ডাব খেতে গাছে উঠে...

ডাব পাড়তে গিয়ে গাছে আটকে পড়া আনন্দ কুমার দাসকে উদ্ধারের প্রস্তুতি নিচ্ছে ফায়ার সার্ভিস, স্থানীয় বিদ্যুৎ অফিস ও পুলিশ সদস্যরা। কিশোরগঞ্জ, কুলিয়ারচর, ২৭ এপ্রিল। ছবি: প্রথম আলো
ডাব পাড়তে গিয়ে গাছে আটকে পড়া আনন্দ কুমার দাসকে উদ্ধারের প্রস্তুতি নিচ্ছে ফায়ার সার্ভিস, স্থানীয় বিদ্যুৎ অফিস ও পুলিশ সদস্যরা। কিশোরগঞ্জ, কুলিয়ারচর, ২৭ এপ্রিল। ছবি: প্রথম আলো
কিশোরগঞ্জের কুলিয়ারচরে বিএডিসির সার গুদামের একটি ডাব গাছ থেকে ডাব পারতে গিয়ে আটকা পড়েন এক ব্যক্তি। কিশোরগঞ্জ, কুলিয়ারচর, ২৭ এপ্রিল। ছবি: প্রথম আলো
কিশোরগঞ্জের কুলিয়ারচরে বিএডিসির সার গুদামের একটি ডাব গাছ থেকে ডাব পারতে গিয়ে আটকা পড়েন এক ব্যক্তি। কিশোরগঞ্জ, কুলিয়ারচর, ২৭ এপ্রিল। ছবি: প্রথম আলো

কিশোরগঞ্জের কুলিয়ারচর বিএডিসির সার গুদাম। সীমানা প্রাচীরের ভেতরে ডাব গাছের সারি, ডাবও ঝুলছে অসংখ্য। কাঠফাটা গরমে আনন্দ কুমার দাস (৩০) নামের এক ব্যক্তির বিষম তৃষ্ণা পেয়ে বসল। গাছে ডাব ঝুলতে দেখে আর লোভ সামলাতে পারেননি তিনি। ভেবেছিলেন ডাবের পানি পান করে তৃষ্ণা মেটাবেন। দুই শ ফুট লম্বা গাছে চড়ে ডাবের নাগালও পেয়েছিলেন আনন্দ। কিন্তু এরপরই আটকে যান তিনি।

লুকিয়ে ডাব পাড়তে গিয়ে গাছের ওপরে আনন্দের আটকে পড়ার ঘটনা ঘটে আজ শনিবার দুপুরে। প্রত্যক্ষদর্শীরা বলেন, ডাব নিয়ে নিচে নামতে পারছিলেন না আনন্দ। গাছের মাথায় কয়েক ঘণ্টা আটকে ছিলেন তিনি। আনন্দকে নামিয়ে আনতে ডাকা হয় ফায়ার সার্ভিসকে, আসেন পুলিশ সদস্য ও বিদ্যুৎ কর্মীরাও। প্রায় এক ঘণ্টা চেষ্টা চালিয়ে ফায়ার সার্ভিস কর্মীরা আনন্দকে মাটিতে নামিয়ে আনেন। ততক্ষণে অবশ্য তাঁর ডাবের পানি পান করার আশা মিটে গেছে!

ফায়ার সার্ভিস সূত্র জানায়, বিএডিসি কুলিয়ারচর উপজেলার সার গুদামটি এখন চালু নেই। ফলে লোকজনের স্বাভাবিক যাতায়াত কম। গুদাম চত্বরে অসংখ্য ডাব গাছ রয়েছে। বিএডিসির ডাবের বেশির ভাগই স্থানীয়দের পেটে যায়। শনিবার দুপুর দেড়টার দিকে পথচারীরা দেখতে পান যে, ডাব গাছে কেউ একজন আটকে আছে। প্রথমে ফায়ার সার্ভিসকে জানানো হয়। ফায়ার সার্ভিসের সাত সদস্যের একটি দল এসে আনন্দকে উদ্ধারের চেষ্টা চালিয়ে ব্যর্থ হয়। কারণ তাঁদের কাছে এত লম্বা মই ছিল না। পরে ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা বিদ্যুৎ অফিসের সহযোগিতা চান। তাদের কাছ থেকে বড় মই এনে ফায়ার সার্ভিস কর্মীরা গাছে উঠে রশির সাহায্যে আনন্দকে নিচে নামিয়ে আনে।

গাছে ওঠার কারণ জানতে চাইলে আনন্দ প্রথমে কথা বলতে পারছিলেন না। একটু ধাতস্থ হয়ে তিনি বলেন, ‘অনেক গরম। তিলাস (তৃষ্ণা) লাগছিল। মনে হইছে ডাবের পানি খাইতে পারলে কলিজা ঠান্ডা হইব। নিচে চাইয়া দেহি আমি অনেক ওপরে। এরপর আর কিছু কইতে পারতাম না।’ আনন্দ কুমার দাস পৌর শহরের দাসপাড়ার বাসিন্দা।

উদ্ধার কাজে অংশ নেওয়া কুলিয়ারচর ফায়ার সার্ভিসের ফায়ারম্যান শহীদ আলম প্রথম আলোকে বলেন, ‘ডাব গাছের উচ্চতা ছিল ২০০ ফুটের বেশি। সমস্যা হলো এত বড় মই আমাদের নেই। বিদ্যুৎ কর্মীরাও যে মই নিয়ে আসেন, তা দিয়ে আনন্দকে নামিয়ে আনা কঠিন। শেষে রশি ব্যবহার করে আনন্দকে নামিয়ে আনা হয়।’