রাসেলের সঙ্গে যোগাযোগ করেনি গ্রিন লাইন

বাসচাপায় পা হারানো রাসেল সরকার রিট আবেদনের শুনানির জন্য সপরিবারে হাইকোর্ট চত্বরে। প্রথম আলাে ফাইল ছবি
বাসচাপায় পা হারানো রাসেল সরকার রিট আবেদনের শুনানির জন্য সপরিবারে হাইকোর্ট চত্বরে। প্রথম আলাে ফাইল ছবি

বাসের চাপায় পা হারানো রাসেল সরকারের সঙ্গে গ্রিন লাইন পরিবহন কর্তৃপক্ষ এখনো কোনো যোগাযোগ করেনি। মঙ্গলবার রাতে এমনটি জানিয়েছেন রাসেল সরকার। গ্রিন লাইন পরিবহন কর্তৃপক্ষকে রাসেল সরকারকে ৫০ লাখ দিতে হাইকোর্ট যে আদেশ দিয়েছিলেন, তা বাস্তবায়নের বিষয়ে আদেশের জন্য আজ বুধবার হাইকোর্টে দিন ধার্য রয়েছে।

হাইকোর্টের আদেশ স্থগিত চেয়ে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির পক্ষে মঙ্গলবার দুপুরে চেম্বার আদালতে একটি আবেদন নিয়ে যাওয়া হয় বলে জানান রিট আবেদনকারী সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী উম্মে কুলসুম। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ‘মালিক সমিতির পক্ষে সহসভাপতি মাহবুবুর রহমান আবেদনটি করেন। এতে হাইকোর্টের ১২ মার্চ দেওয়া আদেশ স্থগিত চাওয়া হয়। শুনেছি, আবেদনের পক্ষে লড়তে আইনজীবী আবদুল মতিন খসরুকে নিয়ে যাওয়া হয়। তবে তিনি মামলা পরিচালনায় অসম্মতি জানালে আবেদনটি বুধবার শুনানির জন্য রাখা হয়।’

যোগাযোগ করা হলে আবদুল মতিন খসরু প্রথম আলোকে বলেন, ‘মালিক সমিতির পক্ষে মামলাটি লড়ার জন্য অনুরোধ করা হয়েছিল। তবে ঘটনা জানার পর আমি মানসিকভাবে ভিকটিমের পক্ষে। তাই মামলা পরিচালনায় অপারগতা প্রকাশ করেছি।’

মালিকদের সংগঠন ওই মামলায় যুক্ত হতে সুপ্রিম কোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় আবেদন করেছে বলে মঙ্গলবার অনলাইন মাধ্যমেও খবর প্রকাশিত হয়। এ বিষয়ে আইনজীবী উম্মে কুলসুম বলেন, এই মামলায় পক্ষভুক্ত হতে হলে হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট বেঞ্চে আবেদন করতে হবে।

রাসেলের পা হারানোর ঘটনায় কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ চেয়ে আইনজীবী উম্মে কুলসুমের করা এক রিটের পরিপ্রেক্ষিতে গত ১২ মার্চ হাইকোর্ট এক আদেশে দুই সপ্তাহের মধ্যে রাসেলকে ৫০ লাখ টাকা দিতে গ্রিন লাইন পরিবহন কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দেন। সেই সঙ্গে প্রয়োজন হলে তাঁর পায়ে অস্ত্রোপচার এবং কাটা পড়া বাঁ পায়ে সর্বাধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করে কৃত্রিম পা লাগানোর খরচ দিতে ওই পরিবহন কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দেওয়া হয়। এর অগ্রগতি হলফনামা আকারে ৩১ মার্চের মধ্যে আদালতে দাখিল করতেও বলা হয়।

তবে হাইকোর্টের ১২ মার্চের আদেশের বিরুদ্ধে গ্রিন লাইন পরিবহন আপিল বিভাগ আবেদন করে, যা ৩১ মার্চ খারিজ হয়। ফলে হাইকোর্টের আদেশ বহাল থাকে। এরপর সেদিন হাইকোর্ট ইতিপূর্বে দেওয়া আদেশ ৩ এপ্রিলের মধ্যে গ্রিন লাইন পরিবহন কর্তৃপক্ষকে বাস্তবায়ন করতে বলে আদেশের জন্য ৪ এপ্রিল দিন রাখেন।

ধার্য তারিখে গ্রিন লাইন পরিবহনের মহাব্যবস্থাপক আদালতে হাজির হয়ে জানান, গ্রিন লাইন পরিবহনের মালিক চিকিৎসার জন্য দেশের বাইরে আছেন, ৯ এপ্রিল ফিরবেন। এরপর হাইকোর্ট ১০ এপ্রিল আদেশের জন্য দিন ধার্য করেন। শুনানিকালে সেদিন গ্রিন লাইনের আইনজীবী ও মহাব্যবস্থাপকের উদ্দেশে আদালত বলেন, ১০ এপ্রিল আদেশ বাস্তবায়ন বিষয়ে হলফনামা দেবেন। টাকা না দিতে পারলে ১১ তারিখের টিকিট বিক্রি করবেন না। অগ্রিম টিকিট বিক্রি করে জনগণকে ভোগান্তিতে ফেলবেন না।