অধিগ্রহণ স্থগিত

ফাইল ছবি
ফাইল ছবি

কক্সবাজারের ঝিলংজা মৌজার পাহাড় ও টিলা অধিগ্রহণ করে বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের (পিডিবি) কর্মকর্তা-কর্মচারীদের আবাসন প্রকল্পের জন্য ভূমি অধিগ্রহণ–প্রক্রিয়া স্থগিত করেছেন আপিল বিভাগ। হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতির (বেলা) করা লিভ টু আপিল (আপিলের অনুমতি চেয়ে আবেদন) মঞ্জুর করে আদেশ দেওয়া হয়। প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনের নেতৃত্বাধীন চার সদস্যের আপিল বিভাগ আজ রোববার এ আদেশ দেন।

আদালতে বেলার পক্ষে শুনানিতে ছিলেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী ফিদা এম কামাল, এ এম আমিনউদ্দিন ও আইনজীবী সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান। দুই বিবাদীর পক্ষে ছিলেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী মাহবুবে আলম।

ঝিলংজা মৌজার পাহাড় ও টিলা অধিগ্রহণ করে পিডিবির কর্মকর্তা-কর্মচারীদের আবাসন প্রকল্পের জন্য ভূমি অধিগ্রহণ–প্রক্রিয়া আপিল বিভাগ স্থগিত করেছেন বলে জানান বেলার প্রধান নির্বাহী সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, কক্সবাজার জেলার ১৭৫ একরের এই পাহাড় একমাত্র অক্ষত পাহাড়। পিডিবি তাদের কর্মকর্তা–কর্মচারীদের আবাসনের জন্য আইন ভেঙে অক্ষত এই পাহাড়ের চার একর জায়গা অধিগ্রহণ করতে চেয়েছিল। অধিগ্রহণকে কেন্দ্র করে ক্ষতিপূরণের আশায় একশ্রেণির ভূমিদস্যু তৎপরতা শুরু করে। আপিল বিভাগের আদেশের ফলে পাহাড়টি যেমন অক্ষত রইল, তেমনি ক্ষতিপূরণের নামে জনগণের টাকা লুটপাটের প্রক্রিয়াও বন্ধ হলো।

আবেদনকারীপক্ষ জানায়, ঝিলংজা মৌজার চারটি দাগে কক্সবাজারে পিডিবি তাদের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জন্য আবাসন ও অন্যান্য কাঠামো নির্মাণের উদ্যোগ নিলে ২০১৫ সালে বেলা হাইকোর্টে রিট করে। ওই বছরের ৭ সেপ্টেম্বর হাইকোর্ট রুল দেন এবং ওই ভূমি অধিগ্রহণসংক্রান্ত মামলার কার্যক্রম স্থগিত করেন। রুলের চূড়ান্ত শুনানি নিয়ে গত বছরের গত ৫ এপ্রিল হাইকোর্ট রায় দেন। রায়ে কক্সবাজার সদর উপজেলার ঝিলংজা মৌজার চারটি দাগের জন্য এলএ কেস (ভূমি অধিগ্রহণ মামলা) চলমান রেখে পরিবেশ অধিদপ্তরকে একটি কমিটি গঠন করতে বলে জমিতে স্থাপনা নির্মাণসংক্রান্ত বিষয়টি তদারকি করতে বলা হয়, যাতে কোনো ধরনের বন উজাড় বা পাহাড় কাটা না পড়ে।

বেলা জানায়, হাইকোর্টের রায়ে নির্দেশ দেওয়া হয়, যদি পরিবেশ অধিদপ্তরের কাছে এ নির্মাণকাজ অপরিহার্য ও জাতীয় স্বার্থে প্রয়োজনীয় বলে প্রতীয়মান হয়, তবে এ–সংক্রান্ত আইন ও বিধি পর্যালোচনায় সঠিক বিবেচিত হলে অনুমতি দিতে পারবে। এ ক্ষেত্রে অবশ্যই পরিবেশগত প্রভাব নিরূপণপূর্বক উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন কমিটির অনুমোদন সাপেক্ষে অধিগ্রহণ করা জায়গায় অবকাঠামো নির্মাণের অনুমতি দেওয়া যাবে। তবে ওই অধিগ্রহণ মামলার তফসিল অনুসারে, অধিগ্রহণের জন্য প্রস্তাব করা জমির পরিমাণ সর্বমোট চার একর। এর মধ্যে ৩ দশমিক ৯৮ একর জায়গা পাহাড় বা টিলা উল্লেখ করে ভূমি অধিগ্রহণ–প্রক্রিয়া চলমান রেখে হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে চলতি বছর লিভ টু আপিল করে বেলা। এর ওপর গত ৩১ মার্চ শুনানি শেষে আজ আদেশ দেওয়া হয়।