বিয়ে করতে এসে বর কারাগারে

বাল্যবিবাহ । প্রতীকী ছবি
বাল্যবিবাহ । প্রতীকী ছবি

মধুমতী নদীর ওপার থেকে মাগুরায় বিয়ে করতে এসেছিলেন সুব্রত সরকার। ফেরার কথা ছিল নববধূ নিয়ে। অথচ উল্টো তাঁকেই যেতে হলো কারাগারে। ঘটনাটি ঘটেছে মাগুরার সদর উপজেলায়। সোমবার ওই উপজেলায় বাল্যবিবাহ করতে আসার অপরাধে সুব্রতকে সাত দিনের কারাদণ্ড দিয়েছেন মাগুরার ভ্রাম্যমাণ আদালত। এ ছাড়া ওই ঘটনায় আরও তিনজনকে কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, রোববার গভীর রাতে মাগুরার সদর উপজেলার পাটকেলবাড়িয়া গ্রামে ১৩ বছর বয়সী এক মেয়ের বিয়ের আয়োজন করা হয়। পাত্র ছিলেন সুব্রত ধর (২২)। তিনি ফরিদপুর জেলার চণ্ডীপুর গ্রামের পরিতোষ সরকারের ছেলে। তবে বিয়ের অনুষ্ঠান শেষ হওয়ার আগেই বাল্যবিবাহের অভিযোগে বর-কনেসহ কয়েকজনকে আটক করে পুলিশ।

বিয়ের অনুষ্ঠানে উপস্থিত অবনি কর্মকার নামের এক ব্যক্তি বলেন, রোববার রাত একটার দিকে বিয়ের আয়োজন প্রায় শেষের দিকে। হিন্দু ধর্মমতে বর ও কনের সাত-পাক ঘোরা মাত্র শেষ হয়েছে, এমন সময় পুলিশ এসে বিয়েবাড়িতে হাজির হয়। এরপর বর-কনেসহ বেশ কয়েকজনকে আটক করে নিয়ে যায় পুলিশ। সোমবার দুপুরে আটক লোকজনকে ভ্রাম্যমাণ আদালতে উপস্থিত করা হয়। পরে সেখানে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট বিয়ের পুরোহিত বিকাশ চৌধুরীকে ৩ দিন, বর সুব্রত সরকারকে ৭ দিন, ভগ্নিপতি বাসুদেব সরকার এবং মেয়ের ঠাকুরদা কিরণ কর্মকারকে ৫ দিন করে কারাদণ্ড দিয়েছেন।

ভ্রাম্যমাণ আদালতের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আবু সুফিয়ান বলেন, মেয়েটির যেহেতু বিয়ে হয়ে গেছে এবং অপ্রাপ্তবয়স্ক তাই উভয় দিক বিবেচনা করে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এ জন্য মেয়েটির বয়স ১৮ বছর পূর্ণ না হওয়া পর্যন্ত তাঁকে যেন স্বামীর ঘরে না পাঠানো হয়, তা দেখাশোনার জন্য স্থানীয় ব্যাপ্টিস্ট এইড নামের একটি সংগঠনকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। আর বিয়ে যাতে ভেঙে না যায়, সে জন্য উভয় পরিবারের কাছে থেকে মুচলেকা নেওয়া হয়েছে।