চাঁদপুরে জেলে-পুলিশের সংঘর্ষে নিখোঁজ এক পুলিশ সদস্য

পুলিশ সদস্যের নাম মো. মোশারফ হোসেন (৩২)। ছবি: সংগৃহীত
পুলিশ সদস্যের নাম মো. মোশারফ হোসেন (৩২)। ছবি: সংগৃহীত

চাঁদপুরের হাইমচরে মেঘনা নদীতে অভিযানে গিয়ে এক পুলিশ সদস্য নিখোঁজ হওয়ার ঘটনা ঘটেছে। মেঘনা নদীতে অভিযান চলাকালে জেলেদের সঙ্গে সংঘর্ষে এ ঘটনা ঘটেছে বলে জানিয়েছে পুলিশ। শুক্রবার রাত ১২টার দিকে নিখোঁজ হওয়া ওই পুলিশ সদস্যের এখনো কোনো খোঁজ মেলেনি।

নিখোঁজ ওই পুলিশ সদস্যের নাম মো. মোশারফ হোসেন (৩২)। তাঁর বাড়ি চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে। পুলিশ বাহিনীতে তিনি কনস্টেবল পদে ছিলেন। মোশারফের স্ত্রী শামীমা আক্তারও হাইমচর থানায় কনস্টেবল পদে দায়িত্ব পালন করছেন। ঘটনার পর থেকে মোশারফের সন্ধানে নদীতে কোস্টগার্ড, নৌ পুলিশ, ফায়ার সার্ভিস ও জেলা পুলিশ উদ্ধার অভিযান চালাচ্ছে।

হাইমচর থানার ওসি শেখ মহসীন আলম বলেন, মাদক মামলার ওয়ারেন্টভুক্ত এক আসামি ধরতে সন্ধ্যা সাড়ে সাতটার দিকে মোশারফসহ পুলিশের চার সদস্যের একটি দল হাইমচরের চরকোড়ালিয়া এলাকায় যায়। এরপর তারা ট্রলারযোগে মেঘনা নদীতে অভিযানে নামে। তবে তারা ওই আসামি ধরতে পারেনি। ফেরার পথে দলটি দেখে, কলেজঘাট এলাকায় মেঘনা নদীতে অবৈধভাবে জাটকা ধরছেন কয়েকজন জেলে। পরে তারা এগিয়ে যায় জেলেদের নৌকা লক্ষ্য করে। এ সময় পুলিশের নৌকা আসতে দেখে জেলেরা তাদের লক্ষ্য করে লগি-বইঠা নিয়ে হামলা চালান। পুলিশের দলটি আত্মরক্ষার জন্য জেলেদের ওপর পাঁচ রাউন্ড ফাঁকাগুলি ছোড়ে। তবে তাদের নৌকার গতি বেসামাল হয়ে গেলে ওই জেলেদের নৌকায় ধাক্কা লাগে। ওই ধাক্কায় পুলিশের মোশারফ ও অন্য এক পুলিশ সদস্য পানিতে পড়ে যান। পুলিশের ওই সদস্য নৌকায় উঠতে পারলেও মোশারফ নিখোঁজ হন।

হাইমচর উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা মাহবুব রশিদ বলেন, মার্চ ও এপ্রিল—দুই মাস চাঁদপুরের পদ্মা ও মেঘনায় জাটকা রক্ষায় সব ধরনের মাছ ধরা নিষিদ্ধ থাকে। এরপরও কিছু কিছু এলাকায় উপজেলার জেলেরা দল বেঁধে চাঁদপুরে ও হাইমচরে জাটকা ধরেন। শুক্রবার রাতেও তাঁরা এমনভাবে মেঘনা নদীতে মাছ ধরছিলেন। তবে তাঁদের দিকে পুলিশের ওই দল এলে এ ঘটনা ঘটে।

মোশারফের স্ত্রী শামীমা আক্তার বলেন, শুক্রবার রাত সাড়ে সাতটার দিকে অভিযানে যোগ দিতে বাসা থেকে বের হন মোশারফ। তারপর রাত দুইটার দিকে তিনি খবর পান, মোশারফকে পাওয়া যাচ্ছে না।

শনিবার বেলা সাড়ে তিনটার দিকে চাঁদপুরের সহকারী পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) জাহেদ পারভেজ চৌধুরীর প্রথম আলোকে বলেন, তাঁরা উদ্ধার অভিযান অব্যাহত রেখেছেন। এ ছাড়া মামলার প্রস্তুতিও নেওয়া হচ্ছে। তবে বিকেল সাড়ে পাঁচটা পর্যন্ত কাউকে গ্রেপ্তার করতে পরেননি তাঁরা।

চাঁদপুর ফায়ার সার্ভিস কর্মকর্তা ফরিদ আহমেদ বলেন, ঘটনার খবর পেয়ে রাত থেকেই ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরি দল উদ্ধার তৎপরতা শুরু করে। কিন্তু বিকেল পর্যন্ত কোথাও ওই পুলিশ সদস্যের হদিস পায়নি।

হাইমচর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ফেরদৌসী বেগম বলেন, তাঁরা ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের তদন্ত করে বের করাসহ নিখোঁজ পুলিশ সদস্যের সন্ধানে উদ্ধার তৎপরতা অব্যাহত রেখেছেন।