নালিতাবাড়ীতে ইউপি চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে কৃষককে গুলি করে হত্যার অভিযোগ

নিহত ইদ্রিস আলীর স্ত্রীর আহাজারি। বৃহস্পতিবার বিকেলে নালিতাবাড়ী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে। ছবি: আবদুল মান্নান
নিহত ইদ্রিস আলীর স্ত্রীর আহাজারি। বৃহস্পতিবার বিকেলে নালিতাবাড়ী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে। ছবি: আবদুল মান্নান

শেরপুরের নালিতাবাড়ীতে ধান কাটার দ্বন্দ্বে কৃষককে গুলি করে হত্যার অভিযোগ উঠেছে এক ইউপি চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে। বৃহস্পতিবার বিকেলে উপজেলার যোগানিয়া ইউনিয়নের কুত্তামারা গ্রামে এই ঘটনা ঘটে।

নিহত ব্যক্তির নাম ইদ্রিস আলী (৪৫)। যোগানিয়া ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হাবিবুর রহমান তাঁকে গুলি করেন বলে অভিযোগ উঠেছে। এই ঘটনায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পুলিশ পাঁচজনকে আটক করেছে। চেয়ারম্যান হাবিবুর রহমানের রাজনৈতিক পরিচয় নিশ্চিত করেন নালিতাবাড়ী উপজেলা আওয়ামী লীগের জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি আবদুস সবুর।

নিহত ব্যক্তির পরিবার, এলাকাবাসী ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, কুত্তামারা গ্রামের কৃষক সোহরাব আলী বৃহস্পতিবার সকালে শ্রমিকদের নিয়ে তাঁর তিন একর জমির ধান কাটতে যান। এ সময় চেয়ারম্যান হাবিবুর রহমানের লোকজন ধান কাটতে সোহরাবকে বাধা দেন। এতে শ্রমিকদের নিয়ে সোহরাব বাড়ি চলে আসেন। পরে দুপুর ১২টার দিকে সোহরাব চাচাতো ভাই ইদ্রিস আলীসহ তাঁর লোকজন নিয়ে আবার ধানখেতে যান এবং এক একর জমির ধান কেটে বাড়ি ফেরেন। এর জেরে বেলা বেলা দেড়টার দিকে ইউপি চেয়ারম্যান তাঁর লোকজন নিয়ে সোহরাব আলীর বাড়িতে হামলা চালান।

নিহত ব্যক্তির চাচাতো ভাই মোক্তার হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, বাড়িতে হামলা চালালে চেয়ারম্যানের পক্ষের সঙ্গে তাঁদের পক্ষের পাল্টাপাল্টি ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। এ সময় হাবিবুর রহমান পিস্তলের গুলি ছুড়লে তা ইদ্রিসের গলায় বিঁধে। এতে ঘটনাস্থলেই তাঁর মৃত্যু হয়।

নিহত ব্যক্তির স্ত্রী দিলরুবা বেগম বলেন, ‘চেয়ারম্যান হাবিবুর গুলি কইরা আমার স্বামীরে মাইরা ফালাইছে। আমি আমার স্বামী হত্যার বিচার চাই।’

নালিতাবাড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবুল খায়ের বলেন, পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে ওই গ্রামে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। এই ঘটনায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পাঁচ ব্যক্তিকে পুলিশ আটক করেছে। এ ব্যাপারে ইউপি চেয়ারম্যান হাবিবুর রহমানের বিরুদ্ধে গুলি করে ইদ্রিস আলীকে হত্যার অভিযোগে মামলার প্রস্তুতি চলছে। ঘটনার পর থেকে হাবিবুর পলাতক। ওসি আরও জানান, লাশ থানায় রয়েছে। শুক্রবার সকালে ময়নাতদন্তের জন্য লাশ শেরপুর সদর হাসপাতালে পাঠানো হবে।

উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসক জাহিদ হাসান প্রথম আলোকে বলেন, হাসপাতালে আনার আগেই অতিরিক্ত রক্তক্ষরণে ইদ্রিস আলীর মৃত্যু হয়েছে। গুলি করে হত্যা করা হয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে। ময়নাতদন্তে মৃত্যুর সঠিক কারণ জানা যাবে।

চেয়ারম্যান হাবিবুর রহমানের মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তা বন্ধ পাওয়া গেছে।