দুদকের মামলায় দুই ব্যাংক কর্মকর্তার তিন বছর কারাদণ্ড

আইন ও বিচার
আইন ও বিচার

ফরিদপুরে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) দায়ের করা এক মামলায় দুই ব্যাংক কর্মকর্তাসহ তিনজনকে অর্থদণ্ডসহ কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। এ ছাড়া অপরাধ প্রমাণিত না হওয়ায় একজন খালাস পেয়েছেন। আজ মঙ্গলবার বেলা দেড়টার দিকে এ আদেশ দেন জেলার বিশেষ জজ আদালতের হাকিম মো. মতিয়ার রহমান।

আদালত সূত্রে জানা গেছে, দণ্ডপ্রাপ্ত ওই দুই ব্যাংক কর্মকর্তার একজন হলেন ফরিদপুর শহরের ভাটিলক্ষ্মীপুর এলাকার বাসিন্দা এস এফ শাহ ফরহাদ হোসেন। তিনি ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংক (ইউসিবিএল) ফরিদপুর শাখার সাবেক ব্যবস্থাপক পদে কর্মরত ছিলেন। বর্তমানে ওই ব্যাংকেরই ঢাকার প্রধান অফিসের করপোরেট শাখায় অ্যাসিস্ট্যান্ট ভাইস প্রেসিডেন্ট পদে কর্মরত। অন্যজন হলেন একই জেলার সদরপুর উপজেলার কৃষ্ণপুর ইউনিয়নের বাসিন্দা মো. মুরাদ মোর্শেদ। তিনি ইউসিবিএলের ফরিদপুর শাখার সাবেক জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা। বর্তমানে ইউসিবিএলের বরিশাল শাখায় অ্যাসিস্ট্যান্ট ভাইস প্রেসিডেন্ট হিসেবে কর্মরত। এ ছাড়া ওই দুই ব্যাংক কর্মকর্তার সঙ্গে অভিযুক্ত হিসেবে ছিলেন মো. রবিউল হক। তিনি ওই মামলার এক নম্বর আসামি। রবিউল হক ফরিদপুরের কমলাপুর এলাকায় মেসার্স হক এন্টারপ্রাইজ নামের একটি ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান পরিচালনা করেন।

আদালত সূত্রে জানা গেছে, ওই দুই ব্যাংক কর্মকর্তাকে দোষী সাব্যস্ত করে তিন বছরের সশ্রম কারাদণ্ডের আদেশ দেন আদালত। এ ছাড়া তাঁদের নগদ ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে। জরিমানা দিতে ব্যর্থ হলে আরও তিন মাস বিনাশ্রম কারাদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন আদালত। মামলার এক নম্বর আসামি রবিউলকে তিন বছর সশ্রম কারাদণ্ডের সঙ্গে নগদ ৩৭ লাখ ৬২ হাজার ৩৩৩ টাকা জরিমানা করেছেন আদালত। জরিমানা অনাদায়ে তাঁকে আরও ছয় মাস বিনাশ্রম কারাদণ্ড ভোগ করতে হবে। তবে ফরিদপুরের রথখোলা এলাকার মো. কবিরুল ইসলাম সিদ্দিকী নির্দোষ প্রমাণিত হওয়ায় আদালত তাঁকে বেকসুর খালাস দেন।

ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে ফরিদপুর দুর্নীতি দমন কমিশনের সমন্বিত জেলা কার্যালয়ের পিপি শরীফ কায়সার রহমান বলেন, রায় ঘোষণার সময় ওই দুই ব্যাংক কর্মকর্তা আদালতে হাজির ছিলেন। রায় ঘোষণার পর তাঁদের কারাগারে পাঠানো হয়। তবে মামলার প্রধান আসামি রবিউল পলাতক।

আদালতের নথি থেকে জানা যায়, মেসার্স হক এন্টারপ্রাইজ একটি নামসর্বস্ব প্রতিষ্ঠান। ওই প্রতিষ্ঠানের স্বত্বাধিকারী রবিউলের সঙ্গে যোগসাজশ করে ব্যাংকে কোনো মর্টগেজ (বন্ধক) না রেখে ঋণের নামে অর্থ আত্মসাৎ করে ওই তিনজন। ব্যাংক থেকে নেওয়া ঋণের পরিমাণ ছিল ৩৭ লাখ ৬২ হাজার ৩৩৩ টাকা।

অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে ২০১১ সালের ১৫ নভেম্বর দুর্নীতি দমন কমিশন অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে একটি মামলা করে। সেই সময় কমিশনের প্রধান কার্যালয়ের উপপরিচালক মো. আবুবকর সিদ্দিক বাদী হয়ে ফরিদপুর কোতোয়ালি থানায় চারজনকে অভিযুক্ত করে এই মামলা করেন।