বিআরটিএর ৫ অফিসে দুদকের অভিযান, ৫ দালালের কারাদণ্ড

বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআরটিএ) পাঁচটি অফিসে অভিযান চালিয়ে ব্যাপক অনিয়মের প্রমাণ পেয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। এ সময় ছয়জনকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দিয়েছে কর্তৃপক্ষ। কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে পাঁচজন দালালকে।

আজ মঙ্গলবার বিআরটিএর পাঁচ দপ্তরসহ সাতটি জায়গায় অভিযান চালিয়েছে দুদক। সংস্থার উপপরিচালক (জনসংযোগ) প্রণব কুমার ভট্টাচার্য প্রথম আলোকে এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

ড্রাইভিং লাইসেন্স ও গাড়ির ফিটনেস সার্টিফিকেট দেওয়া, লাইসেন্স নবায়ন, গাড়ির মালিকানা পরিবর্তন, ডিজিটাল নাম্বার প্লেট দেওয়াসহ নানা সেবায় ঘুষ-দুর্নীতি ও অনিয়মের অভিযোগের পেয়ে পাঁচ জেলায় বিআরটিএ কার্যালয়ে অভিযান পরিচালনা করা হয়। দুদক এনফোর্সমেন্ট ইউনিটের তত্ত্বাবধানে দুদক প্রধান কার্যালয়, হবিগঞ্জ, বগুড়া, বরিশাল ও টাঙ্গাইল সমন্বিত জেলা কার্যালয় থেকে একযোগে এসব অভিযান পরিচালনা করা হয়।

দুদক জানিয়েছে, অভিযানে সেবা দেওয়ার বিভিন্ন পর্যায়ে দুর্নীতি-অনিয়ম, দায়িত্বে অবহেলা ও বিশৃঙ্খলার প্রমাণ পায় দুদকের দলগুলো।

ঢাকার কেরানীগঞ্জের ইকুরিয়ার বিআরটিএ কার্যালয়ে অভিযান চলার সময় দায়িত্বে অবহেলার প্রমাণ পায় দুদক দল। এ কারণে সহকারী পরিচালক (ইঞ্জি.) নূরুল ইসলাম ও হারুন অর রশিদ, মোটরযান পরিদর্শক মাহবুবুর রহমান, উচ্চমান সহকারী ছগির আকন্দ, অফিস সহকারী মো. আজিম ও আনসার সদস্য সৈয়দ হোসেনকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দিয়েছে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ।

বগুড়া বিআরটিএ কার্যালয়ে অভিযান চলার সময় সেবাপ্রার্থীদের কাছ থেকে অনৈতিকভাবে টাকা নেওয়ার সময় স্থানীয় জেলা প্রশাসনের ভ্রাম্যমাণ আদালত চার দালালকে এক মাস করে বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেন। একই রকম অপরাধে হবিগঞ্জে অভিযান চলার সময় এক দালালকে ১৫ দিনের কারাদণ্ড ও একজনকে আর্থিক জরিমানা করেন ভ্রাম্যমাণ আদালত। বরিশাল ও টাঙ্গাইলের বিআরটিএ অফিসে অভিযান চালানোর সময় দুদক দলের উপস্থিতি টের পেয়ে দালালেরা পালিয়ে যায়।

স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা অফিসে অভিযান
রোগীদের হয়রানি ও নিয়মমাফিক ওষুধ না দেওয়ার অভিযোগ পেয়ে নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লার কাশিপুর স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা অফিসে অভিযান চালায় দুদক দল। সেখানে গিয়ে উপসহকারী পরিবার পরিকল্পনা পরিদর্শক আবু বকর সিদ্দিককে দপ্তরে অনুপস্থিত পাওয়া যায়। সেখানকার উপসহকারী কমিউনিটি মেডিকেল অফিসার জাকির হোসেনের বিরুদ্ধে উপস্থিত রোগীরা দুর্ব্যবহারের অভিযোগ করেন। তাঁদের দুজনকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দিয়েছে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ।

পাবনায় নদী খননে নিয়ম লঙ্ঘন
পাবনায় ৪৪ কোটি টাকা ব্যয়ে আত্রাই নদ খনন করে তোলা মাটি নদীর ৪০০ ফুট দূরে ফেলার নির্দেশনা মানা হচ্ছে না—দুদক অভিযোগ কেন্দ্রে পাওয়া এ অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে অভিযান চালায় দুদকের পাবনা জেলা কার্যালয়। সেখানে দলটি অভিযোগের সত্যতা পায়। দেখা যায়, যথানিয়মে কাজ না করে নদীর পাশেই মাটি ফেলে সরকারি অর্থের অপচয় করা হচ্ছে। এ অনিয়মের অভিযোগে খননকাজ স্থগিত করা হয়। দুদকের দলটি এর সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সব নথিপত্র সংগ্রহ করে।