দুদকের অভ্যন্তরীণ তদন্ত প্রতিবেদন তলব করেছেন হাইকোর্ট

জাহালম।  ফাইল ছবি
জাহালম। ফাইল ছবি

নিরীহ জাহালমের কারাভোগ নিয়ে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) অভ্যন্তরীণ তদন্ত প্রতিবেদন তলব করেছেন হাইকোর্ট। আজ বুধবার বিচারপতি এফ আর এম নাজমুল আহাসান ও বিচারপতি কামরুল কাদেরের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন।

সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী অমিত দাশ গুপ্ত প্রথম আলোকে বলেন, নিরীহ জাহালমের তিন বছর কারাভোগ নিয়ে দুদক অভ্যন্তরীণ একটি তদন্ত করছে। আদালত দুদকের সেই তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন। জাহালমের কারাভোগসংক্রান্ত আবেদনের ওপর শুনানির দিন ছিল আজ। তবে এ–সংক্রান্ত মামলার মূল নথি আরেকটি হাইকোর্ট বেঞ্চ থেকে এ আদালতে এসে পৌঁছায়নি। আগামী ২ মে শুনানির নতুন দিন ঠিক করেছেন আদালত। গত সপ্তাহে আদালত জাহালমকে হাজির করতে বলেছিলেন। জাহালম আদালতে আজ হাজির ছিলেন।

অমিত দাশ গুপ্ত বলেন, জাহালমকে তিনি আজ আদালতে হাজির করেন। আগামী শুনানির তারিখেও জাহালমকে তিনি হাজির করবেন। এর আগে গত ৬ মার্চ হাইকোর্ট সোনালী ব্যাংকের সাড়ে ১৮ কোটি টাকা ঋণ জালিয়াতিসংক্রান্ত ৩৩টি মামলার সব কাগজপত্র দুদককে জমা দেওয়ার নির্দেশ দেন। আদালত সেদিন বলেছিলেন, ঋণ জালিয়াতির ঘটনায় কতজন ব্যাংক অফিসারের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দেওয়া হয়েছে? আমরা সব দেখব। দুদক যখন জানতে পারল জাহালম নির্দোষ তখন তাঁর জামিন করানো উচিত ছিল। আদালতের আদেশের পর গত ১০ এপ্রিল দুদক ৩৩টি মামলার মধ্যে একটি মামলার কাগজপত্র আদালতে জমা দিয়েছেন।

অমিত দাশ গুপ্ত জানালেন, আজ দুদকের পক্ষ থেকে বাকি মামলার কাগজপত্র জমা দেওয়া হয়নি। দুদকের পক্ষ থেকে শুনানি করেন খুরশীদ আলম খান। আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে উপস্থিত ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এবিএম আবদুল্লাহ আল মাহমুদ বাশার।

গত ৩০ জানুয়ারি প্রথম আলোয় ‘স্যার, আমি জাহালম, সালেক না’ শীর্ষক প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। প্রতিবেদনটি সেদিন বিচারপতি এফ আর এম নাজমুল আহসান ও বিচারপতি কামরুল কাদেরের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চের নজরে আনেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী অমিত দাশ গুপ্ত। শুনানি নিয়ে আদালত জাহালমের আটকাদেশ কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চেয়ে স্বতঃপ্রণোদিত রুল জারি করেন। একই সঙ্গে নিরীহ জাহালমের গ্রেপ্তারের ঘটনার ব্যাখ্যা দিতে দুদক চেয়ারম্যানের প্রতিনিধি, মামলার বাদী দুদক কর্মকর্তা, স্বরাষ্ট্রসচিবের প্রতিনিধি ও আইনসচিবের প্রতিনিধিকে ৩ ফেব্রুয়ারি সশরীরে আদালতে হাজির থাকার নির্দেশ দেন হাইকোর্ট।

এরই ধারাবাহিকতায় সেদিন দুদক চেয়ারম্যানের প্রতিনিধি হিসেবে দুদকের মহাপরিচালক (তদন্ত), মামলার বাদী আবদুল্লাহ আল জাহিদ, স্বরাষ্ট্রসচিবের (সুরক্ষা) প্রতিনিধি যুগ্ম সচিব সৈয়দ বেলাল হোসেন এবং আইনসচিবের প্রতিনিধি সৈয়দ মুশফিকুল ইসলাম আদালতে হাজির হন। আর সেদিনই শুনানি নিয়ে জাহালমকে মুক্তি দেওয়ার নির্দেশ দেন হাইকোর্ট।