খুনির সঙ্গে চুক্তি হয় ২ লাখ ৩০ হাজার টাকায়

ছবিটি প্রতীকী
ছবিটি প্রতীকী

জেলখানায় বসে নওগাঁর পত্নীতলা উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ইসাহাক হোসেনকে (৭০) হত্যার ষড়যন্ত্র করেছিলেন খুনিরা। ২ লাখ ৩০ হাজার টাকায় চুক্তি হয় দুই পক্ষের। পরিকল্পনা চূড়ান্ত করার জন্য হত্যাকাণ্ডের প্রায় দেড় মাস আগে থেকে হত্যার মূল পরিকল্পনাকারী আবুল কালাম আজাদ ওরফে লিটুর বাড়িতে যাতায়াত শুরু করেন ভাড়া করা খুনি হারুন প্রামাণিক (৪৮)।

নওগাঁয় আলোচিত এই হত্যাকাণ্ডের প্রায় পাঁচ মাস পরে গতকাল রোববার গাজীপুরের কালিয়াকৈর থানার ডাইনকিনি এলাকা থেকে ভাড়া করা খুনি হারুন প্রামাণিককে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। গ্রেপ্তারের পর আদালতে হাজির করা হলে আজ সোমবার ১৬৪ ধারায় এই স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন হারুন।

মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা জহুরুল হক ও আদালত সূত্রে জানা গেছে, নওগাঁর পত্নীতলার আওয়ামী লীগ নেতা ইসাহাক হোসেনের সঙ্গে নজিপুর পৌরসভার ১ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর আবুল কালাম আজাদ ওরফে লিটুর জমিজমা ও এলাকায় আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে অনেক দিন ধরেই বিরোধ চলে আসছিল। হত্যাকাণ্ডের প্রায় তিন মাস আগে নওগাঁ জেলহাজতে থাকা অবস্থায় হারুনসহ অন্য আসামিদের পরিচয় হয় লিটুর। জেলে বসেই ২ লাখ ৩০ হাজার টাকার বিনিময়ে হারুনের সঙ্গে চুক্তি হয় লিটুর। হত্যার পরিকল্পনা সাজাতে কবিরাজ সেজে দীর্ঘদিন লিটুর বাড়িতে যাতায়াত করেন হারুন।

সব পরিকল্পনা শেষে গত বছরের ৪ ডিসেম্বর ইসাহাককে খুন করার উদ্দেশ্যে খুনিরা ইসাহাকের বাড়ির গ্যারেজে অবস্থান নেন। রাত নয়টার দিকে দলীয় কার্যালয় থেকে গাড়িতে করে বাড়ি ফিরছেন ইসাহাক—মোবাইলে খুনিদের এমন সংকেত দেন লিটু। ইসাহাক গাড়ি নিয়ে পৌঁছানো মাত্রই খুনিরা তাঁকে এলোপাতাড়ি ছুরিকাঘাত করে দ্রুত পালিয়ে যায়। এ সময় ইসাহাকের গাড়িচালকও আহত হন।

পত্নীতলা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) পরিমল চন্দ্র বলেন, হারুনের স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দির ফলে আওয়ামী লীগ নেতা ইসাহাক হোসেন হত্যার পুরো রহস্য এখন উদ্‌ঘাটিত হয়েছে। এখন পর্যন্ত চারজন আসামি গ্রেপ্তার হলো। এ হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত আরও কিছু খুনির নাম পাওয়া গেছে। তবে তদন্তের স্বার্থে তাদের নাম বলা যাবে না। তারা পলাতক। তবে তাদের শিগগিরই গ্রেপ্তার করা হবে।

এই হত্যাকাণ্ডের পরদিন মূল পরিকল্পনাকারী আবুল কালাম আজাদ, তাঁর ভাই লোকমান হোসেন ও ইসাহাকের বাড়ির কেয়ারটেকার আনিকুল ইসলামকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। এ ঘটনায় দায়ের করা হত্যা মামলার অভিযোগপত্র এখনো আদালতে জমা দেয়নি পুলিশ।