নতুন নামেও জামায়াতের রাজনীতি করার অধিকার নেই: হানিফ

মাহবুব উল আলম হানিফ। প্রথম আলো ফাইল ছবি
মাহবুব উল আলম হানিফ। প্রথম আলো ফাইল ছবি

জামায়াতে ইসলামী খোলস পাল্টে নতুন নামে এলেও তাদের রাজনীতি করার কোনো অধিকার নেই বলে মন্তব্য করেন আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ। আজ শনিবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের দোয়েল চত্বরে তিন নেতার মাজারে জাতীয় নেতা শেরে বাংলা এ কে ফজলুল হকের মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে পুষ্পস্তবক অর্পণ শেষে এ কথা বলেন মাহবুব উল আলম হানিফ।

সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে হানিফ বলেন, জামায়াতের সংস্কারপন্থীদের উদ্দেশ্য কী? তারা মুক্তিযুদ্ধের সময়ের কর্মকাণ্ডের জন্য দুঃখ প্রকাশ করে কি না, সেসব বিষয়ে পর্যবেক্ষণ করা যেতে পারে। এ বিষয়ে তিনি বলেন, ‘খোলস পাল্টে নতুন নামে এলেও জামায়াতের রাজনীতি করার কোনো অধিকার নেই।’

বিএনপির সংসদ সদস্যদের সংসদে যোগ দেওয়ার বিষয়ে সরকারের চাপ রয়েছে বলে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের অভিযোগ সম্পর্কে জানতে চাইলে হানিফ বলেন, শপথের বিষয়ে বিএনপির নির্বাচিতদের ওপর সরকারের কোনো চাপ নেই। তাঁরা নৈতিক দায়িত্ব থেকে শপথ নিয়েছেন।

‘জন-আকাঙ্ক্ষার বাংলাদেশ’ স্লোগানে একটি রাজনৈতিক মঞ্চের ঘোষণা দিয়েছেন জামায়াত ইসলামী সংস্কারপন্থীরা। রাজধানীর বিজয়নগরের হোটেল ৭১-এ শনিবার দুপুরে সংবাদ সম্মেলনে এ ঘোষণা দেন দলের নেতারা। ‘জন-আকাঙ্ক্ষার বাংলাদেশ’ মঞ্চের সমন্বয়ক মজিবুর রহমান (মঞ্জু)।

স্বাধীন সত্তার বিকাশে অধিকার ও কল্যাণরাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার রাজনীতি শীর্ষক সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে জামায়াতে ইসলামীর সংস্কারপন্থী নেতারা তাঁদের নতুন রাজনৈতিক উদ্যোগের আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দেন। সেখানে একটি ঘোষণাপত্রও চূড়ান্ত করেছেন তাঁরা। ঘোষণাপত্রে বলা হয়েছে, জাতীয় মুক্তি ও জন-আকাঙ্ক্ষার নতুন বাংলাদেশ গড়ার প্রত্যয়ে উজ্জীবীত একদল আশাবাদী মানুষের উদ্যোগ এটি। এর মাধ্যমে নিজেদের ভাবনা ও ভবিষ্যৎ রাজনৈতিক পরিকল্পনার কথা তুলে ধরা হবে।

জামায়াতে ইসলামী থেকে সদ্য বহিষ্কৃত নেতা মজিবুর রহমান একসময় ইসলামী ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় সভাপতি এবং পরে জামায়াতের কেন্দ্রীয় মজলিসে শুরার সদস্য ছিলেন। এর আগে মজিবুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, ‘গণ-আকাঙ্ক্ষা, সুশাসন ও মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠার নতুন রাজনীতির স্বপ্ন দেখছি আমরা। আশা করি, এতে নতুন প্রজন্মের চিন্তা ও মনোভাবের প্রতিফলন ঘটবে।’

দলের সংস্কার ও মুক্তিযুদ্ধের বিরোধিতার জন্য জাতির কাছে ক্ষমা চাওয়া নিয়ে সম্প্রতি জামায়াতে বিরোধ দেখা দেয়। এর রেশ ধরে গত ১৫ ফেব্রুয়ারি জামায়াত থেকে পদত্যাগ করেন প্রভাবশালী নেতা আবদুর রাজ্জাক। তিনি দলের জ্যেষ্ঠ সহকারী সেক্রেটারি ছিলেন। একই বিষয়ে প্রকাশ্য অবস্থান নেওয়ায় দল থেকে বহিষ্কৃত হন মজিবুর রহমান। তিনি নতুন রাজনৈতিক মঞ্চ গঠনের কাজ শুরু করলেও আবদুর রাজ্জাক এ ধরনের প্রক্রিয়ার সঙ্গে যুক্ত না থাকার কথা বলেছেন।

দলীয় সূত্র জানায়, আবদুর রাজ্জাক ও মজিবুর রহমানকে নিয়ে চাপে পড়েছেন জামায়াতের শীর্ষ নেতৃত্ব। রাজ্জাকের আইন পেশার ৪০ বছর পূর্তিতে ১২ এপ্রিল লন্ডনে এক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছিল। সেখানে যাতে দলের কেউ না যান, সেই নির্দেশনা ছিল। এর আগে ২৫ মার্চ ঢাকায় জাতীয় প্রেসক্লাবে নিউজিল্যান্ডের মসজিদে সন্ত্রাসী হামলায় নিহত ব্যক্তিদের স্মরণে মানবিক সংহতি জানাতে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে অংশ নেন মজিবুর রহমান। ওই অনুষ্ঠানেও দলের কেউ যাতে অংশ না নেন, সে জন্য জামায়াতের শীর্ষ পর্যায় থেকে মৌখিকভাবে সাংগঠনিক নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়।