কালিয়ায় আ. লীগের দুই পক্ষের সংঘর্ষ, নিহত ১

নড়াইলে আওয়ামী লীগের দুই পক্ষের সংঘর্ষে আজিজুর রহমান (৪৫) নামের এক ব্যক্তি নিহত এবং ২৫ জন আহত হয়েছেন। গতকাল সোমবার রাত ৭টার দিকে নড়াইলের কালিয়া উপজেলার কলাবাড়িয়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।

সংঘর্ষে আহত আজিজুর রহমানকে খুলনায় নেওয়ার পথে তাঁর মৃত্যু হয়। তিনি কালিয়া উপজেলার কলাবাড়িয়া গ্রামের বাসিন্দা। আহতদের খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ও কালিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে।

কলাবাড়িয়া গ্রামের ইদ্রিস শেখ, রোস্তম মোল্লাসহ কয়েকজন প্রত্যক্ষদর্শী বলেন, এলাকায় আধিপত্য বিস্তার নিয়ে কলাবাড়িয়া ইউনিয়নের ৩ নম্বর ওয়ার্ড সদস্য আবদুল কাইউম সিকদারের সঙ্গে একই গ্রামের আবেদ শেখের দীর্ঘদিন ধরে সংঘাত চলে আসছে। গতকাল বিকেলে কলাবাড়িয়া হাটে কাইউম সিকদারের সঙ্গে আবেদ শেখের তর্কাতর্কি হয়। এ সময় কাইউম সিকদার বাড়ি ফিরে গিয়ে তাঁর পক্ষের লোকজন নিয়ে আবেদ শেখের বাড়িতে হামলা চালানোর চেষ্টা করেন। আবেদ শেখের লোকজন প্রতিহত করতে গেলে কাইউম সিকদার গুলি করে আবেদ শেখের লোকজনকে হটিয়ে দেন। পরে উভয় পক্ষের লোকজন স্থানীয় বিলাফার বিলে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন। সংঘর্ষে অন্তত ২৬ জন আহত হন। খুলনায় নেওয়ার পথে আজিজুর মারা যান। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ ১০/১২টি ফাঁকা গুলি ছোড়ে। নিহত আজিজুর আবেদ শেখের পক্ষের লোক।

আজ মঙ্গলবার সরেজমিনে দেখা গেছে, কলাবাড়িয়া বাজারসহ ইউনিয়নের গোটা এলাকা পুলিশ বেষ্টনীতে ঘিরে রাখা হয়েছে। গ্রেপ্তার এড়াতে কলাবাড়িয়া গ্রাম পুরুষশূন্য হয়ে পড়েছে। বাড়ির নারীরা আতঙ্কের মধ্যে আছেন। কলাবাড়িয়া গ্রামের রোস্তম শেখের স্ত্রী রোখছানা বেগম বলেন, ‘বাড়িতে কোনো পুরুষ মানুষ নাই। সবাই পলাইছে। ছোট ছেলেটারে নিয়ে ভয়ে ভয়ে সারা রাত বসে কাটাইছি।’

কলাবাড়িয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মাহামুদুল হাসান কায়েস বলেন, কাইউম সিকদার ৩ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সদস্য এবং আবেদ শেখ ২ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক। এলাকার আধিপত্য বিস্তার নিয়ে দুজনের মধ্যে দীর্ঘদিন দ্বন্দ্ব-সংঘাত চলে আসছে। গতকাল বিকেলে সংঘর্ষের সময় কাইউম সিকদারের পক্ষে বিএনপি-জামায়াতের লোকজন জোটবদ্ধ হয়ে আবেদ শেখের লোকজনের ওপর হামলা চালান। আবেদ শেখের লোকজন পাশের বিলাফার বিলে আশ্রয় নিলে উভয় পক্ষের লোকজন সেখানে সংঘর্ষে জড়ান। অবস্থার অবনতি হওয়ায় আবেদ শেখকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়েছে।

নড়াগাতি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো.আলমগীর হোসেন ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে ১২টি ফাঁকা গুলি ছোড়ে। এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। পরিস্থিতি এখন শান্ত আছে।