৫৭৫ মিটারে যত ভোগান্তি

সখীপুর-গারো বাজার সড়কের খাদ্যগুদাম এলাকায় গর্তে পানি জমে বেহাল অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। গত বুধবার দুপুরে তোলা।  ছবি: প্রথম আলো
সখীপুর-গারো বাজার সড়কের খাদ্যগুদাম এলাকায় গর্তে পানি জমে বেহাল অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। গত বুধবার দুপুরে তোলা। ছবি: প্রথম আলো

টাঙ্গাইলের সখীপুর-গারোবাজারের ৩০ কিলোমিটার সড়কের দুটি স্থানের মাত্র ৫৭৫ মিটারে ঠিকাদার কাজ না করে ফেলে রাখায় ভোগান্তি পোহাচ্ছে যাত্রীরা। একটু বৃষ্টি হলেই ওই স্থানে সড়ক কাদাপানিতে ডুবে যায়।

স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি) ও এলাকার কয়েকজন বাসিন্দার সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, সখীপুর বাজার থেকে ঘাটাইলের গারোবাজারপর্যন্ত ৩০ কিলোমিটার সড়কটি আগামী পাঁচ বছর পর্যন্ত রক্ষণাবেক্ষণের জন্য কাজটি পায় হক ইন্টারন্যাশনাল নামের একটি ঠিকাদারি সংস্থা। বরাদ্দ হয় ৯ কোটি ৩৪ লাখ টাকা।

এ বিষয়ে ২০১৭ সালের ২০ জুন এলজিইডির সঙ্গে ওই ঠিকাদারের চুক্তি হয়। চুক্তি অনুযায়ী ওই ঠিকাদার বছরখানেক ওই সড়কের রক্ষণাবেক্ষণের কাজ করলেও সখীপুর মুখতার ফোয়ারা থেকে খাদ্যগুদাম পর্যন্ত ৫০০ মিটার ও বড়চওনা বাজারে ৭৫ মিটার সড়কে তিনি কোনো কাজ না করে ফেলে রাখেন। পরবর্তী সময়ে কৌশল করে ওই ঠিকাদার এলজিইডির প্রধান কার্যালয়ে যোগাযোগ ও আবেদন করে চুক্তি থেকে ৫৭৫ মিটার সড়ক কেটে আনেন। ফলে ঠিকাদারের কৌশলের কারণে ভোগান্তিতে পড়েছে চলাচলকারী গাড়ি ও যাত্রীরা।

গত বুধবার সখীপুর খাদ্যগুদামের কাছে গিয়ে দেখা যায়, কয়েক দিনের সামান্য বৃষ্টিতে কোথাও পানি না জমলেও ওই সড়কের ৫০০ মিটার পর্যন্ত পুরো সড়কই কাদাপানিতে ডুবে আছে। হেলেদুলে ও বড় বড় গর্ত দিয়ে ঝুঁকি নিয়ে বাস-ট্রাকসহ শত শত গাড়ি চলাচল করছে। স্থানীয় লোকজন বিকল্প সড়ক ব্যবহার করছেন। ব্যক্তিগত গাড়ির চালক রফিকুল ইসলাম বলেন, গর্তের মধ্যে গাড়ি অর্ধেক ডুবে যায়। ওই সড়ক দিয়ে একবার গেলে গাড়ি ধুয়ে–মুছে পরিষ্কার করে নিতে হয়।

ভাঙা সড়কের পাশের দোকানদার শমসের আলী বলেন, ‘সড়ক ভেঙে গর্ত হওয়ায় ও সড়কে কাদাপানি থাকায় ক্রেতারা আমাদের দোকানে আসছে না। গত বছর ওই সড়কের সব দোকানদার একত্র হয়ে মানববন্ধন ও মিছিল করেছিলেন।’

ওই সড়কের ঠিকাদার উপজেলা আওয়ামী লীগের জ্যেষ্ঠ যুগ্ম সম্পাদক, জেলা পরিষদের সদস্য গোলাম কিবরিয়া বলেন, ‘ওই ৫৭৫ মিটার সড়ক স্বাভাবিকভাবে পাকা করলে পানি জমে গিয়ে সহজেই নষ্ট হয়ে যেত। আরসিসি ঢালাই করা ছাড়া ওই সড়ক টিকবে না। তাই আমার চুক্তিপত্র থেকে ওই ৫৭৫ মিটার সড়ক বাদ দেওয়া হয়েছে।’

এ বিষয়ে জানতে চাইলে এলজিইডির উপজেলা প্রকৌশলী কাজী ফাহাদ কুদ্দুস গত বুধবার প্রথম আলোকে বলেন, ওই ৫৭৫ মিটার সড়ক আরসিসি ঢালাই করার লক্ষ্যে ২ কোটি ২ লাখ টাকা বরাদ্দ হয়েছে। টাঙ্গাইলের তরফদার এন্টারপ্রাইজ কাজটি পেয়েছে। শিগগিরই ঢালাইয়ের কাজ শুরু হবে।