চট্টগ্রাম ওয়াসার পানির প্রকৃত উৎপাদন নিয়ে প্রশ্ন ক্যাবের

ওয়াসা
ওয়াসা

চট্টগ্রাম ওয়াসা প্রকৃতপক্ষে কত পানি উৎপাদন করে, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে ক্রেতা-ভোক্তাদের স্বার্থ সংরক্ষণকারী জাতীয় প্রতিষ্ঠান কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব)। উৎপাদন নিয়ে ওয়াসা যে দাবি করে আসছে, তার কোনো বৈজ্ঞানিক ভিত্তি নেই বলে সংগঠনটির দাবি।

মঙ্গলবার এক বিবৃতিতে সংগঠন থেকে বলা হয়, ওয়াসার দাবি অনুসারে পানির উৎপাদন দৈনিক ৩৫ থেকে ৪০ কোটি লিটার। যার কোনো বৈজ্ঞানিক সত্যতা নেই। কারণ শেখ হাসিনা পানি শোধনাগার, মদুনাঘাট পানি শোধনাগার ও পাম্প হাউসে কোনো ডিজিটাল মিটার নেই। ফলে কত লিটার পানি উৎপাদন হচ্ছে, তার প্রকৃত সত্যতা যাচাই করার জন্য ওয়াসার ডেটাবেইস নেই। তাই পানি উৎপাদন ও বিতরণে ডিজিটাল মিটার না থাকায় পানির প্রকৃত উৎপাদন খরচ নিয়ে শুভংকরের ফাঁকি রয়েছে।

একই বিবৃতিতে চট্টগ্রাম ওয়াসার ব্যবস্থাপনা পরিচালককে পরিবর্তনের দাবি তুলেছে সংগঠনটি। বর্তমানে এ পদে ১০ বছর ধরে চুক্তিভিত্তিক দায়িত্ব পালন করে আসছেন এ কে এম ফজলুল্লাহ।

বিবৃতিতে বলা হয়, বর্তমান ব্যবস্থাপনা পরিচালক একাধারে ১০ বছর ধরে চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ পেয়ে এলেও ওয়াসাকে কিছু দিতে পারেননি। বর্তমান সরকারের আমলেই ১৩ হাজার কোটি টাকার সর্বোচ্চ উন্নয়ন বরাদ্দ পায় এ প্রতিষ্ঠানটি। কিন্তু এত বছরেও প্রশাসনে গতিশীলতা আনতে পারেননি ব্যবস্থাপনা পরিচালক।

ক্যাবের বিবৃতিতে এ ছাড়াও ওয়াসার বিরুদ্ধে একগুচ্ছ অভিযোগ তুলে ধরা হয়। বলা হয়, গ্রীষ্মকাল শুরুর প্রাক্কালে নগরের বিভিন্ন এলাকায় পানির জন্য হাহাকার হলেও ওয়াসার সব পর্যায়ের কর্মকর্তারা ব্যস্ত ঠিকাদারদের অর্থায়নে আয়োজিত কোটি টাকার ওয়াসা নাইট আয়োজনে।

বিবৃতিতে স্বাক্ষর করেন ক্যাবের কেন্দ্রীয় সহসভাপতি এস এম নাজের হোসাইন, চট্টগ্রাম বিভাগীয় সাধারণ সম্পাদক কাজী ইকবাল বাহার ছাবেরী, মহানগরের সভাপতি জেসসিন সুলতানা, সাধারণ সম্পাদক অজয় মিত্র, যুগ্ম সম্পাদক তৌহিদুল ইসলাম ও চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা সভাপতি আবদুল মান্নান।

বিবৃতির বিষয়ে ক্যাবের কেন্দ্রীয় সহসভাপতি এস এম নাজের হোসাইন প্রথম আলোকে বলেন, বর্তমান ব্যবস্থাপনা পরিচালকের বয়স হয়ে গেছে। ওয়াসাকে গ্রাহকবান্ধব ও সত্যিকারের সেবাধর্মী প্রতিষ্ঠানে পরিণত করতে হলে চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের মতো ওয়াসাতেও পরিবর্তন দরকার।

ক্যাবের দাবি ও অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে ওয়াসার ব্যবস্থাপনা পরিচালক এ কে এম ফজলুল্লাহ প্রথম আলোকে বলেন, ‘তাদের (ক্যাব) কোনো দাবি থাকলে তারা আমার কার্যালয়ে এসে উত্থাপন করতে পারে। মুখোমুখি দুই পক্ষ কথা বলে আলোচনা হতে পারে। তাদের দাবি অনুযায়ী আমার কোনো ভুল থাকলে শোধরাব। কিন্তু এভাবে মনগড়া অভিযোগ করলে তো হবে না।’