টাঙ্গাইলে ইউএনওর বিরুদ্ধে সাবেক সাংসদের মামলা

উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্স ঘেঁষে দুটি দোকানের মালিকানা দাবি করে ইউএনওর বিরুদ্ধে মামলা করেছেন সাবেক সাংসদ। ছবি: প্রথম আলো
উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্স ঘেঁষে দুটি দোকানের মালিকানা দাবি করে ইউএনওর বিরুদ্ধে মামলা করেছেন সাবেক সাংসদ। ছবি: প্রথম আলো

টাঙ্গাইলের সখীপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আমিনুর রহমানের বিরুদ্ধে মামলা করেছেন টাঙ্গাইল-৮ (সখীপুর-বাসাইল) আসনের সাবেক সাংসদ অনুপম শাহজাহান জয় ও আরও দুজন। উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্স ঘেঁষে দুটি দোকানের মালিকানা দাবি করে তিনজন এই মামলা করেন।

সাবেক সাংসদ ছাড়া মামলার বাদী বাকি দুজন হলেন সখীপুর উপজেলা পরিষদের নবনির্বাচিত চেয়ারম্যান জুলফিকার হায়দার কামাল ও চেয়ারম্যানের ছোট ভাই আবদুল আজিজ তালুকদার। আদালত আগামী ১০ জুনের মধ্যে ইউএনও আমিনুর রহমানকে এ বিষয়ে ব্যাখ্যা উপস্থাপন করার জন্য নির্দেশ দিয়েছেন।

মামলার এজাহার সূত্রে জানা গেছে, সখীপুর উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্স ঘেঁষে তৈরি এক তলা ভবনের দুটি দোকান প্রায় ১০ বছর ধরে ভাড়া দিয়ে রেখেছেন সাবেক সাংসদ অনুপম শাহজাহান ও তাঁর দুই চাচা। হঠাৎ করে গত ২১ এপ্রিল ইউএনও আমিনুর রহমান ওই দুটি দোকান মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্সের দাবি করে ওই দুই ভাড়াটেকে এক বছরের ভাড়া পরিশোধের জন্য নোটিশ দেন। এর পরিপ্রেক্ষিতেই এক শতাংশ জমির মালিকানা দাবি করে ওই মামলা করা হয়।

সখীপুর উপজেলা পরিষদের নবনির্বাচিত চেয়ারম্যান ও মামলার দুই নম্বর বাদী জুলফিকার হায়দার কামাল বলেন, ‘মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্স ঘেঁষে আমাদের তিন শতাংশ জমি রয়েছে। কমপ্লেক্স ঘেঁষে এক শতাংশ জমির ওপর ১০ বছর আগে একতলা ভবন করে দুটি দোকান ভাড়া দেওয়া হয়েছে। হঠাৎ করে ইউএনও সাহেব ওই দুটি দোকান মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্সের দাবি করে আমাদের ভাড়াটেদের কাছে এক বছরের ভাড়া চেয়ে নোটিশ দেন। আমরা ওই জমির মালিকানা দাবি করে মামলা করেছি।’

সাবেক সাংসদ অনুপম শাহজাহান আজ মঙ্গলবার সকালে মুঠোফোনে প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমার বাবা শওকত মোমেন শাহজাহান মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক ছিলেন। চারবার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন। আমার বাবাই ওই মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্সের চারতলা ভবনটি করে দিয়েছেন। কমপ্লেক্স ঘেঁষে আমার দাদা মুখতার আলী তালুকদারের জমি রয়েছে। ইউএনও সাহেবের এসব ইতিহাস না জেনে নোটিশ দেওয়া উচিত হয়নি।’

ভাড়া পরিশোধের ব্যাপারে জানতে চাইলে দোকানের ভাড়াটে আমিনুল ইসলাম ও জুলহাস উদ্দিন বলেন, ‘আমরা ১০ বছর আগে এই দোকান সাবেক সাংসদের পরিবারের কাছ থেকে জামানত দিয়ে ভাড়া নিয়েছি। ১০ বছর ধরে মুক্তিযোদ্ধাদের নয়, সাবেক সাংসদের পরিবারের কাছেই ভাড়া পরিশোধ করে আসছি। এখন এক বছরের ভাড়া চেয়ে নোটিশ আসায় আমরা বিপাকে পড়েছি।’

সখীপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ও মুক্তিযোদ্ধা সংসদের বর্তমান প্রশাসক আমিনুর রহমান বলেন, ওই দুটি দোকান ও জমি মুক্তিযোদ্ধা কমান্ড কাউন্সিলের। ফলে ওই দুটি দোকানের এক বছরের ভাড়া চেয়ে দুই ভাড়াটের কাছে চিঠি দেওয়া হয়েছে। মামলার ব্যাপার স্বীকার করে তিনি বলেন, আইনগতভাবেই এ মামলার মোকাবিলা করা হবে।