নুসরাত হত্যাকাণ্ড: অবৈধ লেনদেন অনুসন্ধানে ব্যাংকে পিবিআই

নুসরাত জাহান।
নুসরাত জাহান।

ফেনীর সোনাগাজীতে আগুনে পুড়িয়ে মাদ্রাসাছাত্রী নুসরাত জাহান রাফিকে হত্যার ঘটনায় অবৈধ অর্থ লেনদেনের উৎস অনুসন্ধানে সোনাগাজীর বিভিন্ন ব্যাংকের শাখা পরিদর্শন করেছে পিবিআই।

আজ রোববার দুপুরে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) চট্টগ্রাম বিভাগীয় বিশেষ পুলিশ সুপার মো. ইকবালের নেতৃত্বে চার সদস্যের একটি দল ব্যাংকগুলোতে গিয়ে মামলার আসামিদের ব্যাংক হিসাব খতিয়ে দেখে।

পিবিআইয়ের বিশেষ পুলিশ সুপার মো. ইকবাল গণমাধ্যমকর্মীদের বলেন, নুসরাত হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় কোনো ধরনের অবৈধ অর্থ লেনদেন হয়েছে কি না, তাঁরা তা খতিয়ে দেখছেন। সোনাগাজীতে জনতা, ইসলামী ব্যাংকসহ আরও কয়েকটি ব্যাংক পরিদর্শন করেন। তিনি বলেন, জেলা শহরেও বেশ কয়েকটি ব্যাংকের শাখা পরিদর্শন করে হত্যাকাণ্ডের অবৈধ লেনদেনের উৎস খুঁজে বের করা হবে। এখন পর্যন্ত কোনো তথ্য পেয়েছেন কি না? জানতে চাইলে তদন্তের স্বার্থে এ বিষয়ে তিনি মন্তব্য করতে রাজি হননি।

পুলিশ সুপার বলেন, হত্যাকাণ্ডে সরাসরি অংশগ্রহণকারী ও মামলার এজাহারভুক্ত আসামি যোবায়ের আহম্মদকে আজ রোববার দুপুরে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি রেকর্ড করার জন্য ফেনীর আদালতে হাজির করা হয়েছে। এ ছাড়া গতকাল শনিবার রাঙামাটি ও কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামের বাসস্ট্যান্ড এলাকা থেকে গ্রেপ্তার ইফতেখার উদ্দিন ওরফে রানা ও ইমরান হোসেন ওরফে মামুনকে আদালতে হাজির করা হয়েছে। এ সময় চট্টগ্রাম পিবিআইয়ের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. মঈন উদ্দিন, নোয়াখালী পিবিআইয়ের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার বাসু দত্ত, পিবিআইয়ের পরিদর্শক মো. জাহিদুর রহমানসহ প্রশাসনের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

পিবিআইয়ের পরিদর্শক ও মামলার তদন্ত কর্মকর্তা মো. শাহ আলম প্রথম আলোকে বলেন, রোববার বিকেল চারটার দিকে ফেনীর জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম শরাফ উদ্দিনের আদালতে আসামি যোবায়ের হোসেনের স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি রেকর্ড করা হয়েছে। অপর দুই আসামিকেও আদালতের মাধ্যমে ফেনীর কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

৬ এপ্রিল ফেনীর সোনাগাজীতে মাদ্রাসাছাত্রী নুসরাত জাহান রাফি পরীক্ষা দিতে গেলে দুর্বৃত্তরা তাঁর গায়ে আগুন লাগিয়ে দেয়। গুরুতর অবস্থায় রাতে তাঁকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। ১০ এপ্রিল রাত সাড়ে নয়টার দিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে নুসরাত মারা যান। এ হত্যাকাণ্ডে এ পর্যন্ত উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি রুহুল আমিনসহ ২১ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। মামলার এজাহারভুক্ত ৮ জন আসামির সবাইকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গ্রেপ্তারকৃত ১৫ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করছে পিবিআই।

এর আগে গত ২৭ মার্চ ওই মাদ্রাসার অধ্যক্ষ সিরাজ উদদৌলার বিরুদ্ধে শ্লীলতাহানির অভিযোগে মামলা করেন নুসরাতের মা। নুসরাত চিকিৎসকদের কাছে দেওয়া শেষ জবানবন্দিতে বলেছিলেন, নেকাব, বোরকা ও হাতমোজা পরা পাঁচজন তাঁর গায়ে আগুন ধরিয়ে দেন।