খালেদা জিয়াকে মুক্ত করতে আইনি প্রক্রিয়ায় হাঁটুন: হানিফ

মাহবুব উল আলম হানিফ। প্রথম আলো ফাইল ছবি
মাহবুব উল আলম হানিফ। প্রথম আলো ফাইল ছবি

আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক মাহাবুব উল আলম হানিফ বলেছেন, বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে মুক্ত করতে হলে বিএনপিকে আইনি প্রক্রিয়ায় যেতে হবে। আন্দোলনের হুমকি দিয়ে লাভ হবে না। তিনি বলেন, কোনো কয়েদিকে আইনগতভাবে যে সুযোগ-সুবিধা দেওয়া হয়, বিএনপি চেয়ারপাসনকে আইনবহির্ভূতভাবে তার চেয়ে বেশি সুযোগ-সুবিধা দেওয়া হয়েছে।

আজ সোমবার বিকেলে রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন বাংলাদেশে (আইইবি) ‘ভবনের কর্মদক্ষতাভিত্তিক অগ্নিসুরক্ষা: বর্তমান প্রেক্ষিত’ শীর্ষক আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন। আওয়ামী লীগের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিবিষয়ক উপকমিটি এ সভার আয়োজন করে।

গতকাল খালেদা জিয়ার মুক্তির জন্য এক গণ–অনশন কর্মসূচিতে বিএনপির নেতারা তাঁকে আন্দোলনের মাধ্যমে মুক্ত করার কথা বলেন। সে প্রসঙ্গে মাহাবুব উল আলম হানিফ বলেন, ‘আন্দোলন করে খালেদা জিয়াকে মুক্ত করা যাবে না। এ ধরনের আন্দোলনের হুমকি দিয়ে কোনো লাভ হবে না।’ মানুষ বিএনপির আন্দোলনের সাড়া দেবে না জানিয়ে তিনি আরও বলেন, ‘সত্যিকার অর্থেই খালেদা জিয়ার জন্য উদগ্রীব থাকলে আইনি প্রক্রিয়ায় চেষ্টা করুন। আইনি প্রক্রিয়ায় যদি মুক্ত করা সম্ভব সেই পথে হাঁটেন। এর বাইরে অন্য কোনো পথে লাভ হবে না।’

সম্প্রতি প্যারোলে খালেদার মুক্তির বিষয় নিয়ে আলোচনা হচ্ছে। প্যারোল নিয়ে হানিফ বলেন, ‘প্যারোলে মুক্তির বিষয়টি কেন কীভাবে এসেছে আমরা জানি না। খালেদার পক্ষ থেকে যদি আবেদন করা হয়, সেটা স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বিবেচনা করতে পারে। এরা বাইরে আইনি প্রক্রিয়ায় খালেদা জিয়াকে মুক্ত করা সম্ভব হবে।’

আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত এই সাধারণ সম্পাদক বলেন, খালেদার রোগমুক্তি নিয়ে বিএনপি রাজনীতি করছে। খালেদাকে বেশি সুযোগ-সুবিধা দেওয়া হচ্ছে উল্লেখ করে হানিফ বলেন, ‘আমি তো আপনাদের দ্ব্যর্থহীনভাবে বলতে পারি, বাংলাদেশে শুধু নয়, পৃথিবীর কোনো দেশে কোনো কয়েদিকে আইনগতভাবে যে সুযোগ-সুবিধা দেওয়া হয়, আপনাদের নেত্রী খালেদা জিয়াকে তার চেয়েও বেশি আইনবহির্ভূতভাবে সুযোগ-সুবিধা দেওয়া হয়েছে।’

সাম্প্রতিক সময়ে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় বিএনপি নেতাদের দেওয়া বক্তব্যের সমালোচনা করেন মাহাবুবুল আলম হানিফ। তিনি বলেন, তারা শুধু সরকারের ব্যর্থতাই খুঁজে বেড়ায়, সফলতার কথা কখনো তাদের মুখে শোনা যায় না।

গত ১০ বছরে যে উন্নয়ন ঘটেছে, তাতে দেশ এখন অনেক দূর এগিয়েছে জানিয়ে এই আওয়ামী লীগ নেতা বলেন, দেশে আধুনিক ভবনও তৈরি হচ্ছে, উঁচু ভবনও তৈরি হচ্ছে। এ ধরনের ভবন যত বেশি তৈরি হচ্ছে, মানুষের একদিকে সুযোগ-সুবিধা বৃদ্ধি পাচ্ছে, পাশাপাশি জীবনের ঝুঁকিও বৃদ্ধি পাচ্ছে।

সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ডিজিটাল ইউনিভার্সিটির (বিডিইউ) উপাচার্য মুনাজ আহমেদ নূর। তিনি অগ্নিনিরাপত্তায় দক্ষ জনবল গড়তে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোয় ‘ফায়ার প্রটেকশন ইঞ্জিনিয়ারিং’ কোর্স চালু করার প্রস্তাব দেন। এ ছাড়া প্রতিটি ভবনে একজন ‘ফায়ার মার্শাল’ ও ওই ভবনের সব প্রতিষ্ঠানের নিজস্ব ‘সাবফায়ার মার্শাল’ রাখার প্রস্তাব করেন তিনি।

আওয়ামী লীগের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিবিষয়ক উপকমিটির চেয়ারম্যান মো. হোসেন মনসুরের সভাপতিত্বে সেমিনারে আরও বক্তব্য দেন ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের সাবেক মহাপরিচালক আলী আহম্মেদ খান, আইইবির সভাপতি আবদুস সবুর খান প্রমুখ।