ছয় তলা থেকে ফেলে দিয়ে হত্যা

ছবিটি প্রতীকী
ছবিটি প্রতীকী

রাজধানীর যাত্রাবাড়ীতে মিন্টু মিয়াকে (৩৩) ছাদ থেকে ফেলে দিয়ে হত্যা করার অভিযোগে হানিফ মিয়া (৩৭) নামের এক ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করেছে যাত্রাবাড়ী থানা-পুলিশ।এই হত্যাকাণ্ডের রহস্য উদ্‌ঘাটনে হানিফ মিয়াকে দুই দিন পুলিশ হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করার অনুমতি দিয়েছেন ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিম (সিএমএম) আদালত। হানিফ মিয়া এখন যাত্রাবাড়ী থানা-পুলিশ হেফাজতে আছেন।

যাত্রাবাড়ী থানা-পুলিশ আদালতকে প্রতিবেদন দিয়ে বলেছে, পূর্বপরিকল্পিতভাবে ১৭ এপ্রিল ভোরে মিন্টু মিয়াকে নৃশংসভাবে খুন করা হয়। দক্ষিণ সায়েদাবাদ এলাকায় লালু মিয়ার বাড়ির ছয় তলার ছাদ থেকে মিন্টুকে ধাক্কা দিয়ে নিচে ফেলে দেয় খুনিরা। তদন্তে জানা গেছে, নৃশংস এই হত্যাকাণ্ডে আসামি হানিফ মিয়া জড়িত আছেন।

এ ঘটনায় নিহত মিন্টু মিয়ার স্ত্রী সাথী আক্তার বাদী হয়ে যাত্রাবাড়ী থানায় পাঁচজন আসামিসহ অজ্ঞাত আরও দুই থেকে তিনজনের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা করেন। এজাহারভুক্ত আসামিরা হলেন, হানিফ মিয়া (৩৭), জাহাঙ্গীর (৪২), মস্তান (৩৫), মাসুদ (৩৮) এবং আবু মিয়া (৩২)।

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা যাত্রাবাড়ী থানার উপপরিদর্শক (এসআই) জুলফিকার আলী আজ রোববার রাতে মুঠোফোনে প্রথম আলোকে বলেন, মিন্টু মিয়া খুনের জড়িত থাকার অভিযোগে হানিফ মিয়াকে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করছেন। অবশ্য হানিফ খুনের দায় স্বীকার করছেন না। তবে স্বীকার করেছেন, সেদিন তাঁরা একসঙ্গে আড্ডা মেরেছিলেন।

পুলিশ কর্মকর্তা জুলফিকার বলছেন, যাদের বিরুদ্ধে খুনের মামলা করা হয়েছে তাঁর সবাই নিহত মিন্টু মিয়ার পূর্বপরিচিত। তাঁরা একসঙ্গে চলাফেরা করতেন। মিন্টু মিয়ার কাছ থেকে মোটর শ্রমিক ইউনিয়নের একটি কার্ড পাওয়া গেছে। তবে মিন্টু মিয়া কী কারণে খুন হয়েছে তা এখনো জানা যায়নি। অন্য আসামিদের গ্রেপ্তারের অভিযান চালানো হচ্ছে।

মিন্টু মিয়ার স্ত্রী মামলার এজাহারে বলেছেন, গত ১৬ এপ্রিল রাত ১২টার সময় তাঁর স্বামীকে তিনি ফোন দেন। তখন তাঁর স্বামী তাঁকে জানান, তিনি বাসায় আসছেন। এই কথোপকথনের দেড় ঘণ্টার পরও বাসায় না ফেরায় তিনি আবার ফোন দেন। তখন তাঁর স্বামী তাঁকে জানায়, তিনি আছেন নারিন্দা ক্লাবে। বাসায় ফিরবেন শিগগিরই। আরও এক ঘণ্টা জেগে থাকলেও তাঁর স্বামী বাসায় আসেননি। তখন তিনি ঘুমিয়ে পড়েন। পরদিন (১৭ এপ্রিল) সকাল ৯টার সময় তাঁর পরিচিত একজন তাঁর মুঠোফোনে কল দেন। তিনি জানান, তাঁর স্বামীর লাশ পড়ে আছে দক্ষিণ সায়েদাবাদের হানিফের টিন শেডের ওপর।

মামলার বাদী সাথী আক্তার প্রথম আলোকে বলেন, তাঁর স্বামী মিন্টু মিয়া সম্প্রতি রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত হন। নারিন্দার একটি ক্লাবের সদস্যও হন। যাদের বিরুদ্ধে তিনি খুনের মামলা করেছেন তাঁরা সবাই তাঁর স্বামীর পরিচিত। কী কারণে তাঁর স্বামীকে খুন করা হয়েছে তা জানতে চান তিনি। তাঁর স্বামীকে খুন করে ছাদ থেকে ফেলে হত্যা করা হয়েছে বলে জানান সাথী আক্তার।

সাথী আক্তার জানালেন, তাঁর দুই মেয়ে, এক ছেলে। স্বামীর আয়ে চলত সংসার।