পুলিশের বিরুদ্ধে মামলা করে প্রত্যাহার চান বাদী

৩০ লাখ টাকা ঘুষ না দেওয়ায় এক ব্যবসায়ীকে মাদক মামলায় ফাঁসানোর অভিযোগে ৬ পুলিশসহ ৯ জনের বিরুদ্ধে আদালতে করা মামলা প্রত্যাহারের আবেদন করেছেন বাদী। গত মঙ্গলবার চট্টগ্রাম মহানগর দায়রা জজ মো. আকবর হোসেন মৃধার আদালতে আবেদনটি করেন নগরের পতেঙ্গা থানার আওয়ামী লীগের সাবেক নেতা নুরুল আবছার। গতকাল আদালত আদেশে উল্লেখ করেন, মামলাটি প্রত্যাহারের আবেদনের ওপর আগামী ৮ মে ধার্য দিনে শুনানি হবে।

গত ২৫ মার্চ মহানগর দায়রা জজ আদালতে নালিশি মামলাটি করা হয়েছিল। পরে আদালত দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) তদন্তের নির্দেশ দিয়েছিলেন। অভিযুক্তরা হলেন পতেঙ্গা থানার সাবেক ওসি আবুল কাসেম ভূঁইয়া, এসআই তরুণ কান্তি শর্মা, প্রণয় প্রকাশ, আবদুল মোমিন, এএসআই মো. কামরুজ্জামান, মিহির কান্তি, সোর্স মো. ইলিয়াছ, মো. জসিম ও নুরুল হুদা। তবে অভিযোগ অস্বীকার করে পুলিশ দাবি করেছে বাদী একজন মাদক ব্যবসায়ী। একজন বোটের চালক ছিলেন। কয়েক বছরের ব্যবধানে তিনি অনেক টাকার মালিক হয়ে যান। মাদক ব্যবসা না থাকলে এটি সম্ভব না। মাদক পাওয়ায় তাঁর বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। ফাঁসানো হয়নি।

বাদী মামলার আরজিতে অভিযোগ করেন, গত বছরের ১ জুন তাঁকে পতেঙ্গা থানায় ডেকে নিয়ে যাওয়া হয়। এরপর তাঁকে থানায় আটকে রেখে ৩০ লাখ টাকা দাবি করা হয়। নাহলে ক্রসফায়ারের হুমকি দেওয়া হয়। বাধ্য হয়ে আবছারকে ছাড়াতে ১৫ লাখ টাকা আত্মীয়স্বজনদের কাছ থেকে ঋণ নিয়ে এসআই আবদুল মোমিন ও এএসআই কামরুজ্জামানের হাতে তুলে দেওয়া হয়। কিন্তু আরও ১৫ লাখ টাকা না দেওয়ায় তিন দিন দুই রাত আবছারকে থানায় আটকে রাখা হয়। এরপর ৪০ বোতল বিদেশি মদ উদ্ধার দেখিয়ে তাঁকে মাদক মামলায় আদালতে পাঠানো হয়। দুই মাস পর তিনি কারাগার থেকে মুক্তি পান।

চট্টগ্রাম মহানগর সরকারি কৌঁসুলি মো. ফখরুদ্দিন চৌধুরী বলেন, মামলাটি প্রত্যাহারের জন্য বাদী আবেদন করেছেন। শুনানি শেষে আদালত আদেশ দেবেন। আবেদনে বাদী উল্লেখ করেছেন, মামলাটি তিনি প্রত্যাহার করে নিতে চান। এই বিষয়ে তিনি দুদককেও কোনো বক্তব্য দেবেন না। মুরব্বিদের পরামর্শে তিনি সমঝোতা চান। তবে হুমকিতে মামলাটি প্রত্যাহার চান কিনা আবেদনে উল্লেখ করেননি।

পতেঙ্গা থানার ওসি আবুল কাসেম ভূঁইয়া বর্তমানে পাঁচলাইশ থানায় কর্মরত আছেন। গতকাল সন্ধ্যায় তিনি প্রথম আলোকে বলেন, পুলিশের পক্ষ থেকে মামলা প্রত্যাহারের কোনো হুমকি দেওয়া হয়নি বাদীকে। কেন মামলা করলেন তিনিই ভালো বলতে পারেন।